স্বাধীনতার মহানায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এমআর আখতার মুকুলদের জন্ম যে বগুড়াতে, সেখানেই বঞ্চিত আরেক মহানায়ক ২৫০০ মুক্তিযোদ্ধার প্রশিক্ষক অবসর প্রাপ্ত সুবেদার মেজর দবির উদ্দিন আহম্মেদ। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাতেই জায়গা হয়নি তার। খুবই দু:খজনক একটি ঘটনা এটি। ঘটনাটি জার্নালবিডি২৪ নামক একটি অনলাইনে এসেছে।
১৯৭১সালে যিনি বগুড়ার যুবকদেরকে বিভিন্ন স্কুলের মাঠে কাঠের রাইফেল আর বাঁশের লাঠি দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তিনি হলেন অবসর প্রাপ্ত সুবেদার মেজর দবির উদ্দিন আহম্মেদ। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বালুরঘাট পতিরাম ক্যাম্পে বগুড়ার প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দেন। তার শিষ্যরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও গত ৪৫ বছরেও পদবীতো দুরের কথা মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাতেও স্থান পাননি এই প্রশিক্ষকের নাম।
-অবসর প্রাপ্ত সুবেদার মেজর দবির উদ্দিন আহম্মেদ
১৯১৯ সালের ৩০ নভেম্বর বগুড়ার সেউজগাড়ি এলাকায় জন্ম গ্রহন করেন দবির উদ্দিন আহম্মেদ। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি বৃটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মায়ানমার সহ বেশ কয়েকটি দেশে যুদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভক্তির পর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৬৪ সালে সুবেদার মেজর হিসেবে চাকরী থেকে অবসর নেন।
১৯৭৯ সালের ২৬ জুন মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বগুড়ার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান সহ নাট্য জগতে প্রবেশ করে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে দবির উদ্দিন যে ভুমিকা রেখেছেন তার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা অর্থসম্পদ নয় শুধু স্বীকৃতিটুকুই দাবি করলেন।
তার ছোট মেয়ে জয়া জানালেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাবা যে ভুমিকা রেখেছেন তার জন্য অর্থসম্পদ নয় শুধু স্বীকৃতিটুকুই চাই। তাহলে আমরা বগুড়ার মানুষের কাছে বলতে পারব, আমাদের বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ছিলেন।
এদিকে বগুড়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রুহুল আমিন জানালেন, যার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি, তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নেই এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা চাই দ্রুত তার নাম তালিকাভুক্ত করা হোক। তিনি ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে ওস্তাদ দবির উদ্দিনের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আনার জন্য যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে বলে জানালেন।
কিন্তু কেন তার নাম এখন পর্যন্ত তার নাম তালিকা ভুক্ত করা হয়নি এটাই বড় বিস্ময়।
স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরেও মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষক ওস্তাদ দবির উদ্দিন আহম্মেদের নাম তালিকায় না থাকায় হতাশ বগুড়াবাসী। সবার আশা অন্ততঃ এবার তার নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবে।