পর্ব - ১:
--------------- সামুতে বইসা বিবাহনামা পড়তাছি ... আহারে পুরান দিনগুলাই ভালা আছিলো
পর্ব - ২ :
--------------
... ভালোবাসার দুষ্টু চক্করে ঘুরপাক খাওনের যে কি মজা আছিলো কি আর কমু। কিন্তু কয় না সুখে থাকলে ভূতে কিলায়, চাকরি পাইয়াই মাথায় ফাল দিয়া উঠলো বিয়া করমু এইডা তো বেবাকতে জানে যে হাতে একবার ঢোল উঠলে তো আর বাড়ি মারণের লোকের অভাব হয় না দেখা গেলো আমগো মাতৃদ্বয় একলগে তাগো পোলা মাইয়ারে কবূল বলানোর লাইগা আকূল হইয়া পড়িলেন
কিন্তু বিবাহ করিব বিবাহ করিব বলিলেই তো আর বিবাহ হয় না, বিবাহ করিতে অনেক হ্যাপা পোহাতে হয় দেখা গেলো আমার বিবাহ হইবে দেখে আমার আম্মা যতটা আমোদিত ততোধিক স্যাড ফেস করে ঘুরাঘুরি শুরু কইরা দিলো আমার আব্বা হাজার হলেও বিয়ার খয় খরচা তো উনারেই দিতে হবে কি বলেন মাশাল্লাহ সোনার রুপার দামের যে উর্ধগতি এদিকে তো বিবাহের উছিলায় আমগো ঘুরাঘুরি বাইরা গেলো। কেউ কিছু জিগাইলেই কই বিয়ার শপিং করি হে হে নতুন দুষ্টু চক্কর বাইর করনের ধান্দা আর কি
তো বিয়ার কথা কাঁচাই আছিলো, ফুনে ফুনে কথা চলতাছিলো হটাৎ শুনি সেইডারে কিলায় পাঁকানোর জন্য পরিবার বৃন্দকে এক হইতে হইবে। ইহা কি হইলো ভাবিতে ভাবিতে একদিন মিষ্টি মুষ্টি নিয়া কন্যাপক্ষ বাসায় আইসা হাজির (লজ্জার ইমো জানি কুনটা??) হায় হায় মাইয়ার মামু, খালু বেবাক পেরজেন্ট, আমি দাঁত মাত কেলায়া কুনো রকমে ঘুরাঘুরি করতাছি। খাওনের টেবিলে গিয়া শুরু হইলো ইনটারভ্যু চাকরির কি অবস্থা, আরো ভালো কোথাও কেন টেরাই মারো না, দেশের বাইরে পইড়া আসো এই আর কি। হে হে বেবাক ইনফো তো আগেই মাইয়ার থিকা নিছিলো তাই হালকার উপরে দিয়া গেলো উনাগো যাওনের পর থিকা শুরু হইলো মজার খেলা বিয়া কেমনে হইবো, কি কি হইবো এইসব পেচাল আরকি। আহারা আধমরা হইয়া আমার তখন কি করুন হাল
এর মাঝে আইয়া পরলো পোলা মাইয়া বুকিং পর্ব থুক্কু এনগেজমেন্ট। স্কলারশীপ টিপের টেকা বাচায়া যেই দুই চাইর পয়সা হইছিলো চোউক্ষের পলকে নাই হইয়া গেলো...মাইয়া বুকিং দিতে ডায়মন্ডের রিং লগে শাড়ি কাপড় তো আছেই পাতলা একখান শাড়িতে দুইর চাইরটা চুমকি মুমকি লাগাইয়া যে দাম হাঁকে শুইনা তো আমি কাইত। তারপরেও অনুষ্ঠান শেষ কইরা আংটি মাংটি পইড়া দাঁত কেলায়া আমার সে কি হাসি (আহারে অহনও ফটু দেইখা কান্দন পায় কি হাসিটাই না দিসিলাম আহারে)
বুকিং দিয়া আইসাই আম্মা ঘোষনা দিলো ঘরের মাইয়া (!!??) বেশিদিন পরের ঘরে রাখন ঠিক না, জলদি কবুল পড়ান দরকার আমি কি আর কমু বুকিং এর পর থেইকাই বউ এর নানান অর্ডার, এইটা করবা ঐটা করবানা, ওর লগে কতা বলতে দেখলে কইলাম খবর আছে, অফিস এ এতক্ষন কি করো, আড্ডা মারা বন্ধ -- আরো কত কি আমি বেচারা চুপচাপ থাকি, উদাস চোখে এতদিনের সাথী কম্পুটার এর দিকে চাইয়া থাকি আর মাঝে মাঝে একক সাম্রাজ্যের (আমার রূম, খাট, আলমারি) আসন্ন দখল কল্পনা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলি...
নানা মুনির নানা মত এই কথা বিয়া না করলে কুনোমতেই বুঝবার পারবেন না। বিয়ার ডেট মেট ঠিক করণের টাইমে দেখা গেলো মাইনসের মাথায় কত বুদ্দি। জ্বীন কেহেরমানের মতো আত্মীয় স্বজন রা যার যার মত নিয়া ঝাঁপাইয়া পড়লো, একজন কয় বিয়া এমনে করাইতে হইবো, আরেকজনে কয় ওমনে। ওর কথায়ও না করা যায় না এর কথায়ও দ্বিমত করা যায় না। কারও কথা বাদ গেলেই কয় তুমরাই তো ভালো বুঝো, তুমরাই করো আমি এর মাঝে নাই বোঝেন ঠেলা, এর মদ্ধে দিয়া আমরা দুইজনে যার যার পক্ষের ঝাড়ি খাইতে খাইতে বুইঝা গেলমা বিয়া কাহাকে বলে ঘটা কইরা বিয়া করণ কাহাকে বলে, কত পরকার ও কি কি ইহা বুঝিতে আর বাকী রইলো না। আমি খাই মায়ের ঝাড়ি বউয়ে খায় মামুর ঝাড়ি। ঝাড়ির মধ্যেই শপিং টপিং চলতে লাগলো। ঘরে আমরা দুই ভাই, বোন টোন নাই, মাইয়াগো কাপড় চোপড় নিয়া কুনো ধারনাই নাই। এইবার বুঝতে পারলাম শাড়ি শুধু পড়তেই প্যাঁচ না, কিনতেও প্যাঁচ হায়রে এক শাড়িরই কত্ত রকম - বিয়ার দিনের শাড়ি, পরের দিনের শাড়ি, ঘুম দিয়া উইঠা পরনের শাড়ি, ঘুমাইতে যাওনের শাড়ি একখান স্যুটকেস সাজাইতে গিয়া জীবন পেরেশান তয় বিয়ার শপিং এ বর্তমানে নিজেকে একজন বিশেষ অজ্ঞ (!!) হিসেবে মনে করিয়া গর্ব বোধ হয়। কারও কনসালটেন্সি লাগলে আওয়াজ দিয়েন, সাক্ষাতে ফিস সম্পর্কে বিস্তারিত কমুনে
এমনি শপিং এর চক্করে ঘুরপাক খাইতে খাইতে অর্ধমৃত লাইফ খতম হইয়া গেলো। বিয়ার টাইম আইয়া পড়লো হেই বিয়ার দিনেও দুনিয়ার গেন্জাম গেন্জাইম্মা সেই বিয়ার গল্প না হয় অপ্রকাশিতই থাকুক বিয়ার পরের পরকাল লাইফের দূর্দশার গল্প আরেকদিন কমু নে...
অহন আল - বিদা
বিবাহনামার তিরতীয় পর্ব: বিবাহিত জীবনের স্যাক্রিফাইনামা
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৫