somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প

২১ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আঠারো বছর বয়স
রেজাউদ্দিন চৌধুরী
 ড্যাড, তুমি কি এই কমপ্লেক্সের ও চীফ ছিলে? বলল জামশেদ, শমসের শাহান খানের আঠারো বছরের ছেলে। কফি খেতে গিয়ে ভির্মি খেলেন শমসের।
 এটা একটা প্রাইভেট কমপ্লেক্স, জামি। আমি গভর্ণমেন্টের একজন রিটায়ার্ড সেক্রেটারী।
গম্ভীর ভাবে বললেন তিনি। সরকারের সচিবের দায়িত্বের পরিধি এবং গুরুত্ব সম্বন্ধে ছেলের অজ্ঞতায় ক্ষুব্ধ হলেন শমসের। ছেলেটা পড়াশুনায় ভাল, পরীক্ষায় ভাল করেছে, আমেরিকার উঁচু দরের ইউনিভার্সিটি স্ট্যানফোর্ডে স্কলারশীপ সহ ভর্তির সুযোগ পেয়ে সব ফেলে বাংলাদেশ এঞ্জিনীয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে পড়তে চলে এসেছে। বুদ্ধি তার প্রখর অথচ সাধারণ এই বিষয়টা জানে না! এসবের জন্যে দায়ী তার প্রাক্তন স্ত্রী তাহমিনা। সরকারী অফিসার হিসেবে চৌদ্দ বছর আগে আগে শমসের স্কলারশীপ নিয়ে বৌ-বাচ্চা সহ আমেরিকা যান, দু’বছর পর তাহমিনা ফিরতে না চাইলে তিনি একাই দেশে ফিরে উপ-সচিব পদে যোগ দেন। তারপর জেলা প্রশাসক, যুগ্ম সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, কর্পোরেশন চেয়ারম্যন, অতিরিক্ত সচিবের পদ বেয়ে সচিব হয়েছেন, বহুবার বিদেশে গেছেন, শতকরা পঁচানব্বুই ভাগ সৎ থেকেও বনানীতে সরকার বরাদ্ধ জমি ডেভেলপারকে দিয়ে ক্যাশ টাকা এবং চারটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এ সব খবর তাহমিনা জানে না, জানতে চায়নি, জামিকেও জানতে দেয়নি। যেমন তিনি জামির পড়ার খরচ পাঠাতেন তেমনি তিনি জানতেন তাহমিনার বিয়ে, জামির ব্যান্ড মিউজিক শেখা, কান ফুটো করা, লোহার বালা পরা, চুল ন্যাড়া করা, হেভী মেটাল দলের সাথে পালিয়ে যাওয়া এবং ফিরে আসার খবর। আঠারো বছর বয়সে তিনি নিজেও বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন, আবার ফিরেও এসেছিলেন, কাজেই এসব নিয়ে ভাবেননি। মেগা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের দশম তলার কফি হাউসে বিদেশী আমেজ। এর মধ্যে বেখাপ্পা শুধু দু’টি টেবিল দখল করে থাকা টুপি, দাঁড়ি, আলখাল্লা পরা কয়েকজন যুবক । জামির বয়সী এক শ্বেতাঙ্গ তরুন তার দিকে হাত তুলল, জামি ও হাত তুলল।
 ড্যাড, তুমি এদের বস ছিলে না তবু তোমাকে ওরা ’স্যার’ বলল কেন?
শপিং কমপ্লেক্সে ঢোকার পর যে কয়জন চেনা লোকের সাথে তার দেখা হয়েছে তারা ‘স্যার’, ’স্যার’, বলে কুশল জানতে চেয়েছে। কফি হাউসের ভিতরও ‘স্যার’ ‘স্যার’ করা লোক ছিল, ফলে জামি’র বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এরা ব্যবসায়ী, সচিব হিসাবে তাকে চিনত এবং এখনো ভাবে শিগ্গিরই তিনি কোন রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অথবা কোন কমিশনের প্রধান হবেন।
 ব্যুরোক্রেটদের খুশী করতে এরা ‘স্যার’ বলে। বললেন শমসের। ছেলে বলল,
 তুমিতো রিটায়ার্ড ব্যুরোক্রেট।
 বলাটা ওদের হ্যাবিট। বললেন তিনি, কিন্তু শোনাটাও যে তার ‘হ্যাবিট’ এটা বললেন না।
আজ ওমেগা কমপ্লেক্সের ডাইরেক্টরদের বোর্ড সভা ছিল।
 ড্যাড, তুমি কি জিম ক্যারী বা চাক হ্যাগেলের মত সেক্রেটারী ছিলে?
ছেলের এখনো অনেক বোঝার বাকি, ভাবলেন তিনি।
 ইউএস সেক্রেটারীরা কেবিনেট মেম্বার, মানে মিনিস্টার। এখানে সেক্রেটারীরা মিনিস্টারের নিচে।
 সেক্রেটারীর কাজ কী এখানে? কৌতুহল ঝরে পড়ে জামির গলায়। ছেলের ভুল ধারণা দূর করতে হবে। কফি খেতে খেতে সিভিল সার্ভিসের গঠন, কার্যপদ্ধতি, মন্ত্রণালয় কি, রাষ্ট্রের গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সচিবের অবস্থান কোথায় তিনি বোঝালেন। ছেলে কতখানি বুঝল আল্লা মালুম, তবে বুঝদারের মত মাথা নাড়ল। দুই কাপ কফি আর দুই পিস ‘কিশ লোরেইনের’ দাম চুকিয়ে বেরিয়ে এলেন তাঁরা। পিছন পিছন বেরিয়ে এল তরুন মৌলবীরা। এইসব তরুন মোল্লাদের ভয় পান শমসের। ‘তাবলিগি’ হলে বাইরে শান্তি ঘরে অশান্তি, ‘জিহাদী’ হলে ঘরে বাইরে অশান্তি। তরুন সাহেবটি জামির দিকে এগিয়ে এলো,
 আস্সালাম-ওয়া আলাইকুম।
 ওয়ালাইকুম আস্সালাম। বলল জামি। তারপর ঝড়ের মত ইংরেজী বলে গেল তারা। তড়বড় ইংরেজী থেকে তিনি যতটুকু বুঝলেন ছেলেটি জামিকে চেনে, দীনের দাওয়াৎ দিতে বাংলাদেশে এসে বিপদে পড়েছে, সফর সঙ্গীরা চলে গেছে, তার পাসপোর্ট ইমাইগ্রেশন অফিস আটকে রেখেছে। জামি কি বলে যেন সান্তনা দিল ছেলেটিকে। তারপর তারা চলে গেলে শমসেররা এগোলেন লিফটের দিকে। ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন শমসের,
 কে ছেলেটা?
 কনলেথ কেরী, স্যামের বন্ধু। স্যাম-এর বাসায় এটার সাথে দেখা হয়।
 স্যাম কে?
 স্যামসুল ইজলাম।
ও, সামসুল ইসলাম। তাকে তিনি চেনেন। জামির বন্ধু। জামি তার বাসায় গেছে, সে ও তাদের বাসায় এসেছে। বাবা শিল্পপতি, ঢাকায় থাকেন, মা ছেলেকে নিয়ে থাকেন আমেরিকার সানফ্রান্সিকোয়। তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়নি, শুধু দু’জায়গায় বসতি। ছেলেটা মহাবেয়াদব। তাকে একদিন বলেছিল তার বাবা নাকি বলেছেন বাংলাদেশের একশত ভাগ সরকারী অফিসার অসৎ। অবশ্য সাথে সাথে যোগ করেছিল,‘‘ বাট আঙ্কেল, মাই ড্যাড সেড, আপনি অনেস্ট।” সরকারী অফিসার একশত ভাগ অসৎ হলে তিনি কি করে সৎ হন বুঝতে পারেননি শমসের। এরপর যা বলল তাতে থ’ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ‘‘মন খারাপ করবেন না, আঙ্কেল, ইউএস গভর্ণমেন্ট আরো অসৎ, মিথ্যুক। তারা টেররিষ্ট বানায় আর বলে মুসলমানরা টেররিষ্ট । উই উইল ফিনিশ দেম অফ। আমরা তাদের শেষ করব।” সর্বনাশ! এই আমরা কারা? তিনি জামিকে আর সামসুলের বাসায় যেতে দেননি। আঠারো বছর বয়স!
সামনে কালো টয়োটা গাড়িটা দাঁড়াল। পিছন ফিরে শমসের দেখলেন জামি নেই! বড় সিঁড়ির ধাপ বেয়ে স্রোতের মত লোক নেমে আসছে, এখনই শপিং মল বন্ধ হবে। ডাইনে, বাঁয়ে উদভ্রান্তের মত তিনি তাকালেন । আলোয় আলোকিত সিঁড়ি. পেভমেন্ট, কিন্তু জামি কোথাও নেই।
 গোপাল, তুমি একটু সাইড করে গাড়ি রাখ। জামশেদ বোধ হয় পিছনে পড়ে গেছে।
 এইখানে গাড়ি রাখতে দিব না স্যার, পিছনে গাড়ির জ্যাম লাইগা যাইব।
 ঠিক আছে পার্কিং-এ রাখ। আমি কল দিলে আসবে।
ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে গেলে অকুল সাগরে পড়লেন শমসের। এখন ভিতরে গিয়ে খোঁজার মানে নেই। লিফটের কাছে গিয়ে খুঁজতে পারেন, কিন্তু এর মধ্যে জামি যদি বেরিয়ে আসে? অন্য এক্সিট ও আছে, কিন্তু সে পথে জামি যাবে না। সে এই পথে বেরুবে। গোপালের উপর রাগ হল শমসেরের। একটু বুদ্ধি করে সাইডে কোথাও গাড়ি রেখে সে এখানে এসে দাঁড়ালে তিনি ভিতরে গিয়ে দেখে আসতে পারতেন। সরকারী ড্রাইভার, এখনো আরো তিন মাস তার সাথে থাকবে। ড্রাইভারটা ভাল এবং হিন্দু হওয়ার কারণে তাকে ঈদে - রোজায় সব সময় পাওয়া যায়। তবে হিন্দু বলেই বে-আইনী কাজ করার সাহস তার কম। আরো কিছুক্ষণ উৎকণ্ঠায় কাটল। আস্তে আস্তে ভিড় কমে এল। শমসেরের হৃদপিন্ডের গতি দ্রুততর হল। ভিতরে ঢোকার মুখে গার্ড আটকালো,
 শপিং মল বন্ধ হইয়া গেছে।
 আমার ছেলে ভিতরে আছে, তাকে আনতে যাচ্ছি।
সিকিউরিটি গার্ড তাকে ছেড়ে দিল। আটটা এক্সিট গেটে ছুটোছুটি করলেন শমসের। কোথাও নেই। আবার বাইরে এলেন, বাইরে আসেনি। বাষট্টি বছর বয়সে এত ভয় তিনি কখনো পাননি। শপিং কমপ্লেক্সের ম্যানেজারের সাথে দেখা করে নিজের পরিচয় দিলেন। ম্যানেজার সিকিউরিটি চীফকে ডেকে পাঠালেন এবং সিকিউরিটি দিয়ে পুরো দশটা ফ্লোর খোঁজ করালেন, জামশেদকে পাওয়া গেল না।

বাসায় শমসেরের বিধবা বড়বোন থাকেন। তার ছেলেরা আমেরিকায় থাকে, কিন্তু তিনি সেখানে যাবেন না। শমসের এখনো তার কাছে অসহায় ছোট ভাই।
 তুই একা? জামশেদ কোথায়?
 ওর খালা সুলতানার বাসায়। আজ রাতে থাকবে।
 তুই খেতে বস তা’হলে।
 আমি খাব না বুবু। সুলতানার বাসায় খেয়ে এসেছি।
 ও।
ভয়ে বুবু’র চোখের দিকে তাকাচ্ছেন না তিনি। কত কান্ড হয়ে গেছে বুবু জানেন না! আসার পথে ফোনে স্বরাষ্ট্র সচিবের সাথে কথা বলেছেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের সাথে দেখা করে জামি’র ছবি আর তথ্য দিয়ে এসেছেন। রমনা থানা থেকে পুলিশ বেরিয়েও গেছে জামির খোঁজে।
ভোর চারটার দিকে ফোন এল। বুক কাঁপতে লাগল তার। কিডন্যাপ? মুক্তিপণ? রিসিভিার কানে নিলেন শমসের,
 হ্যালো।
 মে আই স্পীক টু শমসের শাহান খান? সাহেবী উচ্চারণে একজন বলল। কাঁপা গলায় শমসের বললেন,
 স্পীকিং। ইংরেজীতে কে যেন কাকে কি বলল। জামির গলা পেলেন শমসের।
 ড্যাড, ডোন্ট ও’রি, ’এ্যাম ফাইন। ছেলের গলা শুনে আকুল হলেন তিনি।
 তুমি কোথায়?
 তোমাকে এখন বলা যাবে না। একটা জরুরী কাজে আছি। টেইক কেয়ার। ছেলে ইংরেজীতে জবাব দিল।
ফোন রেখে দিল। কি হল ব্যপারটা? জামি কি সন্ত্রাসীদের সাথে চলে গেছে?

বেইলী রোডের সরকারী বাংলোয় ভোর হল। সারা গা ম্যাজ ম্যাজ করছে।
 একি চেহারা হয়েছে তোর? সারা রাত ঘুমোসনি নাকি? রাতে খেলি না, এখনো খাচ্ছিস না। যা, ছেলেকে খালার বাসা থেকে নিয়ে আয়।
ভাগ্যিস রাতের ফোনের কথা বুবু জানে না। কলার আইডি-তে নাম্বার দেখে সকালে ফোন করেছিলেন শমসের। বার বার যান্ত্রিক কণ্ঠ বলে, ‘আপনি যে নাম্বারে ফোন করেছেন তা বর্তমানে খালি আছে।’ আরে ব্যাটা খালি থাকলে রাত তিনটায় এই নাম্বার থেকে ফোন করল কে? ভূত?
 জামি তার খালার বাসায় কিছু দিন থাকবে। আসার আগে ফোন করবে।
হতাশ হলেন বুবু। লিভিং রুমে টি পয়ের উপর থেকে ‘ডেইলি স্টার’ হাতে নিলেন শমসের। হেডলাইনে আছে এক দলীয় নির্বাচনের ভয়াবহ পরিণাম সম্বন্ধে বিরোধীদলের ভাষ্য, আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য, আমলাদের দূর্নীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাস। ভিতরের পাতায় খবর খোঁজেন তিনি। ডিবি’র ডেপুটী কমিশনার ফোন করলেন, এখনো তারা সন্ধান বের করতে পারেননি, ঢাকায় এখন ইসলামী জঙ্গী সহ সাতটা দল অপহরণ কাজে সক্রিয়। তারা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন, সন্ধ্যার মধ্যে খবর পেয়ে যাবেন। ভাল কথা, স্যার কি মুক্তিপণ চেয়ে কোন ফোন পেয়েছেন? কেঁপে উঠেছেন শমসের। পুলিশ কি মাঝরাতের ফোনের খবর জানে? এখন কি করবেন, কা’কে ধরবেন, কা’কে বলবেন? মনের ভিতর আকুলী বিকুলী। সে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় জঙ্গীদের ফাঁদে পড়েছে, এগুলে নির্ব্বংশের ব্যাটা, পিছুলে নির্ব্বংশের ব্যাটা! ফিরে আসতে গেলে জঙ্গীদের হাতে আর না আসলে পুলিশ... ... । আঠারো বছর বয়সের সদ্য তরুন কি করে এ কাজে জড়িয়ে পড়ল? ‘আঠারো বছর বয়স কী দু:সহ স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি’, কিন্তু আমার ছেলেতো সুকান্ত পড়েনি! এতদিন শমসের পত্রিকায় পড়েছেন বিলেতে, আমেরিকায় কিছু বাচ্চা বাচ্চা মুসলমান ছেলে ইসলামী জঙ্গী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, সেদিন সামসুলের কথা শুনে তাই ভয পেয়েছিলেন, ইদানীং শুনছেন এখানকার কিছু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে মেয়েরাও এদের দলে ভিড়ছে, কিন্তু তারা অন্য বাড়ির ছেলে, অন্য পরিবারের, আমাদের কেউ না। কাল ওমেগা শপিং কমপ্লেক্স এরাই হয়তো ছিল। তখন সাবধান হওয়া উচিৎ ছিল তার। হায়, কেন লিফট্ থেকে নামার সময় ছেলের হাত ধরে রাখলেন না! শমসেরের সাথে জামীর বয়সের অনেক পার্থক্য। দেরীতে বিয়ের ফল। আচ্ছা, ইসলামী জঙ্গীই ভাবছেন কেন তিনি? ছেলেকে নামাজ পড়তে বা ইসলামিক বই পড়তে কখনো দেখেননি তিনি, তবে শুনেছেন অনেক ছেলে শুধু মাত্র বিপ্লবেব উম্মাদনায় জেহাদী দলে যোগ দেয়, অথবা এমন হতে পারে সে গোপনে পড়াশুনা করে, তিনি জানেন না। হঠাৎ ছেলের মায়ায় উথলে উঠল শমসেরের বুক। যে ছেলেকে গত বারো বছরে মাত্র পাঁচ ছয়বার দেখেছেন তার ছ’বছরের দুষ্টুমীভরা মুখ চেখের সামনে ভেসে উঠল, চোখের পানি কেউ দেখার আগেই টয়লেটে ঢুকে গেলেন তিনি।

দুপুরে খাওয়ার পর বিছানায় গা এলিয়ে ছিলেন শমসের। মাথায়, বুকে অসীম শূণ্যতা। নিজে থেকে এখন করার কিছু নেই। একটা অস্বস্তি কাজ করছে তার মনে, তাহমিনাকে খবর দে’য়া হয়নি। কি বলবেন তাকে? তাহমিনার স্বামীকে বলা যায়, কিন্তু প্রাক্তণ স্ত্রীর বর্তমান স্বামীর সাথে কথা বলতে তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। একবার সানফ্রান্সিসকোতে দেখতে গিয়েছিলেন জামশেদকে, সেখানেই দেখা তাহমিনার স্বামী রাজিব দালালের সাথে। গুজরাটি, মুসলমান হয়েছে কি না আল্লাহ্ মালুম! প্রথম দেখাতেই বলল,
 তাহমিনার মত একটা সুইট মেয়েকে আপনি ছেড়ে দিলেন কেন? অবশ্য লাভটা আমার। হা,হা,হা।
কিরকম বেয়াকুফ দেখ! আরে ব্যাটা, আরেক জনের বউকে বিয়ে করেছিস আবার নির্লজ্জের মত তার সামনেই হাহা করছিস? ক্লান্তিতে চোখ লেগে এসেছিল, এমন সময় ফোনটা এল। ধড়মড়িয়ে উঠলেন শমসের।
 হ্যালো।
 জামি কি আর ফোন করেছে, দুলাভাই?
ধুক করে নিভে গেল আশার সলতে। জামি না, মেরীল্যান্ডে থেকে জামির মামা মিনহাজ। কিন্তু সে এ খবর জানল কি করে?
 না। তুমি কি করে জানলে? মানে তুমি কি জান?
 আপাকে ফোন করেছিল জামি। আপা আপনাকে রিকোয়েষ্ট করেছে পুলিশের কাছে যেন বলেন জামি ফিরে এসেছে।
 কি বলছ মিনহাজ! আজ সকালেও পুলিশ ফোন করেছিল, আমি বলেছি জামশেদ ফেরেনি।
 এখন বলবেন ফিরেছে।
 পুলিশ যদি জানতে পারে?
 আপনি একজন প্রাক্তন সচিব, জানতে পারলে পুলিশ আপনার কি করবে? আপা সন্দেহ করছে জামি কোন ইসলামী টেররিষ্ট গ্রুপের সাথে ভিড়ে গেছে। বাংলাদেশে অবস্থা এখন খুব খারাপ, সন্ত্রাসীতে ভরে গেছে দেশ। এখানেও কিছু ইসলামিস্ট আছে, তবে পুলিশ, এফবিআই খুব সতর্ক। এখানে তারা জানতে পারলে জামির অসুবিধা হবে। রাজীব ভাই, আপা চেষ্টা করছে এখানকার ইসলামিস্টদের সাথে যোগাযোগ করে জামিকে আমেরিকা ফিরিয়ে আনতে।
মিনহাজ ফোন রেখে দিল। সত্যি কি সন্ত্রাসীদের সাথে ভিড়ে গেছে জামি? হিমশীতল বাতাস ছড়িয়ে গেল শমসেরের হাড়-পাঁজরায়। সাথে সাথে রাগও হল তার। বাংলাদেশ সন্ত্রাসীতে ভরে গেছে আর আমেরিকা শান্তির স্বর্গ, না? তবুও ডিবি’র ডেপুটী কমিশনারকে ফোন করলেন তিনি।
 মিস্টার দাস, আমার ছেলে ফিরে এসেছে। ধানমন্ডিতে তার খালার বাসায় আছে। আপনাদের কষ্ট দিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।
 সত্যি স্যার? খুশীর খবর, একটা দুশ্চিন্তা গেল। এদিকে সাভার পুলিশ অস্ত্র সহ এক দল জঙ্গী ধরেছে, এদের মধ্যে বিদেশী নাগরিকও আছে। আমাদের একটা দল সাভার থানায় গেছে জানতে এদের কোন হাত আছে কিনা আপনার ছেলে উধাও হওয়ার পিছনে।
এখন হিম বাতাস নয়, জমাট বরফ শমসেরের মেরু মজ্জায়। আড়ষ্ট হয়ে আসছে হাত পা, আতংক বিস্তার করছে মাথা থেকে বুকে।
 না, না, ওদের ফিরিয়ে আনুন। আমার ছেলেকে পাওয়া গেছে।
 ফিরিয়ে আনব কেন, স্যার? ওদের আরো কাজ আছে। ওরা জঙ্গী দলকে ডিবি অফিসে নিয়ে আসবে। এনিওয়ে, ছেলেকে একা বাইরে বেরুতে দেবেন না। রাখি, নমস্কার।
এখন কি করেন শমসের? ঘটনা তার হাতের বাইরে চলে গেছে। নিস্তেজ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন শমসের। তাঁর দৃঢ় ধারণা হল ঐ জঙ্গী দলের সাথে জামিও ধরা পড়েছে। ধরা পড়লে সে কিছু স্বীকার করবে না। সাথে পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড নেই। পুলিশ বেধড়ক ঠ্যাঙ্গাবে বা ক্রস ফায়ারে দেবে। মাথা ঘুরছে শমসেরের। ব্লাড প্রেসার দেখা দরকার। ঘরে অটোমেটিক প্রেসার মাপার যন্ত্র আছে কিন্তু উঠে গিয়ে যন্ত্রটা আনার শক্তি নেই।
সন্ধ্যায় বন্ধু সাদেক আসলেন। আরেক অবসর প্রাপ্ত সচিব।
 দোস্ত, বিকালে পার্কে হাঁটা বাদ দিলা নাকি? আসতেছ না আজ কাল!
 ছেলে এসেছে আমেরিকা থেকে। এখানে ’বুয়েটে’ ভর্তি হবে। মুখে হাসির ভঙ্গি, গলা আড়ষ্ট। তাহমিনা’র কাছ থেকে ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসায় যতখানি উৎফুল্ল তাকে দেখানোর কথা ততখানি উৎফুল্ল তাকে দেখাচ্ছে না। সাদেক এত লক্ষ্য করলেন না, বললেন,
 তার মা আসতে দিল শেষ পর্য্যন্ত! ভাল। কই, ডাক তারে, আলাপ করি।
 খালার বাসায় গেছে। মুখের রেখা না বদলে বললেন শমসের।
সন্ধ্যা ছ’টায় ‘চ্যানেল আই’র খবর শুরু হল। দুই বন্ধু মিলে শুনতে লাগলেন। অস্ত্রশস্ত্র ও জিহাদী কাগজপত্র সহ সাত জঙ্গী ধরা পড়েছে। ছেলে গুলোর বয়স আঠারো থেকে আঠাশ। উৎকণ্ঠা নিয়ে ভিডিও দেখছেন শমসের। ধরা পড়া ছেলেদের মধ্যে জামশেদ নেই, বেরিস্তা কফি হাউসের ছেলেরা ও নেই। হাঁফ ছাড়তে যাচ্ছিলেন শমসের, ছাড়া হল না। সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, এদের মধ্যে একজন জঙ্গী যুক্তরাষ্টের নাগরিক। তার তথ্য অনুযায়ী তাদের দলে বাংলাদেশী বৃটিশ এবং আমেরিকান আছে। পুরো দলকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
 এই সব বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের ব্রেইন ওয়াশ করে ছেড়ে দিচ্ছে। এক সময় যেমন নকশাল বানাতো এখন তেমনি ইসলামী জঙ্গী বানাচ্ছে। এটা একটা নতুন ফ্যাড।
বললেন সাদেক। শমসের ক্লিষ্ট হাসলেন। আটটার সময় সাদেক বিদায় নিলেন। রাতে খাওয়ার পর তাড়াড়াড়ি শুতে গেলেন তিনি, গতরাতে ভাল ঘুম হয়নি। বিছানায় শুয়েছেন কি শোননি, ফোন বাজল। বুকে কাঁপন জাগল তার।
 হ্যালো।
 শামসির, রাজীব হিয়ার। স্পীক টু তাহমিনা।
শমসের কিছু বোঝার আগেই তাহমিনা ফোন ধরল। বারো বছর পর তাহমিনার ধারাল গলায় ইংরেজী গালাগাল শুনলেন শমসের। এই কথা দিয়ে শেষ করল তাহমিনা,
 আমি তোমাকে ছাড়ব না। তুমি জেহাদিদের হাতে তুলে দিয়েছ আমার ছেলেকে। ইউ উইল পে ফর ইট।
কট করে লাইন কেটে গেল। এত উত্তেজিত কেন তাহমিনা? তাহলে আমেরিকান জেহাদীদের সাথে যোগাযোগ হয়নি? না যোগাযোগ করে কোন লাভ হয়নি? আর তিনি পে করবেন কেন? কার দেনা কে শুধবে? গভীর ঘুমে তলিয়ে পড়ার আগে ভাবলেন শমসের।

পরদিন সন্ধ্যায় অফিসার্স ক্লাবে গেলেন শমসের। এখানে কমই আসেন তিনি। টেনিস খেলেন না, বিলিয়ার্ড খেলেন না, তাস খেলেন না, লাউঞ্জে আড্ডা দেন না, কি করার আছে তার?
লাইব্রেরীতে পুরানো ‘টাইম’ ম্যাগাজিন নিয়ে বসলেন তিনি। এই সংখ্যায় বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গী নেটওয়ার্ক সম্বন্ধে একটা আর্টিকল্ ছেপেছে, তখন পড়েননি, আজ পড়লেন। পড়ে তিনি জানলেন, শুধু ‘জেএমবি’, ‘হুজি‘, ‘হিজব্-উৎ তাহরির বাংলাদেশ’ বা ‘আল্লাহর দল’ নামের নিষিদ্ধ গোষ্ঠি নয়, ’রাবেতাত-আল আলম আল-ইসলাম’ ধরণের এনজিও’দের আড়ালে জিহাদী দল গুলোর বাড় বেড়েছে। এই এনজিও গুলোর মধ্যে রয়েছে ‘মুসলিম এইড’ নামে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটা দল। কিছু অনাবাসী বাঙ্গালী তরুন এদের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। তবে উপাত্ত দিয়ে প্রমাণিত একটা তথ্য জেনে শান্তি পেলেন শমসের, সন্ত্রাসী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্থান অনেক নীচে।
ম্যাগাজিন রেখে লাউঞ্জে এসে বসলেন শমসের। বিশাল লাউঞ্জ ফাঁকা পড়ে আছে। টিভি চলছে, তিনিই হলেন একমাত্র দর্শক। টিভি’র চ্যানেলে একটা সিরিয়াল নাটক চলছে, কিন্তু সংলাপগুলি তার বোধে কাজ করছে না। যে গ্রুপের সাথেই জামি থাকুক ধরা পড়লে ক্রসফায়ার বা যাবজ্জীবন! না, বাংলাদেশ পুলিশ তার কিছু করবে না, জামশেদ মার্কিন নাগরিক। কিন্তু তার আগেই যদি ক্রস ফায়ার . . . .। না!
খবর শুরু হওয়ায় টিভি’তে মনযোগ দিলেন শমসের। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট চুক্তি, বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুত সেক্টরে অভুতপর্ব উন্নয়ন-এর খবর এবং তারপরে জঙ্গী দমন সংবাদ। জুরাইনের কাছে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে আহত হয়েছে এক তরুন। অন্য জঙ্গীরা পালিয়ে গেছে। সারা মাথায় ব্যান্ডেজ, স্ট্রেচারে মুখের অধিকাংশ ঢাকা পড়েছে এমন একটা ছেলেকে এক ঝলক দেখা গেল। কে ও ছেলেটা? মাথা ঘুরে গেল শমসেরের। কিছুক্ষণ শুণ্য ছিল মাথা। ড্রাইভারকে নিয়ে কি করে যে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আসলেন বলতে পারেন না। ডাক্তার পরীক্ষা করে বললেন তেমন কিছু হয়নি। ইসিজি রিপোর্ট ভাল, হার্ট, পালস, রিফ্লেক্স নরম্যাল। সম্ভবত: ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স। পরীক্ষার জন্যে রক্ত রেখে তাকে ছেড়ে দিল হাসপাতাল থেকে। গাড়িতে উঠে সময় দেখলেন, রাত এগারোটা। ইস্! রক্তাক্ত একটা সতেরো-আঠারো বছরের ছেলে স্ট্রেচারে শুয়ে আছে, ভাল করে দেখতে ও পারলেন না। ডাক্তার তাকে রেষ্ট নিতে বলেছে, কিন্তু শারীরিক বিশ্রাম কি তাঁর উদ্বেগ কমাবে? ছেলেটা কে কি করে খবর পাবেন তিনি? পুলিশকে কে জিজ্ঞেস করার পথ নিজেই বন্ধ করেছেন, তাহমিনা কে ফোন করবেন? একবার যোগাযোগ যখন করেছে তখন নিশ্চয়ই আরেকবার যোগাযোগ করলে অসুবিধা হবে না। মোবাইলে ওভারসীজ কল করার মত ব্যালেন্স আছে কি না দেখে নিলেন শমসের। ড্রাইভারকে বাসার গলিতে ঢোকার আগে রাস্তার ধারে পার্ক করতে বললেন। ফোন না করলেও তাহমিনার নাম্বারটা সেভ করে রেখেছেন তিনি। ক’টা বাজে এখন কালিফোর্নিয়ায়? দুপুর বারোটা, একটা হবে। লজ্জার মাথা খেয়ে কল করলেন তিনি।
 তাহমিনা, জামি’র খবর পেয়েছ? তার গ্রুপের সাথে যোগাযোগ হয়েছে?
যতখানি সম্ভব নরম গলায় বললেন তিনি।
 জামি এখানে চলে আসছে। রাখতে পারলে তাকে? খুবতো নিয়ে গিয়েছিলে দেশে!
যাক্। খবর পাওয়া গেছে তা হলে! বুক ভরে গেল তার। আবার নরম গলায় বললেন,
 আমি তাকে নিয়ে আসিনি, সে নিজেই এসেছে। আঠারো বছরের ছেলেরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেয়।
ফোন কেটে দিলেন শমসের। সত্যি আমেরিকা ফিরে যাচ্ছে জামি? শমসেরের বিশ্বাস হয় না। তার সাথে এই কয়দিন থেকে তিনি বুঝেছেন, সে আর কখনো আমেরিকা ফিরে যাবে না। তাহমিনা মিথ্যা বলছে। তবে আমেরিকা ফিরে যাবে না ভাল কথা কিন্তু সত্যি যদি জেহাদীদের সাথে ভিড়ে যায়? কোনটা ভাল? তাহমিনার কাছে ফিরে যাওয়া না জঙ্গী হওয়া? অস্থির লাগে তার। যে ছেলেটা ধরা পড়েছে সে জামি নয়। জামি পরেছিল একটা অফ হোয়াইট ব্যাগি প্যান্ট, এর পরণে ছিল নীল জীনস্। তবে কান টানলে মাথা আসে। এর কাছে খবর পেয়ে যদি জামিকে ধরে?

গেটের ভিতর ঢুকে শমসের দেখলেন বারান্দায় ড্রয়িং রুমে আলো জ্বলছে, ঘরের দরজা খোলা। জামি ফিরে এসেছে! ইয়া আল্লাহ্! স্বপ্নের মত মিলিয়ে যাবে নাতো? দরজায় দাঁড়িয়ে জামি’কে দেখলেন শমসের। জামা কাপড় ময়লা, গাল ভর্তি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। জামির পাশে বসে আইরিশ তাবলিগি ছোকরা। ছুটে গিয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
 একি চেহারা হয়েছে তোমার? কোথায় গিয়েছিলে? তার গলায় আবেগ, উচ্ছাস, সন্দেহ, ভয়। এই কি জামি?
 ড্যাড, বি কুল, বসো। হাত ধরে বাবাকে সোফায় বসাল জামশেদ।
 এ সবের মানে কি জামি? কি কাজ করছিলে তুমি?
 তাবলিগের কাজ, বাবা। মসজিদে ছিলাম তিনদিন। আজ কনলেথ পাসপোর্ট পেয়েছে, আমরা কাল ডাবলিন চলে যাব। ছাড়া ছাড়া কিন্তু পরিষ্কার বাংলায় কথা বলছে জামশেদ, তবু কথা বুঝতে কষ্ট হয় শমসেরের।
 তাবলিগে যাচ্ছ?
 তাবলিগ শেষ। এখন আইরিশ ফোক মিউজিক শিখতে যাচ্ছি।
 ‘বুয়েটে’ পড়বে না তুমি?
 ফিরে এসে পড়ব, ড্যাড।
সুখের চেয়ে স্বস্তি ভাল! কনলেথের দিকে ইশারা করে জামিকে জিজ্ঞাসা করলেন শমসের,
 এই ছেলেটা কি ধর্ম কর্ম ছেড়ে তোমার সাথে ঘুরবে?
 না। সে নিজের কাজ করবে, আমি আমারটা।
স্থির না অস্থির এই সময়? আঠারো বছরের এই জীবন! ভেবে পান না শমসের।


২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×