মিতা হক নামের একজন মহিলাকে নিয়ে ইদানিং সবখানেই খুব তোঁলপাড় হচ্ছে।শুনেছি উনি রবীন্দ্র সংগীত গান।আমি তাকে চিনতাম না।রবীন্দ্র সংগীত আমার শোনা হয় না।তাই বলে আমি রবীন্দ্র বিরাগী নই।তার প্রতি ভক্তি সকল বাঙ্গালীরই থাকা উচিত।ঠাকুর সাহেবের প্রসঙ্গ এখন থাক, আমাদের ব্যস্ত হওয়া উচিত মিতা হককে নিয়ে।কেননা ঠাকুর সাহেব 'কারা বাঙ্গালী' এরকম কোনো স্পেসিফিক সার্টিফিকেট কাউকে দিয়ে যাননি। মিতা হক দিয়েছেন। " যারা মাথায় কাপড় দেয় আর যাই হোক বাঙ্গালী না ।" এমন ধরনের কথা তিনি বলেছেন।তাকে নিয়েই তো সবখানে মাতামাতি কাঁপাকাঁপি হওয়া উচিত।তাই তার উক্তি অনুসারে যারা বাঙ্গালী তাদেরকে আমি বলবো, মিতা হকের নিজ হাতে স্বাক্ষরিত মূল্যবান কাগজের সার্টিফিকেট খানা তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করার জন্য।পরবর্তীতে হয়তোবা কাজে লাগতে পারে।
ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে বাঙ্গালিয়ান সার্টিফিকেট দেনেওয়ালী মিতা হককে অনেকে সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বলতে নারাজ।সে দিক দিয়ে বিবেচনা করে আমি বলতে পারি, হয়তো তিনি ফোবিয়া রোগী।প্রবল টাইপ ঘোমটা ভীতি আছে তার।ধরলাম রোগটা তার বংশগত না।রোগটার উৎস হিসাবে বলা যেতে পারে, হয়তো মিতা হক তার ছোটবেলা কিংবা বড়বেলার কোন এক সময় তিনি গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন।গভীর রাতে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার প্রয়োজন হলে হারিকেন হাতে তিনি একা নয়তো কাউকে নিয়ে বাড়ির অদূরেই টিন দ্বারা নির্মিত টয়লেটে কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।সেই মূহুর্তে ঘোমটা পরা কাউকে, ধরে নিলাম ভূত দেখেই তিনি চিৎকার দিয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন মাটিতে।মাটিতে লুটানোর পরও হয়তো তিনি থরথর করে কাঁপছিলেন।আর সেইদিন থেকেই হয়তোবা ঘোমটা ভীতি রোগটা তার মনের ভিতর ঢুকে যায়।
মিতা হকের প্রতি খুব রকম সমবেদনা।এতদিন হয়তো রোগটা প্রাইমারী পর্যায়ে ছিলো তাই কেউ টের পায় নাই।কিন্তু বর্তমানে এটা সেকেন্ডারী স্টেজে।তাই চ্যানেলের টকশোতে তিনি বলে বেড়াচ্ছেন "যারা মাথায় কাপড় দেয় তারা বাঙ্গালী না ।" অদূর ভবিষ্যতে রোগটা যখন টারসিয়ারী পর্যায়ে পৌঁছাবে তখন হয়তো তিনি রাস্তায় নেমে পড়বেন।খালি গলায় চিৎকার করে বলতে থাকবেন, " যারা মাথায় কাপড় দেয় তারা বাঙ্গালী তো দূরের কথা মানুষই না।"
মিতা হক এবং তার মত ঘোমটা ভীতি রোগীরা রাস্তায় নেমে এসে চিৎকার চেঁচামেঁচি করুক তা আমরা চাই না। আর রাস্তা-ঘাটে চিৎকার করাটাও শোভনীয় না।আমরা আমাদের সমবেদনার দৃষ্টিকে প্রসারিত করি তাদের প্রতি।সাহায্যের হাতকে প্রস্তুত রাখি সদা তাদের জন্য।
আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক মিতা হকের ঘোমটা ভীতি দূর করার জন্য একটা পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছে।পদ্ধতিটা জটিল না,প্রাচীন।ভয়ের বস্তুটাকে রোগীর মুখোমুখি করা। তার পরিবারের মানুষজন যদি ইচ্ছা করে তাহলে চেষ্টা করতে পারে।পদ্ধতিটা হলো, তার পরিবারের সকল টাইপ মহিলা সদস্যগণ মাথায় কাপড় কিংবা ঘোমটা দিয়ে তার চারপাশে চলাফেরা করবে।আর একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর তার সামনে গিয়ে বিনীত কন্ঠে সালাম দিয়ে হাসিমাখা মুখে বলবে, "আমি বাঙ্গালী, বাংলাদেশে আমার বসবাস।"
সবশেষে আমি মন থেকে মিতা হকের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।সুস্থ মস্তিষ্কেই তিনি রবীন্দ্র সংগীত গান অনেকদিন। শুভ কামনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৪