আর কিছুক্ষণের মধ্যেই দম বন্ধ হয়ে মারা
যাবো হয়তো। উঁহু, হয়তো বলার আর তো কোন
কারণ ই নেই। এখান থেকে বেঁচে ফেরার
কোন উপায় তো চোখে পড়ছে না। হাত পা এর
ছড়াছড়ি করতে শুরু করলাম একটু পরেই।
ইশশ! উফ!
এসব চিন্তা করে কি ব্রীজ থেকে
লাফ দেওয়া যায়? চিন্তা করেই তো হাত পা
কাটা দিয়ে উঠলো। কিন্তু. . . . . লাফ তো
দিতেই হবে।
ধুর, শালা,,,,
ফোন টা সাইলেন্ট করতে ভূলেই গেছি। কে
আবার ফোন দিল এই অসময়!
আহা রে! আম্মু!
"হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম "
"অলাইকুম আসসালাম, কোথায় তুমি রেহান ??"
"না মানে আম্মু, আমি এখন এক জায়গায় য় য় . .
"
"তোতলাতে হবে না, ৫ মিনিটের ভিতর
বাসায় আসো। তোমার জন্যে একটা
সারপ্রাইজ আছে।"
"হু"
ফোন কেটে দিলাম। কি সারপ্রাইজ! উঁহু, নো
আবেগ। জাস্ট সুইসাইড। আর কিছু মাথায় আনা
যাবে না।
যলদি ফোন টা সুইসড অ অ অ । উফ!
আবার কে ফোন দিলো!
-হারামি ফোন দেওয়ার আর কি টাইম পাস
নাই। কাল ল্যাব এ আসিস সব কমুনে। নাহিদ
কে আরো ক্ষানিক দিয়ে ছেড়ে দিলাম।
কিন্তু আমি তো কাল ল্যাব এ যামু না, হি হি।
ওরে এবার ঠিকমতো ডস দেওয়া যাবে।
তবে ফোন টার এবার কিছু করতেই হবে।
পানিতে ফেলে দিতে গিয়ে, উঁহু থাক, এতো
দামি ফোন পানিতে আমার সাথে মরার কি
দরকার!
ফোন টা র্যালিং এর উপর রেখে দিয়ে এবার
চোখ বন্ধ করলাম। এবার আর কিছু শুনতেছি
না। ঠিক মতো পোজ দিতে না দিতেই আবা র
র র।
এক চোখ কোন মতে খুলে আড় চোখে দেখার
চেষ্টা করলাম কে সেই বীর***।।
আবেগ। এবার অনেক টা উপকার ঈ হবে আমার
জন্য। এ রকম ই কিছু একটাই . . । কেন জানি
আবেগ পাচ্ছিলাম নাহ, কিন্তু মরতে গেলে
তো প্রচুর আবেগ লাগে।
ফোন টা বেজেই চলেছে। ফোনের উপর বড়
করে লেখা ইশিতা। একটা পিক ও দেওয়া
কলার পিক হিসেবে।
ইশ! ইশ! ইশি!তা ।। কি সুন্দর মেয়েটা। আগে
কাজল দিতো ঠোটে ,আহ কি সুন্দর ই না
লাগতো। অহ,উঁহু স্যরি ঠোটে না , চোখে দেয়
তো কাজল। ইশিতা ও তাই দিতো। কিন্তু এখন
আর দেয় না । ভালো লাগেনা এটা আমার।
আমি ওর কাজল মাখা চোখ ই যে বেশি
ভালোবাসি। কিন্তু ও হয়তো চায় না আমি
ওকে ভালোবাসি।
হুহ। এবার আবেগ টা ধরে উঠেছে বোধ হয়।
কি ব্যাপার, ফোন এখনো তো বেজেই
যাচ্ছে। একবার রিসিভ করেই দেখি কি বলে
মেয়ে টা।
অনেক কিছু ভেবে ফোন টা হাতে নিলাম।
হাত টা কাপতেছে। কি ব্যাপার, ফোন টা
হঠাৎ এতো ভারী হয়ে উঠলো কিভাবে!
হুম। রিসিভ করে বললাম।
কিন্তু ওপাশ থেকে ইশিতার আওয়াজ
আসতেছে না তো। ওর ভয়েজ আর কেউ না
চিনলেও আমি তো চিনবো।
কিছুক্ষণ পর আওয়াজ পেলাম।
চোখ দিয়ে
পানি আর আটকানো সম্ভব হলো না। এ
আওয়াজ ও তো নয় ইশিতার। কিন্তু ডুকরে
কান্নার আওয়াজ কেন? এতো, এতো, এই
ভাবে কেউ কাঁদে!
ফোন টা এবার অফ। ইশিতা কে শান্তি মতো
দেখে নিয়েছি কিছুক্ষণ আগে।
আর সহ্য হচ্ছে না। আমি একা থাকতে পারবো
না সেটা তো ও জানেই। তারপরেও ও ও কিভাবে চলে যেতে পারলো না ফেরার দেশে! ।।
আমিও আসতেছি ইশিতা, একটু ওয়েট করো আমার জন্য
প্লিজ।
তারপর কিছু দীর্ঘশ্বাস। চোখ টা বন্ধ করে
এলিয়ে দিলাম নিজেকে। পানির একটা
দাপট খাটানো হুংকার। তারপর সেই ওইরকম
অনুভূতি যে রকম টা ব্রীজের র্যালিং এর উপর
বসে ভেবেছিলাম।
আর অল্প কিছুক্ষণ হাত পা ছড়াছড়ি।
তারপর
আর কোন শব্দ নেই।