চুল ও চামড়ার যত্নে মানুষ শরীরে বিভিন্ন ধরণের তেল ব্যবহার করে থাকে। বাংলাদেশ গায়ে মাখার জনপ্রিয় তেলের মাঝে সরিষা তেল সম্ভবত সবার উপরে থাকবে। নারকেল তেল সম্ভবত চুলে দেবার জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়। অলিভ অয়েল হয়ত স্বচ্ছল পরিবারের বাচ্চাদের গায়ে/মাথায় ব্যবহার করা হয়। এই সব ধরণের তেল কিন্তু রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়, ঠিক যেমনটা ব্যবহৃত হয় সয়াবিন তেল। আমি সঠিক পরিসংখ্যান জানিনা তবে ধারণা করি বাংলাদেশে সয়াবিন তেল সবচেয়ে জনপ্রিয় রান্নার তেল।
আচ্ছা, কখনো কাউকে দেখেছেন সয়াবিন তেল গায়ে মাখতে বা মাথার চুলে ব্যবহার করতে? আপনারা কেউ ব্যক্তিগতভাবে সয়াবিন তেল ত্বকের বা চুলের যত্নে ব্যবহার করেছেন? যদি না করে থাকেন কেন করেননি? আমার ধারণা আমরা ছোটবেলা থেকে যেহেতু আমরা কাউকে সয়াবিন তেল গায়ে/চুলে মাখতে দেখিনি, সেহেতু আমরা ধরেই নিয়েছি সয়াবিন তেল শুধু খাবার জন্যই ব্যবহার করা যাবে।
ছোটবেলার শিক্ষার প্রভাব মানুষের জীবনে সদূরপ্রসারী। ধরুন আপনি ছোটবেলা থেকে অন্যের খাতা দেখে নকল করে পরীক্ষা পাস করলেন। আপনার পরিবার-বাবা-মা কেউ আপনাকে শেখালো না এভাবে নকল করা খারাপ, অন্যায়; অন্যের জিনিস অনুমতি ছাড়া নিতে হয়না। বড় হয়ে আপনি কী করবেন? ধরুন বড় হয়ে আপনি সাংবাদিক হলেন। হয়ে আপনি এর ওর লেখা সংবাদ নিজের নামে চালিয়ে দেবেন; আপনি অন্যের কাজ নিজের বলে ক্রেডিট নেবেন। ধরুণ আপনি বড় হয়ে ব্লগার হলেন, তখন? আপনি এখান থেকে ওখান থেকে এর লেখা ওর লেখা মেরে দেবেন।
আমরা যে সমাজে থাকি, যে পরিবারে বড় হই, সেই সমাজ, সেই পরিবার একদম ছোটবেলা থেকে আমাদের নীরবে শেখাতে থাকে কিভাবে বড় হয়ে চলতে হবে। পাঠ্যবইয়ের শিক্ষার চেয়ে সেই শিক্ষাটার গুরুত্ব কম নয় একদমই।
যদি কাল কেউ আপনাকে প্রশ্ন করে আপনি কেন সয়াবিন তেল চুলে মাখেননা, আপনি বলতে পারেন আপনি কখনো দেখেননি যে সয়াবিন তেল চুলের পরিচর্যায় ব্যবহার করা হয়। আপনাকে কেউ কাল যদি নকলের দোষে দোষী করে, বলে দিন আপনি পারিবারিকভাবে নকল না করার শিক্ষটা পাননি।
লিংক ১ | লিংক ২
ছবিঃ গুগল/ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৬