বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদ বগুড়ার মহাস্থানগড় সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেল। মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তির স্থান। পূর্বে এর নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। এর অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে মহাস্থান গড় অবস্থিত।
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের রাজধানী মহাস্থানগড়ের নাম ছিল পুণ্ড্রনগর। এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে মহাস্থান গড় সুমহান ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।
গত ২৪শে নভেম্বর, ২০১৬ ইং তারিখের এক ঘোষনায় সার্ক কালচারাল সেন্টারের ঢাকায় সফররত পরিচালক ওয়াসান্থে কোতুবেলার এই কথা জানান। বগুড়ার মহাস্থানগড় হবে সার্কের দ্বিতীয় আর বাংলাদেশের প্রথম সংস্কৃতিক রাজধানী। এটা নি:সন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় গর্বের বিষয়।
২০১৫ সাল থেকে সার্ক কালচারাল সেন্টার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কোনো একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলকে সার্কের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে আসছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর ইংরেজি নামের আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে দেশগুলোর স্থান বেছে নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য আফগানিস্তানের বামিয়ানকে গত বছর সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০১৭ থেকে এক বছরের জন্য মহাস্থানগড় সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে থাকবে।
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে মহাস্থানগড়ে মানববসতির চিহ্ন পাওয়া যায় বলে জানান এ অঞ্চলের প্রাচীন ঐতিহ্যের গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান। মহাস্থানগড়কে সার্কের রাজধানী হিসেবে বেছে নেওয়ার ঘোষণাকে সঠিক এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুফি মোস্তাফিজ বলেন, ‘কেবল ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। এই সাংস্কৃতিক রাজধানীকে পর্যটন ও আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কাজে লাগাতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পর্যটন বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে।’
১৮৭৯ সালে প্রাচীন পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের ঐতিহাসিক নিদর্শন আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম। পুণ্ড্ররাজ্যের রাজধানী বর্তমানের রাজশাহী, দিনাজপুর এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সুফি মোস্তাফিজ বলেন, পুণ্ড্র সিলেট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বলে মনে করা হয়। তবে এর যথার্থ প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের প্রথম সংস্কৃতিক রাজধানী মহাস্থানগড়ের জন্য শুভ কামনা রইল। সেই সাথে ধন্যবাদ সার্ককে।
তথ্যসূত্র:
১. দৈনিক প্রথম আলো অনলাইন
২. উইকিপিডিয়া
৩. ছবি গুগল