প্যাট্রিসিয়া অ্যান বয়েড বা প্যাট্রি বয়েড জন্ম ১৭ই মার্চ ১৯৪৪ সনে ইংল্যান্ডের সোমারসেট শহরের টন্টেন নামক জেলাতে। পেশায় তিনি একজন মডেল,ফটোগ্রাফার এবং লেখক।
এছাড়া তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হল তিনি বিশ্ববিখ্যাত ব্যান্ড দল বিটলস এর সদস্য জর্জ হ্যারিসন এর প্রথম ও সাবেক পত্নী এবং আরেক বিশ্ববিখ্যাত শিল্পী এরিক ক্ল্যাপটনের ও প্রথম ও সাবেক পত্নী।
বয়েড ১৯৬১ সনে হার্টফোর্ডশায়ারে অবস্থিত সেইন্ট মার্থা কনভেন্ট থেকে ও লেভেল পাশ করেন। তিনি ১৯৬২ সনে লন্ডনে চলে আসেন এবং শ্যাম্পু গার্ল হিসেবে এলিজাবেথ আরডেন স্যালুন এ যোগদান করেন এখানে তাদের এক ক্লায়েন্ট যিনি একটি ফ্যাশন ম্যাগাজিন এ কাজ করতেন তিনি বয়েড কি মডেলিং এর জন্য উৎসাহ দেন।
মডেলিং হিসেবে তার প্রথম ফ্যাশন ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৬২ সালে লন্ডন, নিউ ইয়র্ক এবং ফ্রান্সে। বয়েড ১৯৬৯ সালে বিখ্যাত ফ্যাশন পত্রিকা ভোগ এর ইটালিয়ান এবং ইংল্যান্ডের নিয়ে যে এডিশন বের হয় তার কাভার ফটোতে আসেন।
জর্জ হ্যারিসনের সাথে যেভাবে পরিচয় -
বয়েড ১৯৬৪ সালে বিটলস কে নিয়ে করা একটি মুভিতে স্কুল গার্ল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কাস্ট হন। ছবিটির নাম "এ হার্ড ডেইস নাইট " এই ছবিটির মাধ্যমে জর্জ হ্যারিসনের সাথে তার প্রথম পরিচয়। ছবিটিতে তার একটি মাত্র ডায়ালগ ছিলো,এরপরে সে বিটলসের গান "আই শুড হেভ নোন বেটার " এর একটি সেগমেন্ট এ কাজ করেন। তিনি এসময় ফটোগ্রাফার এরিক সয়েনের সাথে সেমি এঙ্গেজড ছিলেন। বিটলস এর সাথে কাজ চলাকালীন সময় জর্জ হ্যারিসন তাকে ডেটিং এর প্রস্তাব দিলে বয়েড তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এর কিছুদিন পর এরিক এর সাথে সম্পর্ক ছেদের পর তিনি আবার বিটলস সাথে কাজ করতে আসেন এবং জর্জ হ্যারিসন দ্বিতীয়বারের মত তাকে ডেটিং এর প্রস্তাব দেন। বয়েডের ভাষ্য মতে, তাদের প্রথম ডেটিং এ জর্জ হ্যারিসন তাকে বলেছিলেন " তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে? আচ্ছা যদি না বিয়ে করো তুমি কি আজকের রাত্রে আমার সাথে ডিনার করবে"। বয়েড আর হ্যারিসন ২৫ই ডিসেম্বর ১৯৬৫ সালে এঙ্গেজড হন। ১৯৬৬ সালের ২১এ জানুয়ারী এসলে রোডে অবস্থিত রেজিস্ট্রি অফিসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং হানিমুনের করার উদ্দেশে বার্বাডোস এ যান। পরের সেপ্টেম্বর মাসে বয়েড আর হ্যারিসন ইন্ডিয়া ভিজিটে যান পণ্ডিত রবিশঙ্কর এর সাথে দেখা করতে তারপর তারা লন্ডন ফিরে আসেন ২৩ই অক্টোবর ১৯৬৬তে।
ইস্টার্ন মিস্টিক এর উপর বয়েডের অনেক আকর্ষণ ছিল এবং তিনি এবং এর সাথে তিনি স্প্রিচুয়াল রিজিওনাল মুভমেন্ট এর সদস্য ছিলেন। তিনি বিটলস এর সব সদস্য কে ইন্ডিয়ান মিস্টিক মহারিশি মহেশ ইয়োগির সাথে দেখা করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন সেসময় মহারিশি লন্ডন অবস্থান করছিলেন। এরপরে বয়েড সহ পুরো বিটলস ব্যান্ড ১৯৬৮ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে ইন্ডিয়াতে মহারিশির হৃষীকেশ আশ্রম সফর করেন।
১৯৭৩ সালে বয়েড দ্য ফেইসেস এর গিটারিস্ট রনি উডের সাথ প্রনয়ে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৪ সালে তিনি হ্যারিসন থেকে আলাদা হয়ে যান এবং ৯ই জুন ১৯৭৭ তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়।
এরিক ক্ল্যাপটনের সাথে সম্পর্ক
৬০ এর দশকে এরিক ক্ল্যাপটন আর হ্যারিসন ছিল খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু তারা সেসময় একসাথে গান লিখতেন এবং একসাথে সঙ্গীত রেকর্ড করতেন। এ সময়কালিন ক্ল্যাপটন বয়েডের প্রেমে পড়ে যায়। ক্ল্যাপটন সেসময় ডেরেক এন্ড দ্য ডমিনস দলের মেম্বার ছিলেন এবং তিনি বয়েড কে উদ্দেশ্য করে "লায়লা" নামে একটি বিখ্যাত গান লিখেন।
১৯৭৯ এ বয়েড ক্ল্যাপটনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সেসময় ক্ল্যাপটন প্রচণ্ডভাবে নেশায় আসক্ত ছিলো। ১৯৮৪ সালে বয়েড ক্ল্যাপটনকে ছেড়ে চলে যায় এবং ৮৮ সালে তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে বয়েড এর ভাষ্য ছিল ক্ল্যাপটনের অধিক মাত্রার এলকোহলিক হয়ে যাওয়া এবং ইটালিয়ান মডেল লরি ডেল স্যান্টোর সাথে প্রেমে জরানো।
বয়েড কে নিয়ে হ্যারিসন ও ক্ল্যাপটনের গাওয়া বিখ্যাত গান গুলি
ধারনা করা হয় হ্যারিসনের বিখ্যাত গান "আই নিড ইউ ","সামথিং " এবং ক্ল্যাপটনের "লায়লা ","ওয়ান্ডারফুল টুনাইট ","বেল বটম ব্লুস " আরো বেশ কিছু গান বয়েড কি নিয়ে লেখা।