অনলাইন মাধ্যমে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে যেসব লেখা বাংলা ভাষায় পেয়েছি ,তা আমাকে তৃপ্ত করতে পারেনি । হয়তো আমার মতো অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটতে এমন অনুভব । তাই একটু অতি গুরুত্বর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার সাহস দেখাতে যাচ্ছি ।
বিপ্লব বা Revolution কি ?
Revolution ইংরেজী শব্দ । লাতিন ভাষা থেকে এসেছে । বিপ্লব হচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষমতা বা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে একটি মৌলিক সামাজিক পরিবর্তন যা তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত সময়ে ঘটে যখন জনগণ চলমান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে জেগে উঠে ।
ক্রেন ব্রিনটনের মতে-
প্রতিষ্ঠিত সরকারকে বিধি বহির্ভূতভাবে সশস্ত্র উপায়ে পরিবর্তন করাই হলো বিপ্লব।
আর কার্ল কার্ল মার্কস মনে করেন সামাজিক সম্পর্কসমূহের গুণগত পরিবর্তনই বিপ্লব ।
কালজয়ী দার্শনিক এরিস্টটল দুই ধরনের রাজনৈতিক বিপ্লবের কথা বলেছেন ।
১। এক সংবিধান থেকে অন্য সংবিধানে পূর্ণাঙ্গ পরিবর্তন
২।একটি বিরাজমান সংবিধানের সংস্কার
নানা দেশে নানান বিপ্লবের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।
বিপ্লব শব্দটির সাথে আমরা কম বেশি পরিচিত । যে বিপ্লব পাল্টে দেয় সমাজ,রাষ্ট্রনীতির গতি পথ । কিংবা কেড়ে নেয় হাজারো প্রাণ । তেমনি পূর্ব দিগন্তের স্বপ্নের সূর্যের মতোই নিয়ে আসে পরিবর্তনের বার্তা । মানব সভ্যতা আজ পর্যন্ত হাজরো বিপ্লব হয়েছে । ছোট বড় মিলিয়ে । এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ বিপ্লব ব্যর্থ হয়েছে । যে বিপ্লব সফল হয় ,সেই বিপ্লব নিয়েই আমাদের মাতামাতি । এটাই স্বাভাবিক মানুষের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের কারণে । বিশ্ব প্রথম বিপ্লব দেখেছিল মিশরে প্রায় ৩ হাজার বছর আগে । মনে করতে পারি আধুনিক কালের হোয়াইট White Lotus Rebellion ( ১৭৯৬-১৮০৪ খ্রি.) Irish Rebellion ( ১৭৯৮) , Rum Rebellion (১৮০৮ –অস্ট্রেলিয়া), French Revolution ( ১৭৮৯-১৭৯৯-ফ্রান্স), Miao Rebellion-(১৮৫৪-চীন), Russian Revolution-১৯০৫,রাশিয়া, বলে রাখা ভালো ,এই বিপ্লবের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার করার পথ সুগম হয়েছিল, Mexican Revolution-(১৯১০),October Revolution -(১৯১৭-রাশিয়াতে অক্টোবর বিপ্লবের মাধ্যমে বিশ্ব প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে পরিচিত হয় ),Wahhabi Rebellion -(১৯২৭-আরব),এবং ১৯৯০ সালে শুরু হওয়া Digital Revolution । যা এখন পর্যন্ত চলমান । পুরোদমে এখনও শুরু হয়নি ।বলা হয় খেলার পূর্বে ওয়ার্ম আপ করার মতো অবস্থা । Digital Revolution কে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবও বলা হয়। ৪র্থ শিল্প বিপ্লব নামেই অধিক পরিচিত। প্রথম শিল্প হয়েছিল স্ট্রিম ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে । । দ্বিতীয়টির কারণ বিদ্যুৎ শক্তি।তৃতীয়টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণেই। বর্তমানে আমরা অবস্থান করছি ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে । যেখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে ডিজিটাল,পিজিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল সিস্টেম ।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রারম্ভিক ধারণা
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জনক বলা হয় ক্লাউস সোয়াব (Klaus Schwab) কে । তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের চেয়্যারম্যান । তার লেখা দ্যা ফোর্থ ইনডাস্ট্রিয়াল রেভোলেশন নামক বইয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন । আগেকার বিপ্লবগুলোর মূলকেন্দ্র বিন্দু ছিল কৃষি,প্রাণী শক্তি,রাজনৈতিবক কারণ,ভূগোলিক পরিবর্তনসহ ইত্যাদি। কিন্তু ৪র্থ শিল্প বিপ্লব অনেকাংশেই ভিন্ন । ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের মূল নিয়ামক হিসাবে কাজ করছে প্রযুক্তি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার,দক্ষতা,চিন্তাশক্তি,কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা । একাধিক বিষয় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ্য ভাবে জড়িত আসছে শিল্প বিপ্লবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের নিউ ইকোনমিক ফাউন্ডেশনের ওয়ালিসের বক্তব্য শুনা যাক । পুরো রিপোর্টটিও দেখতে পারেন।
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যেসব স্কিল প্রয়োজন
মাত্র ৫ বছরের আগে ৩৫ শতাংশ চাকরি ছিল নির্দিষ্ট স্কিল নির্ভর । কিন্তু বর্তমানের চাকরির বাজারে স্কিল বা দক্ষতাছাড়া চাকুরি মেলা ভার।
ফিউচার জব রির্পোট অনুসারে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ১০ টি কর্ম দক্ষতা তুলে ধরছি ।
১। প্রভলেম সলভিং স্কিল
২। ক্রিটিক্যাল থিংকিং
৩।ক্রিয়েটিভিটি বা সৃজনশীলতা
৪। পিপল ম্যানেজমেন্ট বা এইচআরএম ( human resource management (HRM) )
৫।কোওরডিনেটিং ( প্লানিং,সাংগঠিক দক্ষতা,ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট,যোগাযোগ দক্ষতা ইত্যাদি )
৬।ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ( আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা )
৭। জাজমেন্ট ও ডিসিশন মেকিং ( বিচারিক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা) উল্লেখ্য এখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকেই বিবেচনা করি ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের দক্ষমা হিসাবে।
৮। সার্ভিস ওরিয়েন্টেশন ।
৯। বিতর্ক ও উপস্থাপন দক্ষতা।
১০। Cognitive Flexibility
চাইলে এই ভিডিওটি দেখলেও তথ্য পেয়ে যাবেন ।
এককেটি টপিকে বিস্তর লেখার মতো । তবে এসব স্কিলগুলোর মৌলিক স্কিল হিসাবে কাজ করবে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স । একবিংশ শতাব্দিতে চাকরির বাজারে আপনার এ্ই স্কিল লাগবেই । এ বিষয়ে আরও জানতে ক্লিক করুন ।। চাকরির বাজারে আসছে রোবট । পাল্লা দিতে এসব স্কিলের কোনো বিন্দুমাত্র বিকল্প নেই । কোনো পরিবর্তন আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে না । বরং পরিবর্তনের আভাসে আমাদেরকেই পরিবর্তন করে নিতে হবে।
অন্যতায় ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে টিকে থাকা শুধু কঠিনই না বরং অম্ভব ।
বিশ্বজুড়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব
প্রথমেই উল্লেখ করা ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জনকের মুখ থেকে এই বক্তব্য '' “The Fourth Industrial Revolution, finally, will change not only what we do but also who we are. It will affect our identity and all the issues associated with it: our sense of privacy, our notions of ownership, our consumption patterns, the time we devote to work and leisure, and how we develop our careers, cultivate our skills, meet people, and nurture relationships.” —Klaus Schwab, The Fourth Industrial Revolution ''
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ % জব রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেশিন লানিং অধীনে চলে যাবে । এটা শুরু হয়ে গিয়েছে একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন । শিল্প কারখানাগুলো তাদের শ্রমিকদের ছাঁটাই করছে । এসব সেক্টরে যোগ হচ্ছে মেশিন । যে কাজ একশ জন করতো সেখানে দেখা যাচ্ছে ৪/৫ জনেই সহজে করে ফেলছে । ধীরে ধীরে রোবট এই প্রতিযোগিতায় চলে আসবে । কিছু দিন আগে একটি চমকপ্রদ ভিডিও দেখলাম । চীন কৃত্রিম টিভি সংবাদ উপস্থাপক বানিয়েছে । বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য গবেষণা ও কাজ চলছে । এভাবে প্রত্যেক সেক্টরের কাজের জন্য ভাবছে নতুন মেশিন বা রোবট তৈরিতে । ২০২০ সালের মধ্যে শুধু মাত্র রোবোটিক্স সেক্টরে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের চাকরির বাজার সৃষ্টি হবে। মেডিক্যাল মেশিন লানিং সেক্টরেও রয়েছে ৩০ বিলিয়ন মূল্যের চাকরির বাজার । ২০২৫ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন সংযোগ তৈরির সম্ভাবনা অটোমেশনের কারণে চাকরির ঝুঁকি বাড়বে (যুক্তরাষ্ট্র: ৩৮% – ৪৭%, জার্মানি: ৩৫%, ব্রিটেন: ৩০%, জাপান: ২১%) ।
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ইতিবাচক প্রভাব
১।প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আসছে । যেগুলো আগে বাজারে এসেছে সেগুলোও উন্নত হচ্ছে ক্রমানয়ে । জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে । এগুলো
দিনকে দিন তথ্যের সহজলভ্যা বৃদ্ধি করাচ্ছে । শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন । যা শিল্প বিপ্লবের প্রভাব।
২।ধীরে ধীরে বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও দ্রুততর হচ্ছে।জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞান দানের সিস্টেমটাই পাল্টে দিচ্ছে । জ্ঞানের অর্জনের পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে । বিশ্বময় পরিবর্তন হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক । গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন উদ্ভাবন । পরিবর্তনের জন্য নতুন নতুন স্কিল সামনে নিয়ে আসছে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব। সে
গুলোর আলোকেই পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে । পুঁতিগত বিদ্যার চেয়ে বাস্তব জ্ঞান/দক্ষতার চাহিদা সব ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ।
৩। বিপ্লবের প্রভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যক জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি লক্ষ্যণীয় । ফেসবুক,টুইটার , ইউটিউব ,ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ( অনলাইন মাধ্যমে ) । ইমো,হোয়াটস এপ্স,ম্যাসেন্জার কল বিগত বছরগুলো থেকে আয় ও ব্যবহারকারীদের দিক থেকে এগিয়ে ।
৪। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখন দোকান বুকিং ,অগ্রিম টাকা প্রদান ,ভাড়া ইত্যাদি পুরাতন পদ্ধতি । বাজার ব্যবস্থা এখন অনলাইন মাধ্যমেই হয় । ইউরোপে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক মার্কেট ক্রেতা সংকটে ভুগছে( আগের তুলনায় )। এই পরিবর্তনের জোয়ার ইউরোপের গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের এখানেও পড়েছে । আজ থেকে দুই তিন বছর আগরে বাংলাদেশের কথা যদি বিবেচনায় নেওয়া যায় ,সেখানে হয়তো কিছু ই-কমার্স মাকের্ট এর নাম দেখতে পাব । কিন্তু এখন তা এমনই বেড়েছে যে খোলা চোখে লক্ষ্য করার মতো । তার জন্য গুগল না ঘাটলেও চলবে। বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে ই-কর্মাস মার্কেটগুলো বিজ্ঞাপন থেকে আয় করেছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা । ১৩৩৫৭১ টি অনলাইন ভিত্তিক ওয়েব সাইট থেকে । যা ২০২১ সালের মধ্যে পৌঁছাতে পারে ৭০ বিলিয়ন বা ৭ হাজার কোটি টাকায় ।
৫।চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব পড়েছে মেডিকেল সাইন্স সেক্টরে । নিরাপদ ,উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর একবিংশ শতাব্দির জনসাধারণ ।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ,প্রযুক্তির মাধ্যমে জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে । যা শিল্প বিপ্লবের প্রভাব ।
৬। কৃষিক্ষেত্রেও রয়েছে এর প্রভাব। গবেষকরা চেষ্টা চালাচ্ছেন বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অনেকটাই সফল। নতুন নতুন কৃষিজ বীজ উদ্ভাবন,প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ । Robotic sprayers মতো প্রযুক্তি এখন কৃষি ক্ষেত্রে নিয়মিতই ব্যবহার হচ্ছে। জিন প্রযুক্তি,থ্রিডি-পেইন্টিং,কোয়ান্টাম কোম্পিউটিং, ব্লগ চেইন এছাড়াও অলনাইন মাধ্যমে আউটর্সোসিংয়ের কাজগুলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কাজ।
এ রকম অনেক কিছুই বলে লেখা দীর্ঘ করা যাবে। আমি ,আপনি যেসব আধুনিক প্রযুক্তি গত সুবিধা ভোগ করছি সেসব অবশ্যই ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কল্যাণের জন্যই । এখন আলোকপাত করা কিছু নেতিবাচক দিক নিয়ে ।
মানুষের অলসতা বৃদ্ধি পেয়েছে । শারীরিক ও মানসিক শক্তি ভোঁতা করে দিচ্ছে । এখন তো আমরা সাধারণ যোগ বিয়োগ করতেই মোবাইলের ক্যালকুলেটার ব্যবহার করি । ভার্চুয়াল জগত গ্রাস করছে আমাদের। এসব ভার্চুয়াল জগতের এক্টিভিটি নেতিবাচক প্রভাব তো রাখছেই । এমন উদাহারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিছু অনুসরণ করলেই পাবেন। প্রযুক্তির কল্যাণে প্রায়শই প্রকাশ হচ্ছে আপত্তিকর তথ্য ,ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই প্রভাবই আছে । সাইবার ঝুঁকি ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের অংশ । আগামী দিনে আরও হুমকির মুখোমুখি হবে। এ সেক্টরে যেমন চাকরি তৈরি হবে তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিং বৃদ্ধি পাবে। বায়ো টেকনোলজি,প্রোগ্রামিং,কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা,রোবোটিক্স ধ্বংসাত্বক ও অনৈতিক কাজে ব্যবহার বাড়বে এবং হচ্ছেও তাই। জলবায়ু পরিবর্তন ,অভিবাসন সমস্যাকেও বলা হয় বিশ্বময় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব। এসব সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ
১।তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ
২।প্রযুক্তিগত সমস্যায় উৎপাদনে ব্যাঘাত
৩।ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা
৪।ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত সংযোগ নিশ্চিত
৫।অটোমেশনের কারণে বহু মানুষের কাজের সুযোগ হ্রাস
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা
১।অটোমেশনের প্রভাবে কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাস
২।উৎপাদন শিল্পে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি
৩।স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে বড় পরিবর্তন
৪।বিশেষায়িত পেশার চাহিদা বৃদ্ধি
৫।সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি বা করণীয় কি ?
বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে’ । ধন্যবাদ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে পাল্লা দিতে কিছু না হলেও কাজ করে যাচ্ছে । দেশের বেকারদের মধ্যে প্রায় সবাই অদক্ষ । শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক গলদ দূর করতে হবে। কখন একজন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমেল,ফেসবুক আইডি খুলতে পারে না ? ব্লগ কি বা কিভাবে লিখে সে সব কিছুই জানে না । আমরা পারদর্শী শুধু ফেসবুক ,ইউটিউব ব্যবহারে। কারিগরি শিক্ষায় জোর দিচ্ছে সরকার এটা সুখবর । তবে সাধারণ শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামক বিভাগ চালু করা যায় । নবম শ্রেণিতে তিনটি বিভাগের সাথে শিক্ষার্থীরা আইসিটি নামক বিভাগে পড়বে। এখানে প্রোগ্রামিংয়ের বেসিক ধারণা ও কারিগরি জ্ঞান লাভ করবে । বিশ্বমানের স্কিল অর্জনের উদ্দেশ্যে পাঠ কার্যক্রম চালু করার জোর দাবী আমার । এই সেক্টর বিজ্ঞান বিভাগ রিলেটড জব সেক্টর এর চেয়ে কোনো অংশেই কম নয় । বরং বেশি । ছেলে মেয়েরা এখনও স্বপ্ন দেখে সেনাবাহিনী,ডাক্টার,ইঞ্জিনিয়ার হতে । এগুলো কে খারাপ বলছি না । সবার স্বপ্ন কে শ্রদ্ধা জানাই । তবে তাদের জানিয়ে দিতে হবে আমাদের আসছে বিপ্লব সর্ম্পকে। তাঁদের স্বপ দেখাতে হবে আমাদের
প্রোগ্রামার .ডাটা সাইন্সটিক হতে । আমার মতে এত সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অনার্স করার চেয়ে বিষয় ভিত্তিক বিষয়ে পড়াশোনা বা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত খুব বড় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে । বাংলাদেশের অধিকাংশ জনের পড়াশোনার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভালো একটা চাকরি । দীর্ঘ ৪/৫ বছর অর্নাস করার চেয়ে আইসিটি নির্ভর কাজ শিখলে চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে অসুবিধা হবে না । স্কিল থাকলে তখন হবে বিশ্ব শ্রমিক। অর্থ ও সময় ব্যয় করেও ঘুরতে হয় চাকরির জন্য । সহনীয় মাত্রার ঘোষ আদান -প্রদান তো আছেই । তরুণরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ অনেকটা সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসাবে ধরে নেয় । যেখানে স্কিল অর্জনটা মুখ্য ভূমিকা পালন করে না । আমরা যে বদলে যাওয়া আধিপত্য বিস্তারকারী চীন,জাপান কে দেখতে পাচ্ছি সে সব অর্জিত হয়েছে তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের জন্যই । সরকারের আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত । উঠতি তরুণদের আকর্ষন করাতে হবে স্কিল অর্জনে । অন্যতায় ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিবে। বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে গবেষনা ও প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোগ নিতে হবে। আইসিটি বিষয় টি মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ানো হয় ,অথচ শিক্ষার্থীরা বাস্তব জ্ঞান পাচ্ছে না বলেই জেনেছি সরেজমিনে। শিক্ষকরা আগ্রহী না তাদের বাস্তব জ্ঞান দিতে । রয়েছে দক্ষ শিক্ষকের অভাব ।শিক্ষা ব্যবস্থা অচিরেই ঢেলে সাজানো এখন সময়ের সেরাদের সেরা দাবী । বুঝতে পারছি না ,এখন সরকার সে রকম শিক্ষানীতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে । আামাদের বেশ কিছু স্কুলে কম্পিউটার রুম রয়েছে কিন্তু সেগুলোর ব্যবহার নেই । তদারকিও নেই । আইসিটি বিষয়ে ব্যবহারিক অংশ চিত্র আঁকা আঁকি করার মানে খোঁজে পাই না । এখানে যদি ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা যাচাই করে নম্বর প্রণয়ন করলে সুফল ভালো হবে ।
টাইপ জনিত বানান ভুল থাকতে পারে । সেগুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি । সময় করে এডিটিংয়ে বসবো একটি শক্তিশালী টপিক ছিল লেখার জন্য । মন মতো লিখতে পারি নি বলে দুঃখ প্রকাশ করছি । খুশি হতাম যদি আহমেদ জি এস ,আখেনাটেন,জোবাইর ভাইয়ার মতো শক্তিমান ব্লগাররা এই টপিকে লিখতো
তথ্যসূত্র-forbes.com,fortuneindia.com,careerki.com.linkedin.com and The fourth industrial revolution by Klaus Schwab.weforum.com
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৪