কাশ্মীর, সে যেন এক স্বপ্ন
রাতের ডাল লেক এ শিকারা
কাশ্মীর যা ভূস্বর্গ নামে পরিচিত। আসলেই এর প্রতিটা অংশ যেন অপরূপ সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছে। আমরা চারজন এবার গিয়েছিলাম লম্বা এক ট্যুর এ কাশ্মীর। আমার ট্যুর প্ল্যান এর সাথে সবার নাও মিলতে পারে, কারণ আমি ঘুরি মনের আনন্দে, কোনও কিছু দেখতেই হবে বা এটা মিস হয়ে গেল কি না, সেই দুশ্চিন্তা না করে, যেমন লাদাখ এ গিয়ে আমি লেহ প্যালেস এর এত কাছে থেকেও ৪ দিনের মধ্যে ঐখানে যাই নাই। ট্যুর এ গিয়ে যা করতে মন চায়, তাই করি। তেমন কোনও তাড়াহুড়ো থাকে না আমার। যেমন আমি পেহেলগাঁও তে তিন রাত ছিলাম, সবাই যেখানে এক রাতের বেশি থাকতে চায় না। আবার শ্রীনগর এ ছিলাম ৬ রাত, আমার বন্ধু বাপি মজা করে বলতেছিল যে,আমি নাকি শ্রীনগর এর প্রতিটা অলিগলি দেখার দায়িত্ব নিয়ে গেছি যে কারণে ঐখানে ৬ রাত ছিলাম। আবার এই ছয় রাতের মধ্যে এক রাতও হাউজ বোট এ থাকি নাই। থাকার জন্য দেখতে গিয়েছিলাম কিন্তু আমার ভালো লাগে নাই। আবার দিল্লীতে এক রাতের বেশি ছিলাম না।
আমাদের রুট টা ছিল এরকমঃ
ঢাকা >> কলকাতা >> দিল্লী >> আগ্রা >> দিল্লী >> জম্মু >> পেহেলগাঁও >> শ্রীনগর >> সোনমার্গ >> গুলমার্গ >> শ্রীনগর >> কলকাতা >> ঢাকা
এর মধ্যে যুসমার্গ, আহারবাল, মানসবাল, দুধপাথ্রি দেখার ইচ্ছে থাকলেও হরতাল এর কারণে এ সকল জায়গায় যেতে পারি নাই। ২৯ মার্চ রাতের বাস এ ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে ১৫ তারিখ সকালে ঢাকা পৌঁছানো। মোট ১৬ দিন ১৭ রাতের ট্যুর এর সকল খরচ নিচে দেয়া হলঃ
২৯ মার্চ, ২০১৭ (ঢাকা থেকে বেনাপোল)
১। ঢাকা থেকে বেনাপোল বাস ভাড়া – ১৪২০ টাকা (এসি) (নন- এসি ভাড়া ৫০০ টাকা)
২। ট্রাভেল ট্যাক্স – ৫০০ টাকা
৩০ মার্চ, ২০১৭ (বেনাপোল থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লী)
১। সকালের নাস্তা – ৬০/২ = ৩০ টাকা
২। বেনাপোল থেকে কলকাতা বাস ভাড়া – ২৮০ রুপি ( ৫৫ রুপি খরচ করেও যাওয়া যায়)
৩। দুপুরের খাবার – ৭২০/২ = ৩৬০ রুপি (ডোমিনোজ এ পিজা খেয়েছিলাম)
৪। নিউ মার্কেট থেকে শিয়ালদহ ট্যাক্সি ভাড়া – ৬০/২ = ৩০ রুপি(বাস ভাড়া - ৭ রুপি)
৫। শিয়ালদহ থেকে দিল্লী ট্রেন রাজধানী – ২৮৩০ রুপি (থ্রি এসি)
৬। স্ন্যাক্স – ১০০/২ = ৫০ রুপি
শিয়ালদহ রেলষ্টেশন
৩১ মার্চ, ২০১৭ (দিল্লী থেকে আগ্রা)
১। দুপুরের খাবার – ৫১০/৩ = ১৭০ রুপি
২। রিকশা ভাড়া – ৪০/২ = ২০ রুপি
৩। দিল্লী থেকে আগ্রা ট্যাক্সি ভাড়া – ২৬৫০/৪ = ৬৬০ রুপি ( ট্যাক্সি অনলাইন এ বুক করেছিলাম)
৪। আগ্রাতে হোটেল ভাড়া – ৭২০/২ = ৩৬০ রুপি (এসি রুম + ব্রেকফাস্ট, এটাও অনলাইন এ বুক করে গিয়েছিলাম)
৫। রাতের খাবার – ৩৯০/৩ = ১৩০ রুপি ( পুরোটাই স্ট্রীট ফুড, অনেক কিছু খেয়েছিলাম, সবগুলোর যোগফল)
নিউ দিল্লী রেলস্টেশন
দিল্লী জামে মসজিদ, আমার প্রিয় একটা স্থান
০১ এপ্রিল, ২০১৭ ( আগ্রা যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তাজমহল, আগ্রা থেকে দিল্লী)
১। তাজমহলের এন্ট্রি টিকেট – ৫৩০ রুপি (ভারতীয়দের ৪০ রুপি, সার্কভুক্ত দেশ গুলোর জন্য ৫৩০ রুপি, অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের জন্য ১০৩০ রুপি, সাথে ৫০০ মিলি. পানির বোতল এবং তাজমহলের বেদিতে ওঠার জন্য মোজা ফ্রি দেয়, এখানে দুই নম্বরির জায়গা নেই, প্রতিটা টিকেট এর সময় আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট চেক করে)
২। আগ্রার কেল্লার টিকেট – ৫০ রুপি ( ভারতীয় হিসেবে টিকেট করেছিলাম, বিদেশীদের জন্য ৫০০ রুপি)
৩। আগ্রাতে অটো ভাড়া – ১৪০/৪ = ৩৫ রুপি ( হোটেল থেকে তাজমহল, তাজমহল থেকে কেল্লা, কেল্লা থেকে হোটেল)
৪। দুপুরের খাবার – ৪০০/২ = ২০০ রুপি ( আবারো পিজা)
৫। আগ্রা থেকে দিল্লী ট্যাক্সি ভাড়া – ২৬০০/৪ = ৬৫০ রুপি ( এবারও অনলাইনে বুক করেছিলাম)
৬। দিল্লী তে এক রাতের হোটেল ভাড়া – ১১০০/২ = ৫৫০ রুপি (এসি রুম)
৭। দিল্লীতে রাতের খাবার – ৪৫০/২ = ২২৫ রুপি ( পুরান দিল্লী তে কিছু বাদ রাখি নাই)
৮। দিল্লীতে অটো ভাড়া – ১১০/২ = ৫৫ রুপি
হোটেলের জানালা থেকে দূরে তাজমহল এর শ্বেত শুভ্র গম্বুজ
আহা! প্রাণ জুরিয়ে গেল
আগ্রা কেল্লা
০২ এপ্রিল, ২০১৭ (সারাদিন দিল্লী ঘুরে রাতের ট্রেন এ দিল্লী থেকে জম্মু)
১। সকালের নাস্তা – ৭০/২ = ৩৫ রুপি
২। দিল্লীতে সারাদিনের ঘুরাঘুরির জন্য বিভিন্ন ভাড়া – ৩৫০/২ = ১৭৫ রুপি ( অটো, মেট্রো সহ সব)
৩। দুপুরের খাবার – ৩৬০/২ = ১৮০ রুপি ( এবার কেএফসি )
৪। রাতের খাবার – ফ্রি, দিল্লীর এক বন্ধুর দাওয়াত ছিল
৫। দিল্লী থেমে জম্মু ট্রেন ভাড়া – ১৪৫০ রুপি ( দুরন্ত থ্রি এসি, এই ট্রেন এ কিন্তু খাওয়া ফ্রি না)
৬। স্ন্যাক্স – ২৬০/২ = ১৩০ রুপি
কুতুব মিনার না দেখলেই নয়
জন্তর-মন্তর, তেমন আকর্ষণীয় কিছু লাগে নাই আমার কাছে
ইন্ডিয়া গেট এ শেষ বিকেলের সূর্য
ইন্ডিয়া গেট
আক্ষারধাম মন্দির, এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী দেখার অনেক ইচ্ছে
দিল্লীর মিনা বাজার
০৩ এপ্রিল, ২০১৭ (জম্মু থেকে পেহেলগাঁও সারাদিন এর ট্যাক্সি ভ্রমণ)
১। সকালের নাস্তা – ১৫০/৩ = ৫০ রুপি
২। জম্মু থেকে শ্রীনগর শেয়ারড ট্যাক্সি – ১০০০ রুপি ( যদিও আমরা শ্রীনগর যাই নাই, পেহেলগাঁও এর জন্য খানাবাল নেমে গিয়েছিলাম।)
৩। দুপুরের খাবার – ৩৬০/৩ = ১২০ রুপি
৪। খানাবাল থেকে পেহেলগাঁও ট্যাক্সি – ৮২০/৪ = ২০৫ রুপি
৫। পেহেলগাঁও হোটেল ভাড়া – ১১০০/২ = ৫৫০ রুপি
৬। রাতের খাবার – ৮২০/৪ = ২০৫ রুপি
৭। স্ন্যাক্স – ৫৫ রুপি
জম্মু থেকে শ্রীনগর এর উদ্দেশ্যে যাত্রা
জম্মুর পর্বতমালা
দুই পর্বতের মাঝে বয়ে চলা পাহাড়ি স্রোতধারা
কাশ্মীর এর পথে
০৪ এপ্রিল, ২০১৭ ( পেহেলগাঁও এ বৃষ্টিভেজা দিন, বাইসারান ভ্রমণ, ঘোড়ায় এবং পায়ে হেঁটে)
১। সকালের নাস্তা – ২৭০/৩ = ৯০ রুপি
২। পনি রাইড – ২২০০/২ = ১১০০ রুপি ( বৃষ্টির কারণে আর হিন্দি কম বুঝার কারণে গচ্চা, অনেক প্ল্যান করে গেছিলাম ঘোড়া থেকে দূরে থাকব, কিন্তু কপালে ছিল আর কি)
৩। দুপুরের খাবার – ২৮০/২ = ১৪০ রুপি
৪। পেহেলগাঁও হোটেল ভাড়া – ১১০০/২ = ৫৫০ রুপি
৫। রাতের খাবার – ৮২০/৪ = ২০৫ রুপি
৬। বাইসারান এ এন্ট্রি টিকেট – ২০ রুপি
পেহেলগাঁও এ সকালে হোটেলের জানালা থেকে, ভাষাহীন হয়ে গিয়েছিলাম
মিনি সুইজারল্যান্ড খ্যাত বাইসারান
লিডার নদীর বাঁকে
পাখির চোখে পেহেলগাঁও
০৫ এপ্রিল, ২০১৭ ( পেহেলগাঁও লোকাল সাইটসিয়িং)
১। সকালের নাস্তা – ১৮০/৩ = ৬০ রুপি
২। বেতাব, চন্দনওয়ারী, আরু ভ্যালী এর জন্য ট্যাক্সি ভাড়া – ১৯০০/৪ = ৪৭৫ রুপি
৩। চন্দনওয়ারীতে স্লেজ রাইড – ১৫০ রুপি (বেশ মজার ছিল, কিন্তু ১৫০ রুপি বেশি মনে হয়েছে, দরদাম করলে হয়ত কমানো যেত)
৪। দুপুরের খাবার – ২২৫/৩ = ৭৫ রুপি
৫। বেতাব ভ্যালী তে এন্ট্রি টিকেট – ১০০ রুপি ( অনেক বেশি, বেতাব ভ্যালী তে না গেলেও চলত আর কি)
৬। আরু ভ্যালী তে হোটেল ভাড়া – ২৫০০/২ = ১২৫০ রুপি ( রাতের খাবার এবং সকালের নাস্তা সহ)
চন্দনওয়ারীর পথে পাহাড়ি জয়গান
বেতাব ভ্যালী, একটা সিনেমার শুটিং এর জন্য ১০০ রুপি এন্ট্রি ফি মানতে কষ্ট হয়
পেহেলগাঁও আন্তর্জাতিক গলফ মাঠ, এখানে একদিন খেলার ইচ্ছে আছে
০৬ এপ্রিল, ২০১৭ ( তুষারপাত এর কারণে আরু ভ্যালীতে আটকা পড়েছিলাম, তবে আল্লাহ এর রহমতে শেষ বিকালে উদ্ধার পাইছি, সোজা শ্রীনগর)
১। দুপুরের খাবার – ৪০০/৪ = ১০০ রুপি
২। হোটেলে টিপস – ৪০০/৪ = ১০০ রুপি
৩। শ্রীনগর এর হোটেল ভাড়া – ৬৫০/২ = ৩২৫ রুপি ( অনলাইন এ বুক করে গেছিলাম)
৪। রাতের খাবার – ১২৮০/৪ = ৩২০ রুপি ( শিক্ষা হয় নাই তখনো, এখানে ভাতের দাম অনেক বেশি, রুটি সস্তা)
বিকেল বেলার আরু ভ্যালী
পরদিন সকালে বরফে ঢাকা আরু ভ্যালী
০৭ এপ্রিল, ২০১৭ (শ্রীনগর থেকে সোনমার্গ ডে ট্রিপ)
১। সকালের নাস্তা – ৫৪০/৫ = ১০৮ রুপি
২। শ্রীনগর এর হোটেল ভাড়া – ৬৫০/২ = ৩২৫ রুপি ( অনলাইন এ বুক করা ছিল দুই দিনের)
৩। দুপুরের খাবার – ১৫০০/৫ = ৩০০ রুপি
৪। স্ন্যাক্স এবং কফি – ৩৫০/ ২ = ১৭৫ রুপি
৫। রাতের খাবার – ১৮০/৩ = ৬০ রুপি
সিন্ধু নদের তীরে, সোনমার্গের পথে
সোনমার্গের পথে
সোনমার্গ, ঐ দিনের তাপমাত্রা ছিল -৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
০৮ এপ্রিল, ২০১৭ (শ্রীনগর থেকে গুলমার্গ)
১। সকালের নাস্তা – ৭০০/৪ = ১৭৫ রুপি
২। দুপুরের খাবার – ২৮০/৪ = ৭০ রুপি
৩। গন্ডোলা টিকেট – ৭০০ রুপি (২য় ফেজ বন্ধ ছিল, ২য় ফেজ এর টিকেট এর দাম ৯০০ রুপি)
৪। গুলমার্গ এ হোটেল ভাড়া – ৩০০০/২ = ১৫০০ রুপি ( রাতের খাবার + সকালের খাবার, দুইটাই বুফে)
৫। স্কিইং – ১১০০/৪ = ২৭৫ রুপি
৬। জ্যাকেট + বুট ভাড়া – ২০০ রুপি
পৃথিবীর সর্বোচ্চ গন্ডোলায়
রৌদ্রোজ্জ্বল গুলমার্গ, সানগ্লাস ছাড়া তাকানো অসম্ভব
০৯ এপ্রিল, ২০১৭ ( গুলমার্গ থেকে শ্রীনগর, মানসবাল লেক যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হরতাল এর কারণে শ্রীনগর এ ফিরতে হয়েছে)
১। দুপুরের খাবার – ৪০০/৪ = ১০০ রুপি
২। রাতের খাবার – ৩৮০/২ = ১৯০ রুপি
৩। শ্রীনগর এর রুম ভাড়া – ৭৫০/২ = ৩৭৫ রুপি
৪। শিকারা ভাড়া – ৪০০/৪ = ১০০ রুপি ( দুই ঘণ্টার জন্য)
বিখ্যাত ডাল লেক এবং শিকারা
হাউজ বোট, আমার কাছে বাইরে থেকে দেখতেই ভালো লেগেছে, ভিতরে ভালো লাগে নাই
ডাল লেকে ভাসমান মার্কেট, সবই পাওয়া যায় এখানে
চাঁদনী রাতে হিম শীতল বাতাসে ডাল লেকে ঘুরে বেড়ানো, এখনও আনমনা করে দেয়
১০ এপ্রিল, ২০১৭ ( হরতাল ছিল, শ্রীনগর এর বাগানগুলো ভ্রমণ, সব থেকে আকর্ষণীয় ছিল টিউলিপ বাগান)
১। সকালের নাস্তা – ১১০/২ = ৫৫ রুপি
২। বিভিন্ন বাগান এ প্রবেশ টিকেট – ১১০ রুপি
৩। স্ন্যাক্স – ৩২০/২ = ১৬০ রুপি
৪। দুপুরের খাবার – ১৬৮০/৩ = ৫৬০ রুপি ( বিখ্যাত মুঘল দরবার এ কাশ্মীরী ওয়াজওয়ান ডিশ, দুইটা নিয়েছিলাম)
৫। রাতের খাবার – ৩৬০/৩ = ১২০ রুপি
৬। হোটেল ভাড়া – ৭৫০/২ = ৩৭৫ রুপি
পরিমহল থেকে ডাল লেক এবং গলফ মাঠ
চশমেশাহী বাগান
আমি পাইলাম, টিউলিপের দেখা পাইলাম
নিশাতবাগ, মুঘলদের অনন্য কীর্তি
১১ এপ্রিল, ২০১৭ (হরতাল এর কারণে যুসমার্গ যাওয়া বাতিল, কিন্তু হরতালে টুরিস্টদের কোনও সমস্যা হয় নাই)
১। সকালের নাস্তা – ১০০/২ = ৫০ রুপি
২। ঘুরাঘুরির জন্য অটো ভাড়া – ৪০০/২ = ২০০ রুপি
৩। দুপুরের খাবার – ৩১০/২ = ১৫৫ রুপি
৪। রাতের খাবার – ২৫০/২ = ১২৫ রুপি
৫। শিকারা ভাড়া – ৩০০/২ = ১৫০ রুপি ( দেড় ঘণ্টার জন্য নিয়েছিলাম)
৬। হোটেল ভাড়া – ৭৫০/২ = ৩৭৫ রুপি
পাখির চোখে শ্রীনগর শহর, দূরের পর্বতটির নাম হরি পর্বত
শালিমারবাগ, বাগানগুলো অসম্ভব সুন্দর করে সাজানো
বোটানিক্যাল গার্ডেন, কাশ্মীরী পরিবারগুলো এখানে পিকনিক করতে আসে, দুপুর বেলা ছিল তখন, নাকে সুস্বাদু খাবার এর ঘ্রাণ খুবই কষ্ট দিয়েছে
১২ এপ্রিল, ২০১৭ ( আজ হরতাল না থাকলেও, যুসমার্গ এ নির্বাচন ছিল, তাই যাওয়া বাতিল)
১। সকালের নাস্তা – ১৬০/২ = ৮০ রুপি
২। দুপুরের খাবার – ৫৫০/২ = ২২৫ রুপি
৩। ঘুরাঘুরির জন্য অটো ভাড়া – ৫০০/২ = ২৫০ রুপি
৪। রাতের খাবার – ৪২০/২ = ২১০ রুপি
৫। হোটেল ভাড়া – ৭৫০/২ = ৩৭৫ রুপি
শ্রীনগর এর বিখ্যাত হযরত বাল মসজিদ, এখানে দুইজন বাংলাদেশী মা-মেয়ের সাথে দেখা হয়েছিল, দুইজন মিলে কাশ্মীর ঘুরতে চলে গেছে
নাগিন লেক এর পাশে
শ্রীনগরের সব থেকে পুরনো হাত এ বোনা কার্পেট কারখানায়, অসাধারণ শিল্প চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্টসাধ্য
শ্রীনগর জামে মসজিদ
১৩ এপ্রিল, ২০১৭ (আজও হরতাল, এবারের মত কাশ্মীর ভ্রমণ সমাপ্ত)
১। সকালের নাস্তা – ৪১০/২ = ২০৫ রুপি
২। হোটেল থেকে এয়ারপোর্ট অটো ভাড়া – ৩০০/২ = ১৫০ রুপি ( অটো ভিতরে ঢুকতে দেয় না, বাইরের গেট এ নামিয়ে দেয় এরপর ৩০ মিনিট হাঁটতে হয়, ট্যাক্সিতে করে আবার একেবারে ভিতরে চলে যাওয়া যায়)
৩। দিল্লী এয়ারপোর্ট এ দুপুরের খাবার – ৬০০/২ = ৩০০ রুপি
৪। কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে মারকুইস স্ট্রীট ট্যাক্সি ভাড়া – ৩০০/২ = ১৫০ রুপি
৫। শ্রীনগর থেকে কলকাতা প্লেন ভাড়া – ৫০৪৬ রুপি
৬। কলকাতা হোটেল ভাড়া – ৩০০০/২ = ১৫০০ রুপি ( সকালের নাস্তাসহ, যেখানে হোটেল পাওয়া আর বিশ্ব জয় করা সমান)
৭। রাতের খাবার – ১৬৫ রুপি
কাশ্মীর থেকে দিল্লীর পথে, উড়োজাহাজ থেকে বরফে ঢাকা পর্বতশ্রেণী
১৪ এপ্রিল, ২০১৭ (কলকাতা থেকে বেনাপোল হয়ে ঢাকা)
১। কলকাতা থেকে ঢাকা বাস ভাড়া – ৩৮০ রুপি + ১৪০০ টাকা
২। দুপুরের খাবার – ৪০০/২ = ২০০ রুপি
আরু ভ্যালী থেকে কাশ্মীর এর বাকি ৫ দিন এর জন্য আমরা একটা গাড়ি ঠিক করেছিলাম মোট ১২০০০ রুপি দিয়ে। ফলে জনপ্রতি আমাদের ৩০০০ রুপি করে পরেছিল। এতে আমাদের ভ্রমণ বাবদ সর্বমোট খরচ হয়েছিল ৩৫৭২৪ রুপি। ১ রুপি তখনকার ১.২৫ টাকা ধরে মোট টাকায় হয় ৪৪৬৫৫+ ৩৩৫০ = ৪৮০০৫ টাকা জনপ্রতি। আমরা খাওয়ার পিছনে বেশ টাকা খরচ করেছি, যার অর্ধেক খরচ করেও হয়ত ট্যুর শেষ করতে পারতাম, আর স্ন্যাক্স বলতে আমি কোল্ড ড্রিঙ্কস, চিপস, চকলেট, অথবা ফল বুঝিয়েছি। আমরা অনেক ফল কিনে খেয়েছিলাম। আমরা সবাই অধূমপায়ী ছিলাম তাই এই খাতে কোনও খরচ নাই। এছাড়া কেনাকাটা নিজের ইচ্ছা মত।
মোট খরচের তালিকায় কিছু কিছু ২ দিয়ে ভাগ করা হইছে, কিছু ৩ দিন দিয়ে আবার কিছু ৪ দিয়ে যখন যে কয়জন ছিলাম। আমি আর আমার স্ত্রী ঢাকা চলে আসলেও আমার দুই বন্ধু দিল্লী থেকে কানেক্টিং ফ্লাইট মিস করার কারণে পরে ট্রেন ধরে কলকাতা এসেছিল এবং আমাদের একদিন পরে ঢাকা এসে পৌঁছেছিল।
ফিরে আসার পর মনে হল আবার যেতে হবে কাশ্মীর, হয়ত অন্য কোনও দিকে, হয়ত অন্য কোনও ভাবে।
লাদাখের গল্পগুলো নিচের লিঙ্কে আছে
লাদাখ ভ্রমণ সমগ্র
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪১