somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রমিকের অধিকার.....................

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসছে ১লা মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস। কত আয়োজন করে দিনটি পালন করা হবে। দিনটি পালন করতে কতশত আয়োজন। কত হল রুম ভাড়া,কত রং-এর পোশাক পরে র‌্যালিতে যাওয়া ইত্যাদি অনেক রকম আয়োজন লক্ষ্য করা যায় ১লা মে উপলক্ষে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য ৩৬৫দিনের মধ্যে এই একটি ‍দিন ছাড়া কি আর কোন দিন দাবি আদায় করার সময় হয়না। আমাদের দেশের প্রায় ৮০ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আসে যে শিল্প থেকে সে শিল্পের শ্রমিকরা সবথেকে বেশী নিরাপত্তাহীন। যে শ্রমিকদের গায়ের রক্ত পানি করা শ্রমে এদেশের অধিকাংশ বৈদেশিক মুদ্রা আসে তাদের মজুরি, বাসস্থান, স্বাস্থ,যাতায়াত ইত্যাদি সকল কিছুতে সমাজের সবচেয়ে নিম্নমান পরিলক্ষিত হয়। মালিক পক্ষ তাদের ব্যবসায় স্বার্থ টিকিয়ে রাখতে শ্রমিকদের সঠিক মজুরি দেয়না। আমরা লক্ষ করি যে ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকদের সঠিক মজুরি প্রদান করা হয়ে থাকে তাদের প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক অসন্তোষ কম হয়। তাদের প্রতিষ্ঠানে সব সময় উৎপাদন ঠিক থাকে। মালিক পক্ষ কি এসব বিষয় লক্ষ করেনা?

আমাদের দেশে হাজারো শ্রমিক সংগঠন আছে। তারা সরকার থেকে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত। অথচ ১লা মে ছাড়া তাদের কোন কার্যক্রম চোঁখে পড়েনা। এই সংগঠনের কথা বলে লাখ লাখ টাকা শ্রমিকদের থেকে চাঁদা তোলা হয়। এই সংগঠনের যারা নেতা তারা কেউই শ্রমিক নন। তারা থাকেন দশতলা বিল্ডিং-এ। শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা দেখার সময় যেন তাদের নেই। শ্রমিক নেতা হওয়া দরকার সত্যিকারের শ্রমিক। যে কিনা শ্রমিকদের সকল সমস্যা বোঝে। শ্রমিক নেতা সেজে শুধু টেলিভিশন টকশো,পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিলেই শ্রমিকদের স্বার্থ আদায় হয়না। তাদের দাবি আদায় করার জন্য পরিকল্পনা মাফিক ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার।

আমাদের দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো হয়ে গেছে রাজনৈতিক দলের লেজুড়ভিত্তিক। যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তার শ্রমিক সংগঠনগুলো সরকারের কোন ভুল ধরিয়ে দেয়না্ বা সরকারের বিপক্ষে যাক এমন কোন কাজ তারা করেনা। এতে শ্রমিকদের বিশাল একটা অংশ দাবি আদায়ে সোচ্চার থাকেনা। আবার যারা আন্দোলন করে তা যদি সরকারের বিপক্ষে যায় তবে সরকারী দলের শ্রমিকরা আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মারধর করে। এতে দাবি আদায়ের আন্দোলন শুরুতেই মার খায়। যখন শ্রমিকরা আন্দোলন করে তখন সরকার বা প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ নেতাদের নিয়ে বসে। নেতারা তো শ্রকিকই না তারা শ্রমিকদের কথা কিভাবে প্রকাশ করবে। এজন্য কোন দাবি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়না। এতে দাবি আদায়ও হয়না। তাই শ্রমিক সংগঠন হওয়া দরকার শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য,কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ্ উদ্ধারের জন্য নয়।

শ্রমিকদের নিরাপত্তা যে কত নিম্ন মানের তা লক্ষ্য করা যায় তাজরিন ফ্যাশন ও রানা প্লাজা দূর্ঘটনার চিত্র থেকে। প্রায় প্রতি বছর কোন না কোন গার্মেন্টস দূর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ফলাফল শূন্য। যে শ্রমিকরা নিজ জীবনের নিরাপত্তাই পায়না। সে কিভাবে সঠিক কাজ করতে পারবে। যারা নিরাপত্তার সাথে কাজ করার নিশ্চয়তা পায় সেই কেবল স্বাচ্ছন্দে কাজ করতে পারে। এতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে। এজন্য শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা করে কাজ করা দরকার।

আমরা অনেক সময় লক্ষ্য করি শ্রকিকদের বিরাট অংশ সিন্ডিকেট করে থাকে। এটা শ্রমিক এবং মালিক উভয়েরই ক্ষতি হয়। শ্রমিকরা চাকরি হারায় আর মালিক পক্ষ ক্রেতার চাহিদা সময়মত পূরন করতে পারেনা। এর ফলে অর্ডার বন্ধ হয়ে যায়। একাজ করে অনেক মালিক পথে বসেছে আবার হাজারো শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। এজন্য শ্রমিকদের সাবধান হওয়া দরকার।মালিকের লক্ষ রাখা উচিৎ যেন শ্রমিকদের মধ্যে মালিকের দূর্বলতার সুযোগে কোন সিন্ডিকেট তৈরী করতে না পারে। মালিকের উচিৎ সঠিক সময়ে শ্রমিকের মজুরি প্রদান করা।


সবশেষে বলতে চাই শ্রমিক ও মালিকের যৌথ প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। শ্রমিকদের সংগঠন শুধু শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য হওয়া উচিৎ। কোন স্বার্থান্বেসী মহল যেন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করি। আর আমাদের শ্রমিক শ্রেণী যেন সুখে শান্তিতে থাকে সেই কামনায় শেষ করছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×