অনেক দিনপর । একদিন সানাই বেজে ওঠে;
জন অরণ্যে বাড়িটা উৎসবমুখর হলো।
হাজারো মানুষ করলো ভুরি ভোজ;
সে দিন আমি কিন্তু ছিলেম উপোস।
আমার মনোহরা ধন,
হিংস্র ছোবলে কেড়ে নিল অজানা একজন,
সেই থেকে তিরিক্ষি এ মন ;
উড়ুক্কু দেহের সাঙ্গ হলো সকল চিন্তন।।
যে পথে গেলি চলে,সেই পথেই গেলাম ছুটে,
হুস হারালাম পথিমধ্যে।
আচ্ছা বোনু !সেই নাগর দোলায় ।
আমার ভয়ার্ত দেহটাকে আবার আষ্টেপৃষ্ঠে ধরবি ?
মেলায় হারিয়ে যাবার ভয়ে মুষ্টিবন্ধ করবি হাতটি?
আবার কি সর্ব যুক্তি ছাড়িয়ে আমার পক্ষে সাফাই গাইবি ?
আমি চাই। আমার ঘুমকাতুরে চোখে জল ঢেলে দে
কাকডাকা ভোরে আমার ঘুম ভাঙ্গুক সা-রে- গা-মা-পা-মা-গা-রে সুরে
বৃষ্টিস্নাত দিনে ছন্দে নৃত্যে সুর উঠুক আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে
বেলকুনি ,ছাদ কিংবা গ্রাম্য সবুজের নীড়ে
হোক বৃষ্টি উৎসব ।
আবার তুই বল ,একদম চুপ !আমি থাকতে তোর কোনো পছন্দ নেই ,
কোথাই তুই ? এখনও কি আমার আমি এক পলকেই বুঝে নিতে পারবি ?
সূর্যলোকের তান্ডবে তৃষ্ণার্ত মাঠ থাকে হা করে,
পাষাণ সূর্যও এক সময় বারি বর্ষণে দেয় ভরে ।
আমার তৃষ্ণা ? হাহাহা থাকুক সেটা মৃত্যু অবধি,
তুমি শরৎতের সেই কাসফুলের হেলে-দুলে নাচন,,শিউলির আনন্দ চিত্তে মাটিতে নেমে আসা।
বাশবনের আড়ালে রক্তাভ সূর্যটা দেখেছো?
কিন্তু অপরুপ শরৎতের বিদায়ের সুর শুনেছো ?
মনে পড়ে আমার যত কাণ্ডজ্ঞানহীন বকবকানি?
সর্বচেষ্টার পরে ,না পারিলে দিতাম দৌড়ানি।
সব খেলায় আমিই যেতাম হেরে,
মিথ্যে অজুহাতে খেলা দিতাম ভেঙ্গে।
আসতি তেড়ে দিতাম দৌড় বিদ্যুৎ বেগে,
নাগাল পেলে ভদ্র বেশে বলতাম কানে ধরে।
এইবারই তো শেষ ম,আর করবো না, আর করবো না ,
না পারার গ্লানিতে এটাই করতাম আগের কথার হতো না কোনো মানা ।
চৈতালি গরমে ভর্তা করতি এক নাক গেমে,
দু’হাত ভরে ঠিকই নিতাম আমার ভাগটা বুঝে ।
বলতি তুই-বেশি খাবি না ,অনেক ঝাআআল,
চেটেপুটে খেয়ে চোখে-নাকে কান্নায় ভাসতাম একগাল।
কিতকিত,কানামাছি কিংবা বর্ষায় ভেলা ভেলা খেলায়;
গলার কাঁটা হতাম দারুণসব কায়দায় ।
সন্তানসম অাদরে রাখতি তোর বাগানকে,
তোর বাগানের প্রথম ফুলটা আমিই নিতাম,
জানতিস কি কোনো ভাবে !
ফূল চুরির কান্নাভেজা কণ্ঠে,
ঠিক দিতি আমার কানটি মলে ।
রাগ অভিমানে বন্ধ হত আমার সকল কথা ।
তোর মিষ্ট ভাষার তোষামোদে,
সব কিছু যেত ভেসে।
সব ভুলে হাস্যউজ্জল মুখটি লুকাতাম তোর বুকে,
আদরে শ্রুতিমধুর গল্পে সব ক’টা ভাত দিতি খাইয়ে ।
বোকাসোকা আমি তখন কি জানিতাম এই ছিল তোর মনে ,
ছুটির শেষে বইপত্র খেলার মাঠে রেখে।
খেলতাম দিনমান
তোর সন্ধানী চোখ খুঁজে নিত
কখনও বা আসতি নিয়ে টেনেটুনে,
তখনই হতো বিদ্রোহী সব অভিমান,
একদিন;জয়প্রায় খেলায় আসতো হলো আমায়
রাগে দিলাম ঘুষি নাকে,
বাসায় গিয়ে বাপজান কে বলিলে,
কেটেছি নাক দৌড়ে ধরতে গিয়ে;
জানিস সে দিন বুঝিনি; কেমন ছিলি আমার আহ্লাদিনী ।
আমার সব মাফ হয়ে যেত একটি তেলাপোকার ভয়ে,
মেলার সাধের জিনিস কিনবো বলে।
সবটা নিয়েছিলাম বুঝে একটি তেলাপোকা হামলায় ,
খেলার মাঠে তেড়ে গেলি ,হাতে কঞ্চি নিয়ে,
ব্যাগে রাখা তেলাপোকা দিলাম দেখিয়ে;
তেড়ে আসলি ফিরেও গেলি রাগে ।
১৩,আশ্বিন,১৪২৫,বঙ্গাব্দ ।
কিছু কথা -বোনু একটি আদুরে ডাক বোনদের জন্য ,বেশ কিছু অঞ্চলে প্রচলিত এই ডাক । কঞ্চি- বাঁশঝাড়ের বেত।
বিঃদ্র-(চঞ্চল হরিণী আপু বেশ কয়েকদিন ব্লগে নাই ,ফিরে আসুক আমাদের মাঝে ।
আপনার গঠনমূলক বা তীব্র সমালোচনা কে অগ্রিম স্বাগতম জানাচ্ছি । )
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৪