পর্ব - ২:
--------------- বিবাহনামার সেকেন্ড পার্ট : অর্ধমৃত সময়ের গল্প গুলো
পর্ব - ৩ :
--------------
আগের পোষ্টে গোপন তথ্য ফাঁসের দায়ে পারিবারিক তথ্য অধিকার ও সংরক্ষন আইনে বউ এর হাতে ব্যাপক ঝাড়ি মুড়ি খেয়ে কানে ধরছিলাম বিয়ার গল্প আর না... তবে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে বিয়ার পরের ঘটনা দেওন যাইবেক,আর এটা শুনেই বিয়ার পরের গল্প নিয়া বসে গেলাম ...নিজের হাতে লেখা নিজের বিবাহের দিনের গল্প না পড়ার বেদানা থুক্কু বেদনা নিয়া এই পোষ্টের সূচনা
এরে উরে জিগাইলেই শুনি বিয়া কইরা মাইনসে নাকি এই পায় সেই পায় আর আমি বিয়ার পরে দেখলাম আমার সবই খালি হারায় আর হারায়... বিয়ার আগে কমপুটারডারে ভালা পাইতাম, দিন নাই রাত নাই গান শুনতাম, সিনেমা আর ছি:নেমা সবই দেখতাম আর বিয়ার তিন বছর পরে আমার নয় বছরের সতেজ সবল কম্পুটারটা এখন টিভির বিকল্প ছাড়া আর কিছু না... টিভি কার্ড লাগায়া ঐটারে সিরিয়াল দেখনের যন্তর বানানো হইছে, আহারে কত্ত ভালো কম্পুটার আছিলো রে... (বুক ফাইটা কান্দনের ইমো হবে)
আফসোস খাওনের লিষ্টে প্রথম যোগ হবে গান শোনার সেই দিনগুলো.... সোনার খাঁচায় রইলো না রইলো না বইলা কান্দি অহন বইসা বইসা... বড় শখ কইরা স্পিকার টিকার লাগাইছিলাম, টেকা টুকা বাচায় সাউন্ড কার্ড কিনছিলাম -- বুম বুম গান শুনবো বলে... মেটাল ভালো পাই, আর্টসেল থেকে পাওয়ার সার্জ, মেটালিকা আর মেইডেন থেকে সেপালচুরা হইয়া আবার ব্যাক খাইয়া ওয়েষ্ট লাইফ পর্যন্ত কাউরেই ছাড়ি নাই বিয়ার আগেই বুজছি বউ এর দৌড় বাপ্পা মজুমদার পর্যন্ত তয় ভাবছিলাম বিয়ার পরে সিস্টেম মিস্টেম করা যাবে। কিন্তু আশায় গুড়েবালি, বাপ্পার গান ছাড়লেও কয় এতো জোরে ছাড়ছো কেন, সাউন্ড কমাও হায়রে আমার মেটাল কালেকশনের সিডি গুলা, ধুলায় গড়াগড়ি খাইতে খাইতে এখন ছোট ভাই এর টেবিলে স্থান পাইছে, আমার কপালে ঘুরে ফিরে ঐ সিরিয়াল আর সিরিয়াল.....
তয় একটা বিষয়ে বউরে ভালা পাই, মুভি নিয়া হেয় তেমন কেচাকেচি করে নাই হয়তো ভাবছে বেচারা রে কিছু একটা তো খাইয়া পইড়া বাইচা থাকতে হইবো তয় ঐ যে বলে সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, বউ এর লগে লগে আমার ঘর বাড়ি শেয়ার করতে আইছে আবার ছুডু একটা পুলা.... এতোদিন পিচ্চি আছিলো ভালো আছিলো, এখন হামা দিয়া বসা শিখছে আর আমার ল্যাপ্পি নিয়া বসার বারোটা বাজাইছে হাবেভাবে বেটায় যেন বিল গেটস, ল্যাপ্পির ঢাকনা খুলা দেখলেই হালুম হুলুম কইরা ঝাপায় পড়ে.... আরে না পোলায় কম্পুর কিছু বুঝে না, আট মাসে কম্পুর কি বুঝবে হের কাছে ল্যাপ্পির ঢাকনা হলো একটা বড় বিস্কুট আর কী-বোর্ড হইলো সেরম একটা তবলা প্রথমে মাড়ি কেলায়া একটা হাসি দেয় (দাঁত উঠে নাই একটাও) তারপরে কীবোর্ডে নানান মিউজিকে বাড়ি দেয় কীবোর্ড হাতানো শেষ হলে ফাইনাল টাচ হিসাবে মনিটর খাইতে আগায় যায়.... রাগে দুক্ষে ল্যাপ্পি খুলাই বন্ধ কইরা দিসি, সম্বল বলতে সেই এইচবিও আর স্টার মুভিজ, কিন্তু আহারে এইখানেও সিরিয়ালের আগ্রাসন......
নিচের ফটুতে দেখেন সামু ব্লগের কনিষ্ঠতম ব্লগার
তয় এই ফটু দেখে বিভ্রান্ত হবার কারণ নেই, পুলায় কিন্তু ব্লগিং করে না, ল্যাপটপের ঢাকনারে কেমনে সিস্টেম কইরা মুখে দেওন যায় সেই ধান্দায় আছে.... চান্স পাইলেই....
দোস্ত ভাই বেরাদর এদের কথা কি আর বলবো??? অফিস আর বাড়ি, বাড়ি আর অফিস -- এর মাঝে হেগো জন্য টাইম কোথায়??? কি আর করা বাধ্য হয়ে অফিসের কলিগগো লগেই দোস্তি সাইরা নিছি... অফিস টাইমের আড্ডা মাইরা আসি.... সাথে ব্লগের পুলাপাইন তো আছেই তবে রাত জেগে আড্ডাবাজি, এর ওর বাসায় গিয়া মুভি দেখা, এখানে সেখানে দল বেঁধে বেড়ানো ---- আহারে আমার খালি স্যাক্রিফাইস আর স্যাক্রিফাইস....
এতো এতো স্যাক্রিফাইসের ভীড়ে বিয়ার আগের অ্যাফেয়ার লাইফের শ্রেষ্ঠতম স্যাক্রিফাইসের কথা তো ভুলেই গেছি... আহারে কি অসাধারণ সিগ্রেটখোর আছিলাম বউ এর ছিলো কমন কথা হয় আমি নাইলে তোমার এই ছাতা মাথার গোল্ডলীফ আর বেনসন... আহারে কেডা জানি গান গাইছিলো -- জেনে শুনে বিষ করেছি পান... আহারে বেনসনের পয়াকেটগুলান আজও দোকানে গেলে করুন চোখে তাকায় থাকে... আহারে আপসোস....
স্যাক্রিফাইসের গল্প আর বলার রিস্ক নিলাম না....একে তো বউ এর বদনাম করি তাও আবার অফিসের টাইম স্যাক্রিফাইস (!!??!!) করে লিখছি এইজন্য আলবিদা, টাটা, বাই বাই.... তবে যাবার আগে যারা স্যাক্রিফাইস করতে ভয় পাচ্ছেন তাদের বলি, বউদের স্যাক্রিফাইসের কাছে আমাদের এগুলা কিছু না... নতুন একটা সংসারে নতুন ঠিকানায় নতুন একটা জীবন শুরু করার স্যাক্রিফাইসগুলোর কথাও একবার ভেবে দেখবেন এজন্যই তো এই গেন্জি পইরা থাকি মনে মনে
পিচ্চিরে নিয়া পরের পোষ্টে গফ সফ করা যাবে
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৩:০৪