আপনি প্রেমের তীব্র বিরোধিতা করেন? প্রেম স্বর্গীয় অনুভূতি এই কথা শুনলে রেগে গরগর করতে থাকেন? আপনার মধ্যে কোনরূপ কামভাব (যৌনবৃত্তি) নেই? আপনি কোনদিন কাঁদতে পারেন না? প্রথাবিরোধী প্রেমকে ঘৃণাভরা চক্ষুতে দেখেছেন আজীবন? বামন হয়ে চাঁদ ছুঁতে দেখেন নি কখনো? রমণীর সৌন্দর্য আপনাকে আকৃষ্ট করে না?
এখুনি আপনার সকল অনুভূতি বিপরীতমুখী করে দেব আমি। শতভাগ গ্যারান্টি সহকারে এই কাজ করব কথা দিচ্ছি। হেকিম কবিরাজ ছাড়া এই কাজ করব। তবে হ্যাঁ দাদাভাই! হেকিম কবিরাজের মত হারবাল কিংবা গাছ-গাছড়া দেব না। আমি আপনাকে বাতলে দেব এক মহৌষধের নাম। আপনাকে দেব আমি সে তাবিজ!
যার প্রবলতায় বনের হিংস্র জন্তু কেঁদেছিল। ব্রহ্মচর্যরত ভিক্ষু ব্রহ্মচর্য ভুলে প্রেম সাগরে ডুব দিতে এসেছিল। পাষণ্ড জল্লাদ তার অস্ত্র চালনায় ব্যর্থ হয়েছিল মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কয়েদীর গর্দানে। নেকড়ে পর্যন্ত হরিণীকে অভয় দিয়েছিল পাশের ভূমিতে এসে খেলা করার। ঘোরতর শত্রু প্রতিপক্ষের দুঃখের কথা শুনে মনের অজান্তে দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বলেছিল, “উহ”! পৃথিবী জয় করতে যে দুঃসাহসী বীর উদ্যত সে কুরুক্ষেত্র ছেড়ে প্রেমোদ্দানের সন্ধানে ঘুরেছে ভিখেরির মত।
অত অধৈর্য হবেন না ভাই। ভালো কিছু পেতে হলে একটু আধটু তর সইতে হয়। ধৈর্যের ফলে যে মিষ্টতা অধিক। আপনাকে অধিক মিষ্টতা দেব সে পণ যে করে ফেলেছি আমি। পণ যখন করেই ফেলেছি তখন আর কথা কেন? এবার বলেই দেই।
পরম শ্রদ্ধাভাজন সুনীলদা’কে হয়তো সবাই চিনে থাকবেন। আমি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয়ের কথা বলছিলুম। ওঁর সৃষ্টি কেন যে এত মধুর হয় সে কথা সারাক্ষণ ভাবি। “সোনালি দুঃখ” এমন এক সৃষ্টি যা আপনাকে পরিবর্তন করবে নেত্র পলকের পূর্বে।
রাজকুমারী ইসল্ট (সোনালি) আর ভৃত্য তিস্তান (দুঃখ)। রাধা-কৃষ্ণের প্রেম দেখিনি, দেখেছি সোনালীর খোলা বুকে তিস্তানের ছবি আঁকার দৃশ্য। বেহুলা-লখীন্দারে, লখীন্দার ভেলায় ভেসেছিল তা হয়ত জানেন আপনি। কিন্তু তিস্তানের ভাসার কথা শুনেছেন তো? কলঙ্ক মোচনের জন্য সীতা অগ্নিপরীক্ষা দিয়েছিল। ইসল্টকে সেরকম চিত্রায়ন করেছে সুনীলদা’। রানী হয়ে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো যদি দেখতে চান কিংবা রাজসুখে সুখ অধিক নাকি জঙ্গলে ছিন্নবস্ত্রে শরীর-শরীর খেলার সুখের আধিক্ষ্য সে পরিমাপ না হয় আপনি করবেন দাদা।
বিষপানে মানুষ মরে জানি তবে প্রেম সুধা পান করে মরা স্বচক্ষে দেখেছি এখানে। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে আপনার মন চাইবে তিস্তানকে মৃত্যুর কাছ থেকে দূরে কোথাও লুকিয়ে রাখতে। তবে বিশ্বাস করুন, যখন চাতকের ন্যায় সোনালি ছুটে এসে তিস্তানের ওষ্ঠে পৃথিবীর সবথেকে দীর্ঘস্থায়ী চুম্বন করবে তখন আপনি নিজেই চাইবেন মরে যেতে। এ মরার মধ্যে যে সুখ বেশি।
#বিশেষ_দ্রষ্টব্যঃ ইহা কেবল একটি "বুক রিভিউ"। আপনার অনুভূতিতে যদি "সোনালী দুঃখ" নাড়া দিতে না পারে তবে আমি হব কৃতদাস। শত ব্যাস্ততা উপেক্ষা করে বইটি পড়া শুরু করেন দেখবেন কি তাবিজ দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:২৯