ছেলেটি পছন্দ করে মেয়েটিকে।মেয়েটিও।প্রতিদিনই ক্লাসে চোখা-চোখি হয় দু'জনের।একে অপরের চোখের ভাষা পড়তে পারে দু'জনই।তবুও কিছুটা ভয় ও অনেকখানি সংকোচবোধ আড়ষ্ট করে রাখে সর্বদা দু'জনকেই।একে অন্যের প্রতি গভীরতম মমতাবোধ গুলো গোপন থাকে মনেতেই।কোনদিন কেউ ক্লাসে না এলে অন্যজনের দিনটাই নিরামিষ মনে হয়। আর এই জনও ক্লাসে না আসার বাঁধাটিকে বকা দিতে থাকে ইচ্ছামত।
এভাবেই দিনগুলো কেটে যেতে থাকে ধূসর।জ্যোৎস্না রাতের চাঁদটিও ধীরে ধীরে আপন হতে থাকে দু'জনের কাছেই।রোদমাখা উজ্জ্বল বিকেলটিও কাটতে থাকে মেঘমাখা।ঝুম বৃষ্টির দুপুর গুলোতে নিজেদেরকে ভীষণ রকম একলা আবিষ্কার করতে থাকে তারা।নির্ঘুম রাতের দীর্ঘ সময়টিতে ভাবনার বিষয়গুলোও সীমাবদ্ধ হতে থাকে একে অন্যের মাঝে ক্রমান্বয়ে।
সার্টিফিকেট অর্জনের গন্ডি পেরোনোর শেষ দিনটিতেও চোখা-চোখি হয় দু'জনের।কিছুটা কাছা-কাছি আসেও তারা।সৌজন্যবোধ আলাপও তাদের মাঝে হয় কিছুক্ষণ।তারপর, তারপর কিছুটা ভয় ও অনেকখানি সংকোচবোধটুকুকে আঁকড়ে ধরে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নেয় তারা।হতাশ হয় প্রকৃতি।হতাশ হয় মেঘমুক্ত রোদমাখা আকাশ।
মেয়েটি চুলের খোপা থেকে বেলী ফুলের মালাটি খুলে, ছুঁড়ে ফেলে দেয় রাস্তায় কিছুটা বিরক্তে।কষ্ট করে শাড়ি পরাটা নিজের কাছেই নিজেরই বেমানান লাগতে থাকে মেয়েটির।আর ছেলেটি ডান পাশের প্যান্টের পকেটে রাখা কিছু অগোছালো বাক্যদ্বারা তৈরী প্রেমপত্রটি পকেটে হাত ঢুকিয়ে বের করে পরক্ষণেই কি যেন ভেবে তা রেখে দেয় যথাস্হানে।স্বযত্নে।
অতঃপর, কোন এক বৃষ্টিদিনে মেয়েটিকে ছাতা মাথায় পিচঢালা রাস্তায় একাকী হাঁটতে দেখে ছেলেটি। সকল ভয় ও জড়তাকে বিসর্জন দিয়ে ছুটে যায় সে মেয়েটির কাছে। কাক ভেজা হয়ে হাঁটু গেঁড়ে বসে সিনামা স্টাইলে অদৃশ্য কদম ফুল বাড়িয়ে বলে, "আমার মহা কালের যাত্রী হবে?" মেয়েটি মুচকী হাসে।পবিত্র হাসিটিকে ভেজাতে পারে না বৃষ্টি ফোঁটারা। হতাশ হয় তারা।
উৎসর্গঃ
- কুনোব্যাঙ ও রাইসুল সাগর ভাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৫৪