মোহনার মাঝে মাঝে মনে হয়, হাসান কি সত্যিই বিয়ে করছে? হাসানের পূর্ণ সম্মতিতে বিয়ে হচ্ছে? বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে মোহনার। এই হাসানই কি মোহনার জন্য ১৪ বছর অপেক্ষা করেছে? হায়রে ভালোবাসা, ১৪ বছর ধরে খুজে বের করার পর, ৩ মাসেই ভালোবাসা শেষ। আর মোহনার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর ১৪ দিনও অপেক্ষা করতে পারলো না, বিয়ের গুছগাছ শুরু। মোহনার মাঝে মাঝে মনে হয়, সবই কি মিথ্যা ছিলো? মোহনা ভাবতে চায়না। সে এতেই খুশি, হাসানের জীবনে ওকে ভালোবাসার জন্য কেউ আসছে। সে তো এটাই চেয়েছিল।
মোহনা নিশ্চত হতে চায়, হাসান সত্যিই ভালো আছে, বিয়ে করছে। সব সময় ভাবতে থাকে, কিভাবে সে জানতে পারবে। একসময় মোহনার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। হ্যা, ফেসবুক, যেখানে হাসান মোহনা কে খুজে পেয়েছিল। কিন্তু হাসান তো ফেসবুক ছেড়ে চলে গেছে। তার পরও মোহনা একবার শেষ চেষ্টা করতে চায়। সে একটা আ্যাকাউন্ট খুলল, একটা মেয়ে এর নাম দিয়ে। তার পর ফ্রেন্ড সার্চ দিয়ে খুজলো হাসানকে। হ্যা, হাসান আছে। তার মানে, হাসান ফেসবুক থেকে চলে যায় নি, মোহনাকে ব্লক করেছে। অপমানে মোহনার মরে যেতে ইচ্ছা করলো। সেই আ্যকাউন্ট থেকে হাসানকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো। মোহনার খুব খারাপ লাগছে হাসানের সাথে প্রতারনা করতে। তার পরও মোহনা কে এটা করতেই হবে। গত ৩ মাসে মোহনা হাসানের সাথে যা করেছে, সে সবই ছিলো হাসানের জন্য, হাসানের সুখের জন্য। নিজের কথা না ভেবে নিজের অজান্তে মোহনা যে ক্ষতি করেছে, তার দায়ভার আজ শুধু মোহনার একার। এখন স্বার্থপরের মত মোহনা নিজের কথা ভাবতে চায়। হাসান কেমন আছে, এটা জানা মোহনার জন্য প্রচন্ড জরুরী।
হাসান মোহনা কে আ্যড করলো, অন্য একজন ভেবে, যার নাম ফারহানা। মোহনা জানে হাসানের সাথে কিভাবে কথা বললে হাসান তার সাথে কথা বলবে। ধিরে ধিরে হাসানর সাথে তার বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। এখন মাঝে মাঝেই তারা চ্যাট করে ফেসবুকে।
ফারহানা: আপনার বউ, গার্লফ্রেন্ড, সব, উনি কোথায়?
হাসান: ওর বাসায়, ডিনার করছে।
ফারহানা: কবে নিয়ে আসবেন আপনার বাসায়? আচ্ছা ভাইয়া, আপনি কি প্রেমে বিশ্বাস করেন?
হাসান: এই কথা কেন?
ফারহানা: আমার মনটা অনেক খারাপ ভাইয়া।
হাসান: কেন? কি হয়েছে, বলবা তো।
ফারহানা:আপনাকে বলবো কেনো? আপনি আমার কে?
হাসান: ও...হ্যা...তাইতো....sorry
ফারহানা: শুনতে চাইলে আগে ফ্রেন্ডশিপ করতে হবে।
হাসান: হুমম। চলো, ফ্রেন্ড হই, হবা? হলে হাত মিলাও।
ফারহানা: হা হা হা, চলেন, হাত মিলাই।
হাসান: এবার বলো দোস্ত, কি হয়েছে।
ফারহানা: একজন আমার মনটা ভেন্গে দিয়েছে, টুকরো টুকরো করে। আমি ওকে অনকে ভালো বাসতাম।
হাসান: আরে শোনো, এমনটি ভেবনা, life is urs, only urs
ফারহানা: আপনি বুঝবেন না ভাইয়া, আপনি তো অনেক সুখি একজন মানুষ। যাকে ভালো বেসেছেন, তাকে পেয়েছেন, আপনি কিকরে বুঝবেন, না পাওয়ার কষ্ট
হাসান: তাই?
ফারহানা: আপনার কথা বলেন। আপনার প্রেম কাহিনী শুনবো। বলেন, প্রথম দেখা কোথায়, কবে? আপনাদের রিলেশন কত দিনের?
হাসান: যদি বলি, ১ মাস। arranged marriage....totally। আম্মু পছন্দ করেছেন। কিন্তু এখন প্রেম চলছে
ফারহানা: ভাবি কে দেখান।
হাসান: ঠিক আছে, ডিসপ্লেতে দিচ্ছি ছবি।
(মোহনা অবাক হয়ে ছবি দেখছে আর হাসানের প্রানোজ্জল কথা শুনছে। )
ফারহানা: ভাবি দেখতে অসাধারন সুন্দর।আপনি অনেক ভালোবাসেন ভাবীকে, তাই না?
হাসান: হুমমমমম। তোমার মন ভালো হয়েছে?
ফারহানা: না। ভালোবাসা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আপনি বুঝবেন না।
হাসন: আমাকে বুঝাতে হবে না। আমি বুঝি।love is nothing but infatuation,when someone is not honest to it.......but love is the most preciest thing,the most sweet,holy word when u r honest to it.....thats it।
আমার জীবনে আমিও ভুল করেছিলাম, এখন আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।আমার জীবনে এমন একটা সময় কেটেছে, ধরো, ৮-১০ বছর, এমন হয়েছে, হয়ত ৭ দিন এ ৫/৬ ঘন্টা ঘুমিয়েছি।
৫-৬ দিন ঘুমাইনি এক মিনিটের জন্যও।
ফারহানা: কেনো?
হাসান: পরে বলবো। শুধু এটা বললাম তোমার জন্য, কারন, তুমি বললে, আমি বুঝবো না, তাই। u need not to search for love........if u love love,if u love life,love almighty.....than ur love ll find u out........the real love.......the honest love।
মোহনা হাসানের লিখা গুলো অবক হয়ে দেখছে, এই সেই ভালোবাসা, যে ভালোবাসা কথা হাসান চিৎকার করে, কেদে কেদে, অভিমান করে মোহনাকে বুঝাতে চেয়েছে। আর আজ, মাত্র কয়টা দিনের ব্যাবধানে এই হাসানই বলছে, সে ভুল করেছে, তার ভালোবাসা সত্যি ছিলো না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ ভোর ৪:৫২