somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এর নাম ই ভালোবাসা

০৩ রা মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবশেষে ভ্যানে মেয়েটির দেখা
পেলাম।
মেয়েটি মানে সানজিদা আর দেখা
পেলাম
মানে একা দেখতে পেলাম। অন্য সময় তার
সাথে ভ্যানে কেউ না কেউ থাকেই। আজ
সে একা এবং আজই আমার সুযোগ।
ভ্যানচালক
কে হাতের ইশারা দিয়ে থামতে বলে
আমার ইয়া বড়
বোঁচকা টা ভ্যানের পেছনে তুলে দিলাম
আর
আমি সানজিদার পাশাপাশি ভ্যানের
সামনে বসলাম। ও হ্যা!
বোঁচকা ভর্তি শুধু কাগজ আর পাতা।
বেশ অনেক দিন হলো এই
বোঁচকা নিয়ে অপেক্ষায় থাকতাম
সানজিদার ভ্যানের।
সে প্রাইভেট পড়ে ভ্যানে করে বাসায়
যায়। কারন
সে পঙ্গু, এক পা আধা অচল। তাই ওকে
কেমন
লেঙচিয়ে, হোঁচট খাওয়ার মত করে
হাটতে হয়।
আর বাসাটাও খানিকটা দূরে ওর। তো
আমিও
বোঁচকা আর কাঁধে ব্যাগ হাতে অপেক্ষায়
থাকতাম
তার কিন্তু কোনদিনই তাকে একা পেতাম
না। আজ
পেলাম। বোঁচকা টা রাখার উদ্দেশ্য
হলো ভ্যানে যাতে আর কারও বসার
যায়গা না থাকে,
এতে করে ভ্যানচালক অতিরিক্ত আর
কাউকে ভ্যানে নিতে পারবেনা।
যাই হোক কিছুদুর যাবার পর আমার
এতদিনের প্ল্যান
মোতাবেক কাজ শুরু করে দিলাম। ব্যাগ
থেকে আমার প্রিয় প্যাড টা বের
করলাম।
সেখানে লিখলাম, “কেমন আছো
সানজিদা?”
কিছুক্ষণ ইতিউতি করে কলম আর প্যাড টা
সানজিদার
দিকে বারিয়েই দিলাম। সে অবাক
চোখে প্যাড
টা নিলো। লিখাটা পড়লো। কিছুক্ষণ ভ্রু
কুঁচকে প্যাডের দিকে তাকিয়ে অবশেষে
আমার
কাছ থেকে কলমটা নিয়ে কিছু লিখলো।
আমার
বুকের ধুকধুকানি ততক্ষনে কমতে শুরু
করেছে।
আমাকে ফেরত দিলো প্যাড আর কলম।
আমি দেখলাম লিখা, “ভালো আছি, তুমি
কেমন
আছো?”
ঊফফ...হাঁফ ছাড়লাম। ভাবছিলাম সে
হয়তো রেসপন্স
করবেনা। কিন্তু আমার আশংকা ভূল
দেখছি।
যাই হোক তারপর আমি আর সে যেসব
কথা প্যাডে চালাচালি করলাম তা এরকম,
- আমিও আছি ভালোই। তুমি অবাক
হয়েছো না যে আমি তোমায় এসব বলছি
হঠাৎ
করে?
- হুম, তা তো হয়েছিই একটু। তা কি মনে
করে?
- আছে কিছু! তবে বলার সাহস হচ্ছেনা।
- আরে বলো, বলে না হয় দৌড় দিয়ো। দৌড়
দিলে তো আর আমার মত পঙ্গু
মেয়ে তোমাকে ধরতে পারবেনা।
হাহাহা।
সে লিখাটা দেয়ার সময় মলিন হাসি
দিলো। ওর মন খারাপ
হয়ে যেতে পারে এমন বিষয় এড়িয়ে চলাই
আমার
উচিত। তাই মেইন টপিকে চলে আসলাম।
ওকে লিখে দিলাম প্যাডে,
- জানো তুমি অনেক সুন্দর। আর তোমার
সানজিদা নামটাও অনেক সুন্দর।
- হাহাহা, মজা নিচ্ছো? নাকি করুনা
করছো যে কেউ
আমার মত পঙ্গু মেয়ের প্রশংসা করে না
তাই?
- না, আমি সত্যি বলছি। আর তোমাকে আজ
যে কথা বলতে এসেছি তা হলো
তোমাকে সত্যিই
আমি অনেক পছন্দ করি।
- হাহাহা, যাক কেউ তাহলে আমাকে
পছন্দ
করে তাহলে?
বুঝলাম ও বিশ্বাস করছে না। তাই এতদিন
ওর জন্য
অপেক্ষা করা আর বোঁচকা নিয়ে দাঁড়িয়ে
থাকা সব
সংক্ষেপে জানালাম ওকে লিখে।
তারপর
মনে হলো ও যেন কিছুটা বিশ্বাস করলো।
প্যাডে আমাদের লিখালিখি চলছেই...
- একটা কথা কি জানো? তুমি সামান্য পঙ্গু
হলে কি হবে? তুমি দেখতে অনেক সুন্দর।
যেমন মিষ্টি একটা নাম তেমন মিষ্টি
তোমার চেহারা।
- হাহাহা, হাসালে। তবে জানো
সানজিদা নাম টা আমার
তেমন পছন্দ না।
- কি বলো? আমার তো অনেক পছন্দের
নামটা,
হয়তো এটা তোমার নাম বলেই এত
ভালো লাগছে আমার। আর
আমি তো মনে করো যেমন
পঁচা দেখতে তেমন পঁচা আমার নামটাও।
- না, তুমিও সুন্দর। একদম রাতুল মাস্টারের
মত!
- কোন মাস্টার?
- রাতুল মাস্টার। স্টার জলশার এক
নাটকের নায়ক।
হালাভোলা আর কি।
- ওহ আমাদের বাসায় ওসব আম্মুরা দেখে,
আমি দেখিনা।
- এসব মেয়েদেরই দেখার জিনিস অবশ্য।
ওর বাসার কাছাকাছি চলে আসছে ভ্যান।
আমি জলদি প্যাডে আমার ফোন নাম্বার
টা লিখে ওকে কাগজটা ছিঁড়ে দিলাম
আর
নিচে লিখে দিলাম, “মেসেজ দিতে তো
কোন
আপত্তি নেই নাকি!”
সে কাগজটা নিলো। আমার
দিকে মুচকি হাসি দিয়ে নেমে পরলো।
ভ্যান
ভাড়া টা দিতে দিলাম না। হাত দিয়ে
নেড়ে ওকে বুঝালাম
ভাড়াটা আমিই দিবো।
সে পা তুলে তুলে কেমন
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে বাসার দিকে
যেতে শুরু
করলো। আমি ওর গমন পথের
দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘঃশ্বাস
ছাড়লাম শুধু।
**
তারপর ওর আর আমার প্রতিদিনই প্রচুর
মেসেজ
চালাচালি হতো। ওকে বলে
দিয়েছিলাম
আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।
সাধারনত পঙ্গু
মানুষদের মন অনেক পরিষ্কার হয়, ওর মনটা
ছিল
আমার কাছে বেশি আকর্ষনীয়।
সেদিন রাতে ও আমাকে কল দিয়েছিল।
যেটা সে করেনি কখনো এর
আগে এবং যেটা আমি কখনোই আশা
করিনি।
সে বলেছিলো, “জানি এটা মেসেজে
বললেই
ভাল হতো, তবে মুখে বলতে ইচ্ছে
করছিলো।
তোমার হয়তো শুনতে ভালো লাগবে তাই।
তবে তার আগে কিছু কথা বলতে চাই। তা
হলো,
ছোটবেলা থেকেই মানুষের অনাদর আর
করুনা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে,
অনেকে বাঁকা চোখে তাকিয়েছে,
আড়ালে অভিশাপ,
কলঙ্কিনী বলে ডেকেছে আমায়। নীরবে
শুধু
চোখের পানিই ফেলেছি। তবে এখন
আমার
মনে হয়েছে একজন যে আমার কষ্ট
টা বুঝেছে এবং একজন
যে আমাকে সুখে রাখতে চায়। যে
আমাকে আমার
পঙ্গুত্ব সত্ত্বেও
আমাকে করুনা করেনি বরং ভালোবাসার
কথা বলেছে। সে হলো তুমি। আর আমার
মনে হয়েছে আমার কষ্ট টা তুমি ছাড়া আর
কেউ ভাল
বুঝবেনা। তাই আমিও বলতে চাই, আমিও
তোমাকে ভালোবাসি। আমাকে কষ্ট
দিয়োনা কখনো।”
সে এত গুলা কথা বলে কিছুক্ষণ চুপ করে
থাকলো।
তারপর কল কেটে দিলো।
যাই হোক তারপর থেকে আমাদের
প্রেমের
শুরু। তবে প্রেম জমে উঠার আগেই বিপদের
মুখ
দেখলাম।
গ্রামে সাধারনত অল্প বয়সেই মেয়েদের
বিয়ে দিয়ে দেয়। আমি ভাবছিলাম
সানজিদা পঙ্গু তাই ওর
বিয়ে সহজে দিতে পারবেনা ওর বাবা।
কিন্তু কিসের
কি! কোথা থেকে এক চালচুলো হীন,
কৃষকের
অকর্মা ছেলের খোঁজ পেয়েছেন
তিনি যে কিনা সানজিদা কে বিয়ে
করতে রাজী হয়েছে।
নিশ্চিত অনেক টাকা যৌতুকের
লোভে রাজী হয়েছে। আর সানজিদার
বাবা টাও
কেমন লোক, মেয়েকে বিদায় করতে
পারলেই
যেন বাঁচে! যত্তসব।
মেজাজ গেলো খারাপ হয়ে। প্যাড হাতে
নিলাম।
সেখানে ঘচঘচ করে লিখলাম কিছু কথা।
যা এরকম,
“প্রিয় সানজিদার বাবা, আসসালামু
আলাইকুম।
আপনাকে যা বলতে চাই তা
হলো...মেয়েকে এত
তারাতারি বিয়ে দিচ্ছেন কেন? তাকে
পড়াশুনা করান।
এতে সে একদিন নিজের ভাঙা পায়ের
উপরেই
দাঁড়াতে পারবে। আর জানেন না কম
বয়সে বিয়ে দেয়া ঝুকিপূর্ণ হবে
সানজিদার জন্য?
আমি জানি আপনি রাগী আর জেদী
মানুষ।
আপনি তাকে বিয়ে দিয়েই ছাড়বেন।
এক্ষেত্রে আমার একটা অফার আছে।
আমি সানজিদা কে বিয়ে করতে চাই।
আপনাকে কোন যৌতুক দিতে হবেনা আর
আল্লাহ
দিলে আমার বাবারও সম্পদের কমতি
নাই। আর আপনার
মেয়েকে আমি অনেক আগে থেকেই পছন্দ
করি। সে সুখেই থাকবে ইনশা আল্লাহ।
এখন
ভেবে বলুন কি করবেন!”
যদিও সানজিদার বাবাকে ভয় পাই তবে
রাগের
চোটে সেই লিখাটাই নিয়ে গিয়ে
হাজির হয়েছিলাম
বাজারে, সানজিদার বাবার দোকানে।
কিছু দুরেই আমার
বাবারও দোকান আছে।
তার হাতে ধরিয়ে দিলাম কাগজটা।
**
কাগজটা তাকে দিয়েই চোখ বন্ধ করে
ফেললাম।
কিছু রেগে যাওয়া চিৎকারের
আশংকা করছি মনে মনে।
তার গলার আওয়াজ শুনে চোখ খুললাম।
তিনি বললেন,
- এটা কি দিছো?
আমি চুপ!
- মশকরা করো আমার সাথে?
- মন চাচ্ছিল বলি, " না তা না, আমি যা
লিখেছি সব মন
থেকেই লিখেছি।" কিন্তু চুপ থাকতে
হলো!
- (একটু রাগী গলায়) ফাজলামী করো
নাকি আমার
সাথে?
জবাব দেয়ার ভাষা নাই! চুপ করে শুনে
যাচ্ছি!
- ওই ছেলে? তুমি জানোনা আমি পড়তে
পারিনা???
খাইছে। ভূলেই গেছিলাম তিনি আসলে
অক্ষর
জ্ঞানহীন মানুষ। কি করবো বুঝে উঠার
আগেই
তিনি তার ছোট ভাই যিনি তার
দোকানেই বসে ছিলেন
তাকে বললেন, “এই দেখ তো কি লিখা এর
ভেতর?”
আমি এবার সমুহ বিপদের আশংকায় চোখ
আবার বন্ধ
করে ফেললাম। হঠাৎ করে এত বেশি ভয়
কেন
লাগছে কে জানে।
একটুপর তার ছোট ভাইয়ের গমগমে গলার
স্বরে চোখ খুললাম। তিনি বললেন, “বড়
ভাই!
কি লিখা আছে তা না হয় এর বাপের কাছ
থেকেই
শুনেন, চলেন এর বাপের দোকানে!”
এই কথা শুনে আমার শিরদাঁড়া দিয়ে
ভয়ের হীম
স্রোত নেমে গেলো। পা কাঁপতে শুরু
করে দিছে।
মনে হলো কয়েক সেকেন্ডের ভেতর যেন
আমাদের দোকানে আসা হলো।
আমি মনে মনে দোয়া দুরুত পড়া শুরু
করে দিয়েছি ততক্ষনে।
আব্বুকে কাগজ টা দিয়ে সানজিদার
বাবা বললেন,
“দোস্ত তোর ছেলে আমারে এই কাগজ
দিছে।
কি লেখা আছে পড় তো?”
আমি অপরাধীর মত দোকানের কোনায়
দাঁড়িয়ে ছিলাম। বাবা যখন
চোখে চশমা লাগিয়ে জোড়ে জোড়ে
কাগজের
লিখা গুলা পড়তে শুরু করলেন তখন
শেষবারের মত
চোখ বন্ধ করে ফেললাম। আর
মনে মনে কামনা করছিলাম আমার কান
টাকে কেউ
বধির করে দিক সাময়িক সময়ের জন্য
অথবা মাটি টা ফাঁক
হয়ে যাক আর আমি ঢুকে যাই।
**
চোখ খুলেই যেন নিজেকে বাসর
ঘরে আবিষ্কার করলাম। বিছানায়
সানজিদা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।
একটু মজা করার জন্য আর সানজিদা কে
অধৈর্য্য করার
জন্য বিছানায় গিয়ে সানজিদার পাশে
শুয়ে পরলাম। ওর
ঘোমটা টাও তুললাম না, ওকে টাচও
করলাম না।
মোবাইল টা বের করে এমনি গুঁতাগুঁতি শুরু
করলাম।
আর আড়চোখে দেখছিলাম সানজিদা কি
করে।
প্রায় পনেরো মিনিট সে ওভাবে বসেই
থাকলো।
তারপর একটু নড়ে উঠে হাত বের
করে আমাকে একটা ঠ্যালা দিলো। আমি
চুপ
করে শুয়ে থাকলাম তবুও।
কয়েকবার ঠ্যালা দিয়েও যখন আমি
নড়লাম না তখন
সে বললো, “ওই...”
আমি অনড়।
সে- কি হলো ঘুমালা নাকি?
আমি চুপচাপ।
সে- তোমার সাথে একটা কথা ছিল?
আমি তখন বিছানার পাশ থেকে মজা
করার জন্য প্যাড
আর কলম টা নিয়ে লিখলাম, “আপনার কিছু
বলার
থাকলে এই প্যাডে লিখে বলতে পারেন”
সে প্যাডের লিখা পড়ে বললো, “আমার
একটা চাওয়ার আছে তোমার কাছে!”
আমি লিখলাম, “যে কোন চাওয়া, পাওয়া,
আবদার
বা আবেদন আপনি লিখে জানাতে
পারেন ম্যাডাম”
সে তখন লিখে বললো, “লজ্জা লাগছে
যে”
আমি লিখলাম আবার, “আরে আজ রাতে
আবার
লজ্জা কিসের? আমরা আমরাই তো!
বলে ফেলো!”
সে তখন ঝট
করে ঘোমটা খুলে আমাকে বললো, “এখন
স্টার
জলশায় একটা নাটক হচ্ছে যেটা আমার খুব
প্রিয়। কিন্তু
টিভি তো তোমার বাবা মায়ের ঘরে!
কিভাবে নাটক
টা দেখবো এখন?”
এধরনের কিছু আজ শুনবো কল্পনাতেও
ভাবিনি।
টাশকি খাইলাম বিরাট আর কি।
যাই হোক সে তো লজ্জায় বাবা মাকে
নাটক দেখার
কথা বলতে পারবেনা তাই আমিই সুন্দর
করে নাটক
দেখতে দেয়ার জন্য একটা আবেদনপত্র
লিখলাম।
তারপর সেটা মা কে দিয়ে বাবাকে
দেয়ালাম।
আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর আবিষ্কার
করলাম
বাবা কাঁচা ঘুম ভেঙে যাওয়ায় লাল চোখ
নিয়ে টিভির
স্ক্রিনে তাকিয়ে আছেন, মা জোর
করে হাসিহাসি মুখে সানজিদার
পাশে বসে টিভি দেখছেন, সানজিদা
উৎসুক
চোখে নাটকের
গভীরে ঢুকে গেছে বুঝা যাচ্ছে আর
আমি নাটকের পরিচালক কে শাপশাপান্ত
করে যাচ্ছি মনে মনে।
**
বাসে উঠলাম ফুফুর বাসায় যাবার জন্য।
তারা আমার বউ
কে দেখতে চেয়েছেন।
বিয়েতে আসতে পারেন নি কিছু
ঝামেলার জন্য।
আর সেদিন কাগজের লিখা পড়ে বাবা
রেগে যাওয়ার
বদলে হোহো করে হেসে দিয়েছিলেন।
সাথে সানজিদার বাবাও! আসলে তিনি
আর বাবা বাল্য
কালের বন্ধু। সানজিদার বাবা নাকি
আগে একবার সানজিদার
সাথে আমার বিয়ে দেয়ার কথা
বলেছিলো বাবা কে।
কিন্তু বাবা নাকি তখন রাজী হয় নাই।
পরে আমার
লিখা কাগজ আর সানজিদার প্রতি আমার
অনুভূতি দেখে বাবা নরম হয়েছিলেন, আর
কাগজের লিখার ধরন দেখে বাবার নাকি
খুব
হাসি পাইছিলো। যাই হোক দোকানেই
আমার
সামনেই যখন দুই বন্ধু কোলাকুলি করলেন
তখন
আমার খালি মনে হচ্ছিল এমন দৃশ্য শুধু
সিনেমাতে না বাস্তবেও সম্ভব।
যাই হোক,
বাসের জানালার পাশে সানজিদা,
কানে ফোন। ওর
বাসা থেকে ফোন এসেছে হয়তো।
একটু পর কন্ডাকটর আসলেন ভাড়া নেয়ার
জন্য। পাঁচশ
টাকার নোট বের করে দিলাম। তিনি
বললেন, “কই
যাবেন ভাই আপনারা?”
আমি সানজিদার দিকে তাকালাম।
সে ফোনে কথা বলা নিয়ে ব্যাস্ত।
- কি হলো ভাই? বলেন কই নামবেন?
আমি সানজিদার মুখের দিকে তাকাই,
সে এখনো খেয়াল করেনি ব্যাপারটা।
- ভাবীর দিকে তাকান কেন? আপনে
বললেই
তো হয়! ৫০০ ট্যাকা দিছেন কয় ট্যাকা
ফেরত দিমু
তা তো জানা লাগবে। কই যাবেন কন।
আমি সানজিদাকে কনুই দিয়ে খোঁচা
মারি। সে এবার
আমাদের দিকে তাকায়। বিষয় টা বুঝে
ফেলে।
ফোন রেখে বলে,
“আসলে ভাইয়া আমরা বগুড়া যাবো!”
- ও তো সেইডা কইলেই হয়! ভাই রে সেই
তখন
থেইকা জিগাইতেছি ভাই বলেই না!
সানজিদা একবার আমার দিকে তাকায়।
গলার স্বর নরম
করে কন্ডাকটর কে বলে, “আসলে ও
কথা বলতে পারেনা! বোবা!”
কন্ডাকটর লোকটা আমার দিকে এবার
কেমন করুন
চাহনি তে তাকায়। বলে, “ওহ ভাইজান
জানতাম না! মাফ
কইরেন!”
লোকটা চলে যায় বাকি টাকা ফেরত
দিয়ে।
আমি সানজিদার দিকে তাকাই। সে
আমার
কাঁধে মাথা দেয়। আমরা একে অপরের
কষ্ট টা বুঝি,
তাই # পরস্পরকে অনেক ভালোবাসি।
কেউ বোবা বলে করুনার
চোখে তাকালে আগে খারাপ লাগতো
কিন্তু এখন
লাগেনি। কারন আমার ‘কন্ঠ’ তো আমার
পাশেই ,
আমার কাঁধে মাথা দিয়ে বসে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ৮:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×