সব কিছুই একটা নিয়মের মধ্য থেকেই করতে হয় । কূটনামী কিংবা ক্ষমতাবান হওয়ারও কিছু নিয়ম আছে ।
সেগুলো নিয়েই আজকের পোস্টে গোপন সূত্র শেয়ার করবো । যারা জানেন না তাদের জন্য এই লেখা স্বার্থক হবে।
১। ওস্তাদের সাথে ওস্তাদি করবেন না ।
নিজের গুরু কে গুরু মানুন। ক্রেডিট দিন যদিও একটা সময় আপনি উস্তাদের চেয়েও বড় ওস্তাদ হয়ে
যান । ওস্তাদকে ক্ষেপাবেন তো মরবেন । ওস্তাদ আপনার সক্ষমতা ও দুর্বলতা জানাই কথাই । তাই এ থেকে
বিরত থাকতে হবে। সুযোগ পেলেই তাদের প্রশংসা করুন । কৃতজ্ঞ থাকতে হবে।
২। কখনও বন্ধুদের অতিরিক্ত বিশ্বাস করতে যাবেন না ,শিখুন কিভাবে শত্রুদের ব্যবহার করা যায় ।
পৃথিবীতে যত বড় বড় ক্ষতি সাধন হয়েছে ,সেগুলোর পেছনে রয়েছে খুব কাছের জনের ষড়যন্ত্র। বন্ধুরা বিশ্বাসঘাতকতা করলে আপনার ক্ষতিসাধন করাটা সহজ হয়ে যাবে। সামাজিক ও পারিবারিক কলহ থেকে শুরু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিকট বন্ধুদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্যই ভুক্তভোগীর বেশি ক্ষতি হয় । সো,নো আলগা বিশ্বাস । ঠিক যতটুকু বিশ্বাস করা দরকার ততটুকুই করুন । শত্রুকে ব্যবহার করা শিখতে হবে। কিভাবে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হয় সেগুলো আগেবাগেই রপ্ত করে ফেলতে হবে । বিষয়টা এমন হতে শত্রু নিজেও বুঝতে পারবে না যে আপনি তাকে বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবহার করছেন তাকে। সাফল্য আসবে প্রমাণিত ।
৩।আপনার মনের একান্ত ইচ্ছাটি মনের মণিকোঠায় কুলুপ মেরে রাখুন ।
কোনো এক বিশেষ উদ্দেশ্যে কাজ করছেন,সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জেনে গেলে সমস্যা হতে পারে এমন কাজে
বিশেষ সর্তক থাকতে হবে। আপনার কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের সব সময় দ্বিধায় রাখতে হবে যেন বুঝতে পারে
,কি আপনার মতলব । গ্রাম্য একটি প্রবাদ আছে ‘বেড়ারও কান আছে’। সাবধান। সঠিক পন্থায় এগিয়ে গেল
তথ্য পাচার হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন । শত্রু নিজের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কম পাবে। আসল উদ্দেশ্য কেউ কে বলার প্রয়োজন নেই । মনেই চেপে রাখুন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এগিয়ে যান ,তারপর বিজয়ের হাসি হাসুন ।
৪। প্রয়োজনের চেয়ে কম বলুন প্রকাশ করুন।
প্রকাশ করবেন কম কিন্তু করবেন বেশি এই নীতি মেনে চলতে হবে।যদি এমন হয় আপনি বিশেষ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন তা বুঝে ফেলার সম্ভবনা কিন্তু থেকই যাচ্ছে।যত বেশি বকবক তত বেশি বোকামীর পরিচয় দিবেন । মনে রাখবেন জ্ঞানীরা কম কথা বলে সময় । তারা বাস্তবায়নে বিশ্বাসী ।
৫। অধিক রক্ষণাত্বক হোন ,নিজের খ্যাতির প্রতি বিশেষ নজর রাখুন ।
রক্ষণাত্বক জয়ী হতে এগিয়ে রাখবে । ডিপেন্স শক্তিশালী হলে আক্রমণ করে সহজে সুফল পাবেন। শত্রুর মনোবল
ভেঙ্গে দিতে এটা কাজে দিবে । আপনার ইমেজ নষ্ট হতে পারে এমন দিকে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
আপনার কম ক্ষতির সম্ভবনা আছে এমন দিকেও শক্তিশালী প্রস্তুতি নিতে হবে। নিজের শক্তিমত্তা নিয়ে ভাবতে হবে।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা আগে থেকেই সরে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ ।
৬। অন্য কে দিয়ে কাজ করান এবং নিজেই সেটার ক্রেডিট নিন ।
যে কাজ অন্যকে দিয়ে করাতে পারবেন সেটা নিজে করার দরকার নেই । অবশ্যই অন্যের জ্ঞান,পরিশ্রম,মেধার সঠিক ব্যবহার শিখতে হবে। আপনার নেতৃত্বগুণ দিয়ে ক্রেডিট নিজের করে নিতে পারেন।চেষ্টা করতে থাকুন সূত্রটি রপ্ত করতে,একদিন ঠিক শিখে যাবেন ।
৭। অন্যকে আসতে দিন আপনার কাছে,কথা বলুক ,শুনুন আপনি । সে শত্রু হলেও । প্রয়োজনে টোপ ফেলান ।
মনোভাব বুঝার চেষ্টা করুন । সাথে প্রকাশভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ । আসলে কি বলতে চাচ্ছে সে।কি চায় আপনার কাছে।
বিচক্ষণতার গুণ থাকলে ধরে ফেলবেন । বের করুন তার স্বার্থ কি । কূটকৌশলের মাধ্যমে তৃতীয় লোক দিয়েও কাজ হাসিল করতে পারেন । যদি নিজেই এসে ধরা দেয় তাহলে প্রশংসা করতে হবেেউৎসাহ দিতে ভুলবেন না কিন্তু । নাটকে নিজে অভিনয় না করেও স্বার্থ আদায় করতে পারে ৬ নম্বর কূটনামীর অনুযায়ী। খেয়াল রাখবেন কূটনামী-৩ ।
৮। আক্রমণাত্বক হয়ে জয় ছিনিয়ে আনুন ;কোনো সমঝোতা নয় ।
পরিপূর্ণ জয় পেতে আক্রমণাত্বক হবার বিকল্প নেই। সমঝোতায় কোনো পক্ষের জয় না ,বড় জোর আপোষ হয় । শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকতে হবে ,প্রমাণ এবং প্রতিপক্ষ কে বিশ্বাস করাতে হবে আপনি শক্তিশালী । নিঃশর্ত জয়ই সেখানে আপনার মূখ্য উদ্দেশ্য হবে ।
৯। আপনার উপর নির্ভরশীল হতে শেখান ।
আপনার আশেপাশের মানুষজন যত বেশি নির্ভরশীল হবে তত বেশি আপনি ক্ষমতালাভের দিকে এগিয়ে যাবেন
। তাদের নির্ভ রশীলতা মানেই হচ্ছে আপনার বশ্যতা । মানসিক,আর্থিক সহ সব ভাবেই পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন । বিশেষ করে যাকে আপনার দরকার । সেখানে অর্থ,মেধা,সময় বিনিয়োগ করলে বৃথা যাবে না আশা করি ।
ভালো হয় তাদের সুখ,উন্নতি,অশান্তি দূরীকরণে আপনার উপর যদি নির্ভরশীল হয় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে।
যদি সেই সুযোগ আসে কাজে লাগাতে হবে । নয়তো অপেক্ষা করতে হবে। নিজে সুযোগ করেও নিতে পারেন ।
১০।বন্ধুর মত থাকুন/রাখুন-গুপ্তচরের মত কাজ করুন/করান ।
ইয়েস স্বার্থ ! স্বার্থের প্রয়োজনে তাও করতে হবে । বন্ধুই একমাত্র সম্পর্ক ,যার মাধ্যমে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ,অতিমূল্যবান তথ্য পেতে পারেন। কৌশলটি স্পর্শকাতর । কাজ শেষ হয়ে গেলে সরে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ ।
উপরোক্ত কূটনামী শেয়ার করার ইচ্ছা ছিল না । কিছু কৌশল আমি নিজে অবলম্বন করেছি ,ফলাফল লেটার মার্ক । তবে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করি নি । আপনার প্রতি অনুরোধ ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটির প্রভাব আছে । তাই বিরত ছিলাম । আশা করছি ইতিবাচক কাজে ব্যবহার হবে ।
তথ্য সূত্র-ছবি গুগল ( প্রতিকী ছবি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে )
The 48 Laws Of Power বইয়ের আলোকে লেখা ,এটা অনুবাদ নয় ,দেওয়া তথ্যের আশ্রয়ে লেখা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৯