somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেত্রকোণা ও শেরপুর জেলার মধ্যে ফুলপুর হয়ে সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবী

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আওয়ামীলীগ সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে দেশের সর্বত্র সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে উঠছে। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে সরকারের প্রয়াস সর্বত্র সমান নয়। দেশের কিছু কিছু অঞ্চল রয়েছে, যেখানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের আতিশায্য দেখা যাচ্ছে। আবার অন্য কোনও অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা সরকারের নজরের বাইরে রয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দশকের পর দশক সরকারের নজরে বাইরে রয়ে গেছে, এমন একটি অঞ্চল হলো ময়মনসিংহ বিভাগের উত্তরাঞ্চল। এই বিভাগে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনা প্রয়োজন, এমন দু’টি অঞ্চল হলো নেত্রকোণা জেলা ও শেরপুর জেলা। উল্লেখ্য যে, নেত্রকোণা জেলা ও শেরপুর জেলা পরস্পর নিকটবর্তী জেলা। এই দু’টি জেলার মাঝখানে রয়েছে, ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলা, যা এই দুই জেলার মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। এই একটি মাত্র উপজেলা মাঝখানে থাকার কারণে আপাতদৃষ্টিতে দু’টি জেলা পরস্পর যোজন যোজন দূরে বলে মনে হয়। কিন্তু এই দুই জেলার মধ্য ব্যবধান কেবলমাত্র ২০ কিলোমিটার। এই দুই জেলার মধ্য সরাসরি সড়ক যোগাযোগ না থাকায়, নেত্রকোণার মানুষকে একবার ময়মনসিংহ গিয়ে তারপর ফুলপুর হয়ে শেরপুর পৌঁছাতে হয়। ঠিক একইভাবে শেরপুর জেলার মানুষকে নেত্রকোণা যেতে হলে একবার ফুলপুর হয়ে ময়মনসিংহ গিয়ে তারপর নেত্রকোণা পৌঁছাতে হয়। নেত্রকোণা ও শেরপুরের মানুষকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াত করার কারণে অতিরিক্ত ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। সে হিসেবে পূর্বধলা ও নকলা উপজেলার দূরত্ব সরাসরি যেখানে প্রায় ৫০ কিলোমিটার, সেখানে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াত করার জন্য এই দূরত্ব হয়ে দাঁড়ায় ৭৫ কিলোমিটার।
এই অতিরিক্ত দূরত্ব অতিক্রম করার কারণে পূর্বকালে এই জেলার মানুষের মধ্যে তেমন কোনও যোগাযোগ ছিলো না। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এই দুই জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে এই দুই জেলার মানুষের মধ্যে যাতায়াতের পৌন:পুনিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কারণে এই দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি এই দুই জেলায় অনুষ্ঠিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যোগ দিতে মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ভ্রমণ করছে। অধিকন্তু উভয় জেলার মধ্যে পণ্য পরিবহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে এই দুই জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা দরকার। এই দুই জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য বৃহৎ কোনও বাজেটের প্রয়োজন নাই। কারণ নেত্রকোণা জেলার আভ্যন্তরীণ যোগাযোগের অংশ হিসেবে নেত্রকোণা শহর থেকে পূর্বধলা উপজেলা সদর পর্যন্ত সড়ক রয়েছে। অন্যদিকে আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় শেরপুর থেকে নকলা হয়ে ফুলপুর পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। কাজেই পূর্বধলা থেকে ফুলপুর পর্যন্ত কেবলমাত্র ২৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হলেই, নেত্রকোণা জেলা ও শেরপুর জেলা সড়কের মাধ্যমে পরস্পর স্থায়ীভাবে যুক্ত হবে।
২৫ কিলোমিটারের এই সড়ক নির্মাণ করা হলে শুধু যে নেত্রকোণা জেলা ও শেরপুর জেলা যুক্ত হবে, তা নয়। বরং এই যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে নেত্রকোণার দিক থেকে সুনামগঞ্জ জেলা (যেমন-ধর্মপাশা উপজেলা ও শাল্লা উপজেলা)-এর কয়েকটি উপজেলা যুক্ত হবে; অন্যদিকে শেরপুর জেলার দিক থেকে জামালপুর জেলা (যেমন-বকশীগঞ্জ)-এর কয়েকটি উপজেলা যুক্ত হবে। এভাবে প্রায় ২০০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত একটি অঞ্চল সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। ফলশ্রুতিতে দুটি প্রত্যন্ত জেলার মধ্যে পারস্পরিক অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। এভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টির ফলে, দেশে সুষম অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটবে। প্রত্যন্ত জেলাসমূহের মধ্যে এরূপ পারস্পরিক যোগাযোগ প্রত্যন্ত অঞ্চল কেন্দ্রিক সম্পদের উৎপাদন, পরিবহণ ও বন্টন ব্যবস্থাকে সহজতর করবে। কাজেই যোগাযোগ উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় উক্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এখন সময়ের দাবী।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৫
৬ বার পঠিত
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শিল্পী মমতাজ কিভাবে দশমাস আত্নগোপনে ছিলেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৩৩


'ফাইট্যা যায় বুকটা ফাইট্যা যায়' খ্যাত সংগীত শিল্পী গতকাল রাতে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। শিল্পী মমতাজ ফোক সংগীতের জন্য গ্রামে গঞ্জে বেশ নাম করেছিলেন। শিল্পী মমতাজ কে সবাই চিনে মূলত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নৌকা ডুবার পর আওয়ামী সমর্থকরা গামছা পরে শরম ঢাকবে কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৩৯



ছাত্র-জনতার তাড়া খেয়ে আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলে ছাত্র-জনতা তাদের সখের নৌকাখানা ডুবিয়ে দেয়। জলে ভিজে উঠে শরম ঢাকতে এখন তাদের গামছা প্রয়োজন।বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির নাতির আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহন

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ১৩ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৫১



কয়েকদিন আগে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে গর্ব করা সজিব জয় এখন মার্কিন নাগরিক। সারাদিন আমেরিকাকে গালি দিয়ে এখন সে হয়েছে আমেরিকার নাগরিক। ভন্ডামির সীমা কোথায়!

খবর থেকে - শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতে ওয়াকফ বিল: মুসলিম সম্পদের উপর হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের নতুন অধ্যায়

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৪ ই মে, ২০২৫ সকাল ৮:৩৭

ভারতে ওয়াকফ বিল: মুসলিম সম্পদের উপর হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের নতুন অধ্যায়

ছবিঃ এআই ব্যবহার করে তৈরিকৃত।

ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়নের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় এবার যুক্ত হলো একটি নতুন উপকরণ—ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের নেতৃত্ব কী কাঁঠালপাতা খাচ্ছে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:০৩



ভারতের এই কাঁঠালপাতা খেকো নেতৃত্ব তাদের দেশের ভিতর মুসলিম নির্যাতন, ওয়াকফ বিল অথবা অন্যকোন অপকর্মের কথা বললেই বলে এটা তাদের অভ্যন্তরীন বিষয় অথচ এরা প্রতিনিয়তই বাংলাদেশের অভ্যান্তরীন বিষয় নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×