দাজ্জাল বিষয়ক হাদিসগুলো বর্ণনা করার আগে দাজ্জাল সম্পর্কে ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের ধর্মীয় (বর্তমানে বিকৃত) গ্রন্থগুলোতে বিকৃত ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে ধারণা দেওয়া আবশ্যক মনে করি। তাতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য কাফের গোষ্ঠী ইহুদীদের ইঙ্গিতে যা কিছু করছে, তার প্রেক্ষাপট ও প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে আসবে।
দাজ্জাল সম্পর্কে ইহুদীদের দৃষ্টিভঙ্গি হল, সে ইহুদীদের সম্রাট হবে। সকল ইহুদীকে বাইতুল মুকাদ্দাসে আবাদ (প্রতিষ্ঠিত) করবে। সমগ্র বিশ্বের উপর ইহুদীদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করবে। পৃথিবীতে ইহুদীদের জন্য শঙ্কা অবশিষ্ট থাকবে না। সকল “সন্ত্রাসবাদী” কে নির্মূল করে ফেলবে এবং সর্বত্র শান্তি, নিরাপত্তা ও সুবিচারের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে।
তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ ইজাখিলে আছেঃ
“হে ইহুদিকন্যা, তুমি আনন্দের সাথে চিৎকার দাও। ওহে জেরুজালেমের কন্যা, তুমি খুশিতে বাগবাগ হয়ে যাও। ঐ দেখ তোমাদের রাজা আসছেন। তিনি ন্যায় পরায়ণ। তিনি গাধার পিঠে আরোহণ করে আসছেন। আমি ইউফ্রিম থেকে গাড়িকে আর জেরুজালেম থেকে ঘোড়াকে আলাদা করে ফেলব। যুদ্ধের পালক উপড়ে ফেলা হবে। তার শাসন সমুদ্র থেকে জমিন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে”। (জাকারিয়াঃ৯ঃ৯ঃ১০)
“অনুরূপভাবে আমি ইসরাইলের প্রতিটি সম্প্রদায়কে সমগ্র পৃথিবী থেকে এনে একত্রিত করব, চাই তারা যেখানেই বসতি স্থাপন করুক। আমি তাদেরকে তাদেরই ভূখণ্ডে সমবেত করব। এই ভূখণ্ডে আমি তাদেরকে এক জাতির আকারে গড়ে তুলব ইসরাইলের পাহাড়ের উপর, যেখানে একজনমাত্র রাজা তাদের উপর রাজত্ব করবেন”। (ইজাখিলঃ৩৭ঃ২১ঃ২২)
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান ১৯৮৩ সালে চার্চের জেম বেকারের সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “আপনি একটু চিন্তা করুন, রোমান সাম্রাজ্যের পুনর্গঠনের পর (পাশ্চাত্য ইউরোপ যা ১৯৯৩ সালে আরও সুসংগঠিত ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নামে একক পতাকা, একক মুদ্রা, ভিসাহীন ভ্রমণ) মাসীহ (দাজ্জাল) পুনরায় সেই লোকগুলোর উপর আক্রমণ চালাবে, যারা তাদের নগরী জেরুজালেমকে ধ্বংস করেছিল। তারপর তিনি সেই বাহিনীগুলোর উপর আক্রমণ চালাবেন, যারা মেগডন ও আরমাগেডনের উপত্যকায় সমবেত হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, জেরুজালেম পর্যন্ত এত রক্ত প্রবাহিত হবে যে, রক্ত ঘোড়ার লাগামের সমান হয়ে যাবে। এসব উপত্যকা যুদ্ধ সরঞ্জাম, জীবজন্তু, মানুষের জীবন্ত দেহ ও রক্তে ভরে যাবে”।
প্রাক্তন মার্কিন সিনেটর পল ফান্ড লে বলেছেন, “একটি বিষয় আমার বুঝে আসছে না যে, মানুষ মানুষের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ কিভাবে করবে! কিন্তু সেদিন খোদা মানবীয় স্বভাবকে এই অনুমতি দিয়ে দিবেন যে, তোমরা তোমাদেরকে পুরোপুরি প্রকাশ করে দাও। বিশ্বের উন্নত সবকটি শহর – লন্ডন, প্যারিস, টোকিও, নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলস ও শিকাগো অস্তিত্বের পাতা থেকে মুছে যাবে”।
টিভি বিশেষজ্ঞ হিস্টন বলেছেন, “বিশ্বের ভাগ্য সম্পর্কে মাসীহে দাজ্জালের ঘোষণা একটি আন্তর্জাতিক প্রেস কনফারেন্স থেকে প্রচার করা হবে। উক্ত কনফারেন্স স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টিভির পর্দায় দেখা যাবে”।
প্রাক্তন মার্কিন সিনেটর মার্ক হেটফিল্ড বলেছেন, “পবিত্র ভূমিতে (জেরুজালেমে) ইহুদীদের পুনরাগমনকে আমি এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছি যে, এটি মাসীহ যুগের আগমনের লক্ষণ, যে যুগে গোটা মানবতা একটি আদর্শ সমাজের কল্যাণে সুখময় জীবন লাভ করবে”।
আমিন বেগ ভাই এর ব্লগ থেকে
(চলবে)