;;
;;
;;
এই পোস্টটি পড়িলে আপনি জানিতে পারিবেন বাসর ঘরে কোন ব্লগার কি করিবেন, সহধর্মীনিদের ক্ষপ্পরে পড়িয়া তাহাদের কি দশা হইবে অথবা তাহাদের ক্ষপ্পরে পড়িয়া তাহাদের সহধর্মীনিদের কি দশা হইবে। তাহা হইলে আসুন ভাই বোনেরা যাওয়া যাক মূল পোস্টে। সাথে আছেন ব্লগেষক আলিম আল রাজি।
মাহফুজ ক্লান্ত ভাই
মিস লিজা। মডার্ণ ডিজুস সুন্দরী। তার সাথে বিয়েই হয়েছে ক্লান্ত ভাইয়ের।
মিস লিজা বাসর ঘরে আছেন চুপচাপ। অপেক্ষা করছেন কখন মাহফুজ ক্লান্ত ভাই আসবেন ঘরে। বেশ কিছুক্ষন পরে আসলেন ক্লান্ত ভাই।
বেশ জোরে কাশির দোয়া পাঠ করে কাশি দিলেন।
বেশ অবাক হলেন মিস লিজা। কপাল কুচকে বললেন-
“হেই বেইবে! তুমি এইটা কি বললা?”
নতুন বউয়ের এই ভাষা শুনে ক্লান্ত ভাইয়ের আক্কেল গুড়ুম। আতংকিত হয়ে বলে উঠলেন-
-“লা হাওলা ওলা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ...। বিবি, তুমি এইগুলা কি বলিতেছো? কোরয়ানে স্পষ্ট বলা আছে বাসর ঘরে কেউ কাউকে বেইবে বলিতে পারিবে না। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিতও হইয়াছে যে এই রাতে 'বেইবে' টাইপ ইহুদি নাসারাদের বানি মুখে আনলে উত্তর মেরু বরাবর বিষুব রেখায় আন্তঃনক্ষত্র গ্যালাক্সির সংঘর্ষ হইতে পারে। ”
মিস লিজা এবার বিরক্ত।
-“হেই ম্যান! গত কালই তো রেডিও টুডের লাভ গুরু অনুষ্ঠানে আরজে নিরব ভাইয়্যা বলেছেন হাব্বিকে 'বেইবে' ডাকতে হবে।”
মিস লিজার মুখে এই তাইপ ডিজুস আর ইহুদি নাসারাদের কথাবার্তা শুনে ক্লান্ত ভাই পুরা তব্দা! তিনি জোরে জোরে “অস্তাগফিরুল্লাহ মিন যালেক” পড়তে পড়তে উলটে পড়ে গেলেন।
মিস লিজা ছুটে গিয়ে ক্লান্ত ভাইকে জড়িয়ে ধরলেন। ভয়ে ভয়ে বললেন!
- "এই চলো তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই”
ক্লান্ত ভাই বললেন- “না না। তার দরকার নেই। সেই ১৪০০ বছর আগেই প্রমান হয়েছে বাসর ঘরে উলটে পড়ে যাওয়া স্বাস্থের জন্য ভালো। ইউটিউবেও এ ব্যাপারে প্রমান আছেন। ক্লিক দিস লিংক। হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না। তুমি বরং পারলে হয়রান ভাইকে ফোন করে বলো আমাকে এসে একটা ফু দিয়ে যেতে”
************************************************
হড়ড় নাপে বাইঃ
কোন আগামাথা চিন্তা না করেই কথা বলা শুরু করলেন হড়ড় নাপে বাই।
-“শুনো এক হড়ড় গল্প। এক দেশে ছিলো এক ছেলে। একদিন তাকে ভূত ধরে নিয়ে গেলো। তারপর ফেরত দিয়ে গেলো।”
থামলেন নাপে বাই। বুক ফুলিয়ে বললেন-
- “কি? অনেক ভয়ের না? দেখেছো!! আমার কিন্তু অনেক প্রতিভা। তুমি সারা জীবন মুফতে হড়ড় গল্প শুনতে পারবা। তোমার কত্তো সৌভাগ্য।”
ভাবী এই হড়ড় গল্প শুনে রাগে গরর করতে লাগলেন।
গরর শুনে নাপে ভাই মাথা ঘামালেন না। তিনি বললেন-
- “লক্ষিটি। তুমি চুপচাপ বসে থাকো। এক্ষুনি এই ঘরে একটা টিম প্রবেশ করবে।”
ভাবীর তো তখন আক্কেল গুড়ুম। বাসর ঘরে কেবল তারা দুইজন থাকবেন। কিন্তু টিম আসবে কেনো? টিমটাই বা কিসের!
হুড়মুড় করে বাসর ঘরে প্রবেশ করলো এক ঝাক লোক। তাদের সাথে লাইট ক্যামেরা সহ নানান যন্ত্রপাতি।
ভাবি আতংকে বলে উঠলেন- “ঐ নাপে! এইগুলা দিয়া কি করবা?”
নাপে ভাই জবাব দিলেন- “এইগুলা দিয়া শর্ট ফিল্ম হবে”
-“এতোদিন নায়ীকার অভাবে শর্ট ফিল্ম বানাইতে পারি নাই। আজকে বানাবো। তুমি নায়ীকা”
ভাবীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। এ কি বিপদ!!!!!!
************************************************
আচিপ মহীউদ্দিনঃ
আচিপ ভাইয়ের বউ নাম “মুসাম্মৎ দুর্দানা বেগম”। পরহেজগার মহিলা।
মুসাম্মৎ দুর্দানা বাসর ঘরে বসে আছেন। ধীরে ধীরে ঘরে প্রবেশ করলেন আচিপ ভাই।
নতুন বউয়ের মুখের দিকে তাকালেন আচিপ ভাই। বেশ ভাব নিয়ে বলে উঠলেন-
“শুনো, আমাদের বিয়ে হয়েছে ঠিক তখনই যখন পৃথীবি পার করছে এক অস্থির সময়। তথাকথিত প্রেরিত পুরুষদের তৈরি করে দেয়া নৈতিকতার মান দন্ডকে কাজে লাগিয়ে ধর্ম ব্যাবসায়ী আর বেনিয়ারা তিলে তিলে আমাদের মতো উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মানুষদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে অপশাষনের খড়গ আর আমরা এলিট শ্রেনীর কিছু প্রতিনিধিরা আজ রাত দিন চেষ্টা করছি ঐ বিষাক্ত জালটাকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে। এই কঠিন যাত্রায় আমি তোমাকে আমার পাশে চাই হে মুসাম্মৎ দুর্দানা বেগম।”
আচিপ ভাই কথা শেষ করে একটা ঢোক গিললেন মাত্র। ঠিক তখনই নাটকিয় একটা পরিস্থিতি শুরু হলো বাসর ঘরে।
ঘোমটা খোলে কোমরে শাড়ি পেচিয়ে দুড়ুম করে উঠে দাড়ালেন দুর্দানা বেগম। ভয়ংকর গলায় চিৎকার উঠলেন।
“তুমি আমারে নাস্তিকতা শেখানোর ধান্দায় আছো? চিনো আমি কে? আমি হলাম হিজবুৎ তাহরিরের নারী নেত্রী দুর্দানা।”
আসিফ ভাইয়ের অবস্থা তখন ভয়াবহ।। ভয়ে তার গলা শুকিয়ে কাঠ। আমতা আমতা করে বলার চেষ্টা করলেন।
“দেখো দুর্দানা, ধর্ম কিভাবে আজ...”
কথা শেষ করতে পারলেন না আচিপ ভাই। হুংকার দিয়ে উঠলেন দুর্দানা বেগম।
-“থামো। ওযু করছো?”
-“ইয়ে মানে...! করি নাই”
-“ লাগবে না ওযু। তাইমুম করো। তুমি ওযু করতে গেলে ভেগে যাবা”
আচিপ ভাইয়ের অবস্থা তখন কেরোসিন।
-“ইয়ে মানে ওযু দিয়া কি হবে?”
-“নফল নামায পড়তে হবে। আমি ইমামতি করবো উঠে দাঁড়াও।”
আচিপ ভাইয়ের তখন ছেড়ে দে মা কেদে বাচি অবস্থা! আস্তে আস্তে বললেন
-“ওগো শুনো!...”
আবার হুংকার দিলেন দুর্দানা বেগম।
“কোন শুনা শুনি নাই। আসো নামাযে আসো”
আসিফ ভাই অনিচ্ছা আর ভয়ের সাথে নফল নামাযে দাড়ালেন। আচ্ছা! নফল নামাযের নিয়ত যেনো কি! নাওয়াইতওয়ানু সাল্লিয়া লিল্লাহি...।”
************************************************
বি দ্রঃ
** দুর্দানা বেগম নামটি জাফর ইকবাল স্যারের "অনিক লুম্বা" বই থেকে মেরে দিয়েছি
** এটাকে আমার অন্যান্ন পোস্টের মতো জাস্ট একটা ফান পোস্ট হিসেবে নিলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
******* বাসর ঘরে কোন ব্লগার কি করিবেন... - ১