আজকের এই লেখায় জানতে পারবেন রাজধানী কেমন ভয়াবহতা নিয়ে নিত্য বসবাস করছি । আসন্ন দুর্যোগের ভয়াবহতা ,নিয়েই আজকের লেখা । ভৌগলিক অবস্থান গত কারণে ঢাকা শহর তেমন ভয়াবহ দুর্যোগের হুমকিতে না থাকলেও আছে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়ার ব্যাপক সম্ভবনা ।ইতিমধ্যে নিশ্চয় ধরে ফেলছেন কোন দুর্যোগের কথা বলতে চাচ্ছি । হুম সেটি ভূমিকম্প ।
বিশ্বে ঢাকা দ্বিতীয় বসবাসের অযোগ্য শহর । ঢাকা বিশ্বের উনিশ তম মেগা সিটি । যেখানে বাস করে 14.5 মিলিয়ন মানুষ । বিশ্বে ৫ম ঘনবসতিপূর্ণ শহর । আয়তনের তুলনায় হিসেব করলে বাংলাদেশের ঢাকা প্রথমই হবে । সপ্তদশ শতাব্দী পর থেকে এখন পর্যন্ত টাকা বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার অতি গুরুত্বপূর্ণ শহর । প্রতিবর্গ কি.মি জায়গায় বাস করে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ ( তথ্য-বাংলাট্রিবিউন) । ব্যবসা ,বাণিজ্য,সংস্কৃতি কিংবা অর্থনীতি প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ঢাকা মূল কেন্দ্রস্থল হিসাবে কাজ করে ।সরকারী-বেসরকারী ,দেশীয়-বিদেশী,সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ প্রায় সব কিছুই ঢাকার অহংকার । ঢাকার বিকল্প নগরী নেই । ঢাকার উপর চাপ কমাতে বা বিকল্প নগরী গড়ে তুলতে নেই কোনো পরিকল্পনাও । যদিও পূর্বাচল নগরী গড়ে তুলা হচ্ছে । অধিকাংশ বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করেই । মানা হচ্ছে না রাউজক কিংবা বাংলাদেশের বিল্ডিং নিমার্ণ আইন । অতি ভূমিকেম্পর ঝুঁকি হিসাবে রাউজক ৩৫০ ভবন চিহ্নিত করেছিল । সেগুলো এখন আগের মতই রয়েছে । ঢাকার উপর কেমন মানুষ নির্ভরশীল যা ঈদের ছুটিতে মানুষের গ্রামমুখী হওয়ার দৃশ্যগুলো লক্ষ্য করলেই যথেষ্ট । বাংলাদেশের গ্রাম আর ঢাকা নগরী এক সুতায় গাঁথা । ঢাকার সর্দি-জ্বর গ্রামর উপর প্রভাব ফেলবেই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে । ঢাকার দুর্দিন আসলে গ্রামও রক্ষা পাবে না । হারাবে তার উন্নয়নের গতি । দুর্যোগের সময় উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য নেই উন্নত প্রযুক্তি ও দক্ষতাও । এসব বিপর্যয়ে কুলাবে না সরকারী বাহিনী । যেমন রানা-প্লাজাতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় হিমশীম খেতে হয়েছে । আর ঢাকার সামনে যে ভূমিকম্প অপেক্ষা করছে তা তো রীতিমত পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোথাও হয় নি । কিছু তথ্য জানা যাক পৃথিবীর ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ভয়াবহ ভূমিকম্পের কথা।
১.বক্সিং ডে ভূমিকম্প/সুনামি
এই মহা প্রাকৃতিক বিপর্যয় কে সুনামি হিসাবে বিবেচনা করলেও ,এর মূল কারণ ছিল সুমাত্রায় সৃষ্ট ভূমিকম্প । ২০০৪ সালে হয় বক্সিং ডে ভূমিকম্পটি । রিকটার স্কেলে ভয়াবহতা ৯.১-৯-২ ছিল । যা কিনা ৫৫০ মিলিয়ন বার হিরোশিমায় পতিত পারমানবিক বোমা বিষ্পোরিত হওয়ার সমান । ভাবা যায় ? আমার কল্পনায় ধরে না ক্ষতির পরিমাণ কেমন হতে পারে । Boxing Day Tsunami ১৪ টি দেশজুড়ে বিরাজ মান ছিল । প্রায় হারিয়েছে ২ লাখ ৩০ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ (প্রায়) । ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ভূমিকম্প হয় চিলিতে (৯.৫) ১৯৬০ সালে । বক্সিং ডে’র ভূমিকম্প/টিসুমামি চেয়ে একটু বেশি । তবে ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে এটিই এখন পর্যন্ত প্রথম । ভাগ্যক্রমে প্রতিবেশি রাষ্টসমূহ ব্যাপক ক্ষতি হলেও ,আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম দুর্যোগ থেকে । যতদূর জানতে পারলাম দু জন নিহত হয়েছিল বাংলাদেশে তখন।
মার্চ ১১,২০১১- March 11, 2011 – Japan
ভয়াবহতা ছিল ৯ । ১৫৮৯৭ হাজার মানুষ প্রাণ দেয় । দেড় লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছিল । জাপানের ৩০৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার । দেখুন ভিডিওতে । মাত্রা ছিল ৯ ।
উপরে দুটি ভূমিকম্পের উদাহারণ টানলাম । যা মানব ইতিহাসে ভয়াবহ তম ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে দুটি। কেন এসব টেনে আনলাম । বাংলাদেশের সামনে এমন ভূমিকম্প হবার জোর সম্ভবনা আছে । ইদানীং বাংলাদেশে ছোট ছোট ভূমিকম্প গুলো কি এসবের ইঙ্গিত দিচ্ছে । ছোট ছোট কাঁপুনিই বড় ভূমিকম্প হবার লক্ষণ বলে ধারণা করেন গবেষকরা । বক্সি ডে ভূমিকম্প ও জাপানের ভূমিকম্পে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল ,তার থেকে কতগুন বেশি ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানী হতে পারে ধারণা করতে পারেন ? ঢাকার আশে পাশের জেলাগুলো ভূমিকম্প ঝুঁকি রয়েছে (ঢাকা,সিলেট চট্রগ্রাম)। এসবে যদি সাত মাত্রার ভূমিকম্পও যদি হয় তাহলেই বিশাল বিপর্যয় হবে । বাদই দিলাম ৮,৯ মাত্রার ভূমিকম্প । তখন ঢাকার তিন লক্ষ্য ভবনের মধ্যে ৭০ হাজার ভবন ধসে যাবে । অনেক টা নিচের ছবির মতো হতে পারে ঢাকার ভয়াবহতা । হাইতি ভূমিকম্পও ইতিহাসের অন্যতম ভূমিকম্প ।
বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের অধিকাংশ অংশ তলিয়ে যেতেও পারে । ঢাকার মাটির গঠন ও ভূমিকম্পের তথ্য-পরিসংখ্যান এগুলোই বলছে । ইন্দোনেশিয়ার পালু হচ্ছে এর বড় উদাহারণ ।
এর আরেকটি নাম রয়েছে । লিকুইফেকশন । লিকুইফেকশন এর বাংলা অর্থ মাটির তরলীকরণ । ভিডিওতে দেখুন কিভাবে ভবন ধসে যেতে পারে ।
"যখন ভূমিকম্প আঘাত হানলো, মাটি যেন ঝুরঝুরে হয়ে গেল, কাদায় পরিণত হলো। এই বিপুল কাদায় পিটোবোর হাউজিং কমপ্লেক্স যেন ডুবে গেল। আমরা অনুমান করি সেখানে কাদায় ডেবে আছে ৭৪৪ টি বাড়িঘর।"---ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
এই লিকুইফেকশন বাংলাদেশেও হয়েছিল রাঙামাটিতে ,২০০৩ সালে ।যেখানে দেখি নদীর পাড় তলিয়ে যেতে ।
হ্যাঁ,আরও আছে মৃত্যু ফাঁদ । ঢাকায় ভূমিকম্প হলে আগুন ও ,বিদ্যুৎতের স্পৃষ্ট হয়েও মরবে । ১৭৫৫ সালের লিসবনের ভূমিকম্পের কথা স্বরণ করতে পারি । তখন লিসবন (পর্তুগালের রাজধানী )ছিল জ্ঞান,স্থাপত্য,শিল্পে -সৌন্দর্যে পৃথিবীর সেরাদের সেরা । বলতে পারেন পরাশক্তি শহর । কিন্তু ভূমিকম্প নামক প্রাকৃতিক অভিশাপ লিসবনের ৩/৪ ভাগ বাড়ি ঘড় পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় নিয়ে ভূমিকম্প একমাত্র এটিই । ৬ মিনিট স্থায়ী ছিল । একবার ভাবুন ঢাকার অবস্থা কি হতে পারে ? যেখানে এত মানুষের বসবাস। মুক্ত বাতাসের নিশ্বাস নেওয়ার মতোই জায়গা নেই । কি অবস্থা হবে ? মনে করুন ,এখন ভূমিকম্প শুরু হয়ে গিয়েছে ,হালকা কাঁপুনি হচ্ছে । আপনি নিশ্চয় একটি নিরাপদ আশ্রয় খোঁজবেন ।যেখানে মাথার উপর কিছু যেন না পড়ে । এমন স্থান পাবেন কি ? দৌড়ে বের হবার সময় দেখা যাবে হয়তো কেউ আগুনে পুড়ছে ,বা আপনি নিজেও । অপস্ ,শিহরিত হচ্ছি আমি । অর্ধেকের বেশি মানুষ এভাবেই প্রাণ হারাতে পারে। আরাকান অংশে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে । মধুপুরেও ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হবার সম্ভবনা আছে । তবে ঢাকায় এটার মাত্রা হবে ৯ । ঢাকার ৩৫ ভাগ শক্ত মাটিতে নির্মাণ ভবনগুলো অপেক্ষাকৃত টেকসই ভূমিকা রাখবে ভূমিকম্পের সময় । তবে বাকী ৬৫ ভাগ নরম মাটিতে নির্মিত ভবন ব্যাপক ব্যাপক ব্যাপক ঝুঁকিতে । সুতারাং নরম মাটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে । উদ্ধার অভিযানের জন্য দরকার আমাদের প্রযুক্তির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক । ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য দরকার অনন্ত ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ,সেটার অগ্রগতিও নেই ,মাত্র ৩ হাজারের মতো এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিয়েছে ।
স্বেচ্ছাসেবক তখন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ । আদৌ কি থাকবে সরকারী উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান গুলো ? ক্ষতির মুখোমুখি হতেই পারে । উদ্ধার অভিযান যত দ্রুত সম্ভব পরিচালনা করা ততই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমবে । দরকার ব্যাপক প্রশিক্ষণ । দেখছি না ,প্রত্যাশা মত কোনো উদ্যোগ।
বাংলাদেশে ভূমিকম্প প্রবন এলাকা
ভূমিকম্পের ধরন :
১। ৫.৯৯ -মাঝারি
২। ৬.৯৯-তীব্র
৩। ৭.৯৯ -ভয়াবহ
৪।৭.৯৯ + -অতি ভয়াবহ
পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ সাত টেকটনিক প্লেট দিয়ে গঠিত । মাঝে মাঝে প্লেটগুলো নড়ে চলে উঠলেই কেঁপে উঠে পৃথিবী । সংশ্লিষ্ট অঞ্চল হয় ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল । বাংলাদেশে মানিকগঞ্জে (১৮৮৫),চট্রগ্রামে ১৭৬২ সালের ৭ মাত্রার উপরের ভূমিকম্পই বলে দেয় দেশের ভেতরেও শক্তিশালী ভূমিকম্প হতেই পারে ,যদিও গবেষকরা সম্ভবনা কম দেখছেন । সব কিছু তো পরিসংখ্যান,গবেষনা দিয়েও তো হয় না । এসবকে প্রকৃতি তো বৃদ্ধাঙ্গলিও দেখাতে পারে ।
বাংলাদেশে তিনটি ভূমিকম্প বলয় -
প্রথম বলয় (প্রলয়ংকারী ভূমিকম্প): বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর এই বলয়ে অবস্থিত এবং এই বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ ধরা হয়েছে৷ এই অঞ্চলগুলো অতি ভয়াবহ রকম ঝুঁকিতে আছে । ময়মনসিংহের উপজেলা হালুয়াঘাটে রয়েছে ভূ-চ্যুতি । যে কোনো সময়ই সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে ।
* দ্বিতীয় বলয় (বিপদজনক ভূমিকম্প): ঢাকা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও রাঙ্গামাটি এতে অবস্থিত এবং এখানে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ ধরা হয়েছে৷ তবে ৬ কে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই । ঢাকাতে ক্ষতির পরিমাণ কল্পনাতীত হবে ।
* তৃতীয় বলয় (লঘু অঞ্চল) : উপরোক্ত এলাকাগুলো ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকাগুলো যা মোটামুটি নিরাপদ সেগুলো এবলয়ে অবস্থিত৷ এসব অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ এর নিচে ধরা হয়েছে৷
গবেষনা বলছে বাংলােদেশর ভেতরে উৎপন্ন ভূমিকম্পগুলোর চেয়ে নেপাল,মিয়ানমার এবং ভারত অঞ্চলেরর ভূমিকম্পগুলো বাংলাদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্বে দুটি ভূ-চ্যুতি আছে । সিলেট,সৈয়দপুর ,মধুপরে ভূমিকম্প হবার মত চ্যুতি আছে । কেঁপে উঠলে ৬ মাত্রার ভুমিকম্প হবে বলে ধারণা করছে। বড় মাথা ব্যথ্যা হলো দেশের বাইরে সৃষ্ট ভূমিকম্প ।
দোয়া রাখবেন ঢাকা যেন কোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের মুখোমুখি না হয় । এটা হলেই মৃত্যপুরীতে পরিণত হতে পারে ঢাকা ।
যেসব স্থানে চ্যুতি আছে সে সব স্থানে প্রতি ১০০ বছর অন্তর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়ে আসছে । নেপালে অবস্থিত ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের মাঝামাঝি । এছাড়াও হিমালয়ের পাদদেশে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়ে থাকে । সাথে মিয়ানমারের আরাকান । এই তিনটি স্থানের যদি ৮-৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে ব্যাপকভাবে অনুভূত হবে বাংলাদেশেও । তখন বাংলাদেশে এর মাত্রা হতে পারে ৭ মাত্র বা তারও বেশি । উপমহাদেশে সবেচেয় বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় ১৯১৮ সালে । উৎপত্তি ছিল নেপালেই । যেহেতু প্রতি একশ বছর পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় ,এখন থেকে যে কোনো সময়ই বড় ধরনের ভূমি কম্প হতেই পারে । আমরা ঠিক ১০০ বছর পার করলাম । এখন তো ২০১৯ চলছেই । প্রস্তুত থাকুন ।
ভূমিকম্প মোকাবেলায় কি করতে আমরা ?
একটা উদাহারণ দেই , ২০১০ সালের হাইতির ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ । প্রাণা হারিয়েছিল ৩ লক্ষাধিক মানুষ । এই বছরই চিলিতে আঘাত হানা ভূমিকম্প কেড়ে নেয় ৫৬২ জন । যা হাইতির চেয়ে শক্তিশালী ছিল । এমন কম ক্ষয়ক্ষতি হবার মূল কারণ হলো হাইতিতে বিল্ডিং কোড আইন মেনে ভবন তৈরি হয় নি । আমাদের ঢাকার মতো । অপর দিকে চিলিতে কম হবার কারণ ,সেখানে বিল্ডিং কোড মেনেই অধিকাংশ ভবন নির্মাণ হয় । রাউজকের দায়িত্ব সঠিক পালন করতেই হবে । ব্যক্তিগত ভবন নির্মাণের সময় নিজ থেকেই সচেতন হতে হবে ,অপর কে সচেতন করতে হবে ।
ভূমিকম্প প্রতিরোধে ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে নিচের লিংক অনুসরণ করুন ।
ভূমিকম্পের আগে ও পরে যা করবেন এবং করবেন না ।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
ভূমিকম্পের কি পূর্ব কোনো সর্তক সংকেত দেওয়া যায় না ? আজকাল আগাম তো অনেক কিছুই জানিয়ে দিতে পারে বিজ্ঞান । এসব প্রশ্ন আপনার থাকতেই পারে । তবে বিজ্ঞান ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ দুর্যোগের পূর্বাভাস দিতে খুব একটা এগিয়ে যায় নি । তবে মানুষেরা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ক্লান্ত পরিশ্রম । যেমন জাপান ,চীনকেই ধরা যায় । ইতিহাসের আলোকে চীন,জাপান কে ভূমিকম্পের/ সুনামির দেশ বললে মোটেও ভুল হবে না । তার আগে আসুন গ্রিক মিথলজি থেকে ঘুরে আসি । ৩১৭ খ্রি.পূ সময় । গ্রিসের হেলিস শহর পশু-পাখির অদ্ভুদ আচরণ আরম্ভ হয়েছিল । এসব প্রাণিকুল/পক্ষীকুলের অস্বাভাবিক আচরণে বিস্মিত হয়েছিল সবাই । চোখে মুখে ভয়ের সঞ্চার চোখে পড়ার মতো ছিল । ,হাঁস,মুরগি পাখি ডিম দেওয়া বন্ধ করে দেয় ,মৌমাছিরা অন্যত্র চলে যাচ্ছিলো । কুকুর ভয়ার্ত চোখে নিস্তব্দ হয়ে থাকতো বা চিৎকার করতো । যে কেউ দেখে বললে এসব আচরণ স্বাভাবিক না । এমন আচরণ শুরু হবার কয়েকদিন পরই সেখানে ভূমিকম্প আঘাত হানে ।
এ তো গেলো অনেক আগের কথা । আধুনিক কালের কথা বলি । ১৯৭৫ সালের আগে থেকে চীন কুকুরের উপর গবেষনা চালায় । লক্ষ্য ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া । ১৯৭৫ সালে ভূমিকম্পের আগে ,তারা বুঝতে সক্ষম হয় নিকট ভবিষ্যৎতে ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে । তাই চীনের শহর হেইচেং থেকে বিপুল সংখ্যক লোক সরিয়ে ফেলে । শহরটিতে ১ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস করতো । সে সময়
খুব অল্প সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারায় । যেখানে মারা যেতে পারতো ১৫০০০০ জন । খুব কম লোক প্রাণ হারিয়েছিল । ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.৫ । এই ঘটনা গবেষকদের আশার সঞ্চার করে । তবে এটি সব সময় কার্যকর ফলাফলও দেয় না । মাঝে মাঝে অনুমান মিলে যায় । অবশ্য চীন বেশ কয়েকবার সফল হয়ে ক্ষতি পরিমাণ কমাতে সক্ষম হয়েছে । এখন পর্যন্ত প্রাণীদের আচরণের উপর গবেষনা চলমান । জাপনাও এই কৌশলে সফল অনেকটা । পুরোপুরি না ।
এ বিষয়ে আরেকটু লেখার ইচ্ছা ছিল । আজ এই পর্যন্তই । ও আরও দুটি বিষয়ের তথ্য মনে পড়লো । রাশিয়াতে একবার ৯ মাত্রায় ভূ-কম্পন হয় । অলৌকিভাবে সেখানে একজনও মারা যায় নি । এটিও পৃথিবীর সেরা ৫ টি ভূ-কম্পনের একটি । কারণ হিসাবে বলা যায় ,রাশিয়া তো খুব বড় দেশ । এমন দুর্গম অঞ্চলে হয়েছে ,জন বসতি ক্ষয়ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছে । এটা আমার ধারণা ।
পৃথিবীতে বছরে ৫০০০০০০ বার ভূমিকম্প হয় । ১০০০০০০ টি ভূমিকম্প আমরা অনুভূব করতে পারি । আর ১০০ ভূমিকম্প ক্ষতির কারণ হতে পারে ।
বাংলাদেশের বিল্ডিং নির্মাণ কোড-২০১২ ডাউনলোড করুন ।
ক্লিক করুন
আরেকটি কথা । যারা ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করতে আগ্রহী । তারা করতে পারেন । আগামী বিশ্বে ঘন ঘন ভূমিকম্প হবার সম্ভবনা অনেক । যদি এমন কোনো পদ্ধতি আবিষ্কার করা যায় যা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে পারবে ,তাহলো হৈ চৈ ফেলে দিবেন বিশ্বে । এক বিংশ শতাব্দীতে এই ক্ষেত্রে বিশাল চাকরির বাজার হবে । সারা বিশ্বেই থাকবে চাহিদা ।
তথ্যসূত্র:
বিবিসি বাংলা,প্রথমআলো,ইত্তেফাক,সচলাতয়ন.বিডিটািইম,nationalgeographic,economist.com,time.com,বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ডিডব্লিও.কম
আজকের এই পোস্টটি উৎসর্গ করলাম আমার প্রিয় কবি কে । যার কবিতার অপেক্ষা করি । মাটি ও প্রকৃতির ঘ্রান পাই । প্রকৃতির রোমান্টিকতায় মুগ্ধ না হয়ে পারি না । উনার নাম অনেক ভারী । অনেকেই ধরে ফেলছেন হয়তো কে সেই কবি । হুম সেটি আর কেউ নয় আমাদের ,আমার প্রিয় কবি মনিরা সুলতানা আপু কে ।
তোমার মতো পোলাও খাইতে পারলে ঠিকই কবিতা দিয়ে উৎসর্গটা করতে পারতাম ।
সেই কপাল কি আছে ? সব সময়,সব সময়ের জন্য দোয়া,শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো তোমর প্রতি । ভালো থেকো ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৮