আজকের ফেছবুক,টুইটার কিংবা ব্লগে নিক নেইম কি হইবো এইগুলা নিয়া যখন এত মাতামাতি তখন আমার স্কুল কলেজের স্যার ম্যাডামদের নিক গুলার কথা মনে পরে।স্কুল কলজে যেইসব বদ পুলাপাইন স্যার ম্যাডামদের বিভিন্ন বিষেষনে বিশেষায়িত করতো ঐ ক্যাটাগরিতে মনে হয় আমিও ছিলাম। ।অলৌকিক ভাবেই ক্যামনে জানি আমার দেয়া নামগুলি জনপ্রিয় হইয়া যাইতো।পাড়ায় কিংবা স্কুলে কতজনরে কতরকমের কেতাবি না দিছিলাম তার কুনু ল্যাখাজোখা নাই।বিশেষ কইরা মাস্টার মশাইদের বিভিন্ন বিশেষনে বিশেষায়িত কইরা আলোচনার শীর্ষে থাকতাম।অইরকম কিছু কাহিনি মনে পরতাছে এখন।
বৈরাগি:আসল নাম নুরুজ্জামান।বাংলা স্যার।টাইনা টাইনা কথা কইতো।কথাগুলা ছিল এইরকম-এইইইই তুম্রা শুনছোওওওওও।সিদ্দিক বয়াতির মত লম্বা লম্বা চুল আছিল তার।একদিন টিফিন প্রিয়ডের পরে ভর দুপুরে ক্লাসে ঢুইকাইকথা নাই বার্তা নাই বেদম পিডানি শুরু করছে আমারে।অপরাধ গত ক্লাসে হ্যায় যাওনের পর তার কথার স্টাইল লইয়া পুলাপানের সামনে মজা লইছিলাম। মাইর খাওনের পরই তার নাম দিয়া দিলাম বৈরাগি।ব্যাস প্রথমে বন্ধু মহল পরে ক্লাস তারপ্রে পুরা স্কুলে তিনি নুরুজ্জামান স্যারের পরিবর্তে বৈরাগি স্যার।
বাইতান:ইন্দুরের ছোট সংস্করনের নাম বাইতান কয় আমার এলাকায়।এইডার স্বভাব হইলো খালি এইদিক ঐদিক এইডা ওইডা খুজাখুজি করে।যাহোক,ভাল নাম সুব্রত কুমার।স্কুলে নতুন আইছে।বেজাত পুলাপান প্রথম প্রথম বেসি পার্ট দিতনা স্যাররে। ফলস্বরুপ পুলাপানরে কন্ট্রোলে নিতে ইট্টু বেশি হুমকি ধামকি মারতো আর পুলাপানের ত্রুটি খুজতো বেসি মানে ক্যারা কই খারাইয়া বিড়ি খাইলো,কোন পুলায় কুন মাইয়ার লগে কথা কইতো এইগুলা আরকি।স্কুলের শ্যেষ প্রান্তে ক্যান্টিনের সামনের দেয়ালেকে বা কাহারা ই+এস আরো বিভিন্ন ছন্দ ল্যাখছে আর সেই দোশ পরছে আমার ঘারে।ক্লাসে ঢুইকাই কট দিল আমারে অতঃপর নিলডাওনে থাকলাম পুরা ক্লাসটাইম।ঐ ঘটনার পরে তার নাম কোন একটা কারনে বাইতান স্যার কইছিলাম।তারপর যা হওয়ার তাই হইলো,এক কান দুই কান করতে করতে পুরা ক্লাসেই তিনি আমাদের বাইতান স্যার!
ফাপর কিং:ক্লাসে ঢুইকা কোন না কুনুভাবে তার অনট্র্যাকে ফিরতেনই তা যেকোনভাবেই হোক।তার অমুক ছাত্র ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট,অমুক ছাত্র ডাক্তার,অমুক ছাত্র মস্ত ব্যাবসায়ি।এবং অইসব ছাত্রের সাথে হঠাৎ অমুক তমুক যায়গায় দেখা হয়ে গেছিল।বাসায় নিয়ে কি কি খাওয়াইছিল তার লম্বা ফিরিস্তি।শ্যাষ্ম্যাস এমন হইলো যে তার সব কাহিনিই আমাদের মুখস্ত হয়েগেছিল।পরে শুনেছিলাম তার সব ব্যাচের সব স্টুডেন্টরাই তার অইসব কাহিনি জানে।যাইহোক ক্যামনে ক্যামনে জানি তার নাম স্কুলে ফাপর কিং হয়েগেছিল।
ডোন্ট ট্যাক ইট আদার ওয়ে:স্যার হিসেবে ম্যাথ স্যার ছিল অসম্ভব ভাল।তয় ইংলিশ উচ্চারনে এট্টু ঝামেলা আছিলো।অনেকটা আজকের অনন্ত জইল্লার মত।স্যার তার বিভিন্ন কথার ফাকে ফাকে মোডা গলায় বলতো "ডোন্ট ট্যাক ইট আদার ওয়ে"।আর পুলাপানো চামে তার নাম দিয়া দিল ডোন্ট ট্যাক ইট আদার ওয়ে।
ডন:শহরে একাউন্টিং এ যে কয়ডা মাস্টারপিছ আছিল তার মইধ্যে বোধ করি অনুপ স্যার সেরা। ফিটনেস গ্রায়েম স্মিথ আর টাক পিটবুলের মত।আমাগো যে বন্ধুরা ওনার কাছে প্রাইভেট পড়তো অরাই আদর কইরা প্রথমে স্যাররে 'ডন 'কইতো পরবর্তিতে আমরাও কইতাম।
মালেকা হামিরা:মহিলার যন্ত্রনায় পুলাপাইন অতিস্ট থাকতো।যত ভাল কইরাই উত্তর দিক ভুল সে ধরবেই,সাথে অপমান ফ্রি।আর অপমান কি যেনতেন,গুস্টি উদ্ধার কইরা দ্যায়।
বিজ্ঞানি:আকতার মিয়া ওরফে বিজ্ঞানি।কলেজের ক্যারানি আছিল।নতুনরা ভর্তি হইতে গিয়া মাঝে সাঝে স্যার সম্বোধন করতো।তয় পার্ট নেয়ার বেলায় স্যারদের চেয়ে উনি আরো একধাপ আগাইয়া ছিল ।চামে চিকুনে পুলাপাইনরে খালি জ্ঞান দিতো।তুহিন স্যার মজা করে তারে বিজ্ঞানি ডাকতো।অতঃপর পুলাপাইনো ডাকতো বিজ্ঞানি মামা।