গত বিশবছরে মনে হয় পৃথিবীটা একটু বেশিই বদলে গেছে। তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়ন খুব বেশি দ্রুত হচ্ছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে এতে আমাদের জীবন অনেক সহজ-সাবলীল হয়েছে, কিন্তু সেই ফেলে আসা দিনগুলো যখন কোন দুর্বোধ্যতা, জটিলতা ছিল না, সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে কার না মন চায়? ছোটবেলার সেই বেশকিছু স্মৃতি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
• রাতের পর রাত জেগে পড়া তিন গোয়েন্দার বই! বই না শেষ করে কোন শান্তি নেই! ছোটবেলার প্রথম ক্রাশ – রবিন মিলফোর্ড।
• কটকটি। এখনো খুব ভালো লাগে। ভাইয়া বানায়, আমরা খাই।
• কলম ফাইট। ক্লাস ওয়ান-টুতে থাকতে স্কুলে কলম নিয়ে যাওয়াটাও একটা ক্রাইমের মতো ছিল। ব্যাগ চেক করে মাঝে মাঝে কয়েকজনের ব্যাগ থেকে ১০-১২টা কলম জব্দ করা হতো!!!
• ভয়ে চোখ বন্ধ করে রাখতাম কিন্তু তবু টিভির সামনে থেকে উঠতাম না। কারণ, এটাই তো শেষ মজা। এরপর আবার কালকে সকাল থেকে স্কুল, পড়ালেখা।
• সবসময় ক্যান্ডি বলতেই নাবিস্কো। খুব ভাগ্য ভালো হলে মাঝে মাঝে এলপেনলিবে পাওয়া যেত।
• পানিতে চুবিয়ে খাওয়ার জন্য এর উপরে আর বিস্কুট হয়না! (এমনকি এখন-ও)
• স্কুল-ডায়েরী এবং প্রায় সব খাতার পেছনেই থাকত কাটাকাটি খেলা আর বক্স খেলা।
• কত ডেইরী মিল্ক-ই তো খাই এখন, তবে এই মিমি-র মতো অনুভূতি হয় না। এখনো দোকানে পেলেই কয়েকটা কিনে রাখি।
• অলিম্পিক বল পেন! ইহা ব্যবহার করিয়া মাইক তৈরি করা যাইত বিধায় ইহা আমার বিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ কলম হিসাবে ঘোষিত করা হইয়াছিল। কারো নিকট পাওয়া গেলে তাহাকে উপযুক্ত শাস্তি (শিক্ষকের টেবিলের নিচে মাথা ঢুকাইয়া কান ধরিয়া থাকা) দেয়ার বিধান ছিল।
• কলম কামড়ানোর অভ্যাস তো ছিলই। আর... একটা বিজ্ঞাপন ছিল না? “আব্বুর জন্য ইকোনো, আম্মুর জন্য ইকোনো”...... (যদি বিজ্ঞাপন আপনি দেখে থাকেন, তাহলে ৯০% সম্ভাবনা আছে যে আপনি ঐ লাইনটা সুর করে পড়েছেন)
• আহ! নতুন নতুন কম্পিউটার খেলার (এটা একটা খেলনা হিসেবেই বিবেচ্য ছিল) সময়। মারিও আমার খুব বিরক্ত লাগতো। তবে ভাইয়ারা কমান্ডো খেলতো, ওটার চেয়ে মারিও ভালো ছিল ( এখনো কমান্ডো বিরক্ত লাগে তাই তার ছবি দিলাম না) । বঙ্কহেড মজা ছিল। প্রথম মেইনগুন্ডাটা আমার খুব ভয় লাগত। আর... হাউজ অব দ্য ডেড খেলতো যেকোন দুইজন, তখন বাকি সবাই পাশে বসে দোয়া-দুরুদ পড়তে থাকত। বাসার সবারই ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল, জীবনে একবার হলেও হাউজ অব দ্য ডেড শেষ করা। (এখন অবশ্য প্রতি বসায়-ই শেষ করা যায়)
• আমি কখনো দেখিনি। তবে শুনছি ভাইয়ারা দেখতো।
• শন-পাপড়ি। আমার খুব সন্দেহ যে এটা কি ছোটবেলায়ও একই স্বাদের ছিল নাকি এখনই বেশি মিষ্টি দেয়?
• নামটা পর্যন্ত ভুলে গেছি। তবে পুরনো জিনিষ দিয়ে কিনা যেত। একবার বাসায় পুরনো কিছু ছিল না বলে, আম্মু পাঁচটাকা দিয়েছিল ভাইয়াকে, আর তাতেই ঠিক এত্তওওওওওওগুলা দিয়েছিল।
• মেলায় গেলে আম্মু কখনোই এগুলোর সামনে দাঁড়াতে দিত না।
• রকেট।
• সিন্দাবাদ। বেশি কিছু মনে নাই।
• লাইফবয় যেখানে, স্বাস্থ্য-ও সেখানে......
• ম্যাটসিলস লজেন্স। ঔষধ হিসেবেই খেতাম।
• মাছের রাজা ইলিশ, আর বাতির রাজা ফিলিপস।
• প্রতিবার খাওয়ার সময়, মুখে দিয়েই বলতাম “উমম চিজী”
• লেটস গোওও টুইস্ট...
• একা একা খেতে চাও? দরজা বন্ধ করে খাও... আওয়াজ ছাড়া খাওয়া যায় না।
এছাড়াও পটেটো ক্র্যাকার্স চিপসের তিনটা ফ্লেভার ছিল। ওগুলোর ছবি বা, বিজ্ঞাপন (ঐযে তিনটা ছেলে মহাকাশে ভেসে ভেসে চিপসের প্যাকেট পায়...) অনেক খুঁজেছি।কিন্তু পাইনি। কারো কাছে থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
( ছবিসমূহ অন্তর্জাল(!) থেকে সংগৃহীত। কাওকে ক্রেডিট দেয়া যাচ্ছে না বলে দুঃখিত। )
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭