ছোটদের আসর:-
(রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয়,পোর্টব্লেয়ার,আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ,ভারত।)
তিনটি রাজকুমারীর গল্প:- মিনতি মন্ডল
তিনটি রাজকুমারী ছিল বড়োই ভালো। বড়ো রাজকুমারীর নাম মিতা,মেজো রাজকুমারীর নাম সীতা এবং ছোটো রাজকুমারীর নাম গীতা। মিতা আর সীতা ছিল রূপসী কিন্তু গীতার তেমন রূপ ছিল না। তিনজনে বেশ মিলেমিশে থাকতো; কিন্তু হঠাৎ একদিন মিতা ও সীতা দুজনে মিলে গীতাকে বলে ফেললো: ‘তুই আমাদের মতো সুন্দরী না,দেখ্ না আমাদের গায়ের রঙ কেমন টুকটুকে ফর্সা। আর তোর.....এই ব’লে হো হো ক’রে হেসে উঠলো’। গীতা কিছু না ব’লে মনের দুঃখে একা কোথাও চলে গেল। ধীরে ধীরে পশ্চিমাকাশে সূর্য অস্ত গেল। মিতা ও সীতা বাড়ি ফিরে গীতাকে দেখতে না পেয়ে অস্থির হয়ে উঠলো। রাজবাড়ির ভিতরে বাইরে কোথাও খুঁজে না পেয়ে রানী মাকে বলতেই রানীমা দাসীদের খুঁজতে পাঠালেন। বাইরে কোথাও যখন পাওয়া গেল না,রানীমা নিজেই রাজবাড়ির ছাদে খুঁজতে গিয়ে দেখলেন---পূর্ণিমার চাঁদ যেন রাতের আকাশের রূপালি টিপ,একটা মাদুর পেতে বসে গীতা চাঁদের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে আছে,শুভ্র চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়েছে গীতার মুখমন্ডলে। রাতের রজনীগন্ধা ছড়াচ্ছে তার মিষ্টি সুবাস। মেয়ের এমন রূপ রানীমা আগে কখনও দেখেননি। একটু পরেই রানীমা শুনতে পেলেন একটি মিষ্টি সুরের গান: ‘চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে,উছলে পড়ে আলো/ ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধসুধা ঢালো// রানীমা কখনই শোনেননি গীতার কন্ঠে এমন মধুর গান! রানীমাকে রাজ-অন্ত:পুরে দেখতে না পেয়ে মিতা ও সীতা ছাদের ওপর আসতেই তাদের নজরে পড়ল এই অপরূপ দৃশ্য! বাতাসে তখনও ভেসে বেড়াচ্ছে গীতার কন্ঠের মিষ্টি-মধুর গানের সুর,হাসনুহানা,রজনীগন্ধা ও বকুলফুলের মিষ্টি সুবাস! আর চুপ থাকতে না পেরে দুজনে গীতাকে জড়িয়ে ধ’রে কেঁদে কেঁদে বলল: ‘গীতা--- তুমি আমাদের ক্ষমা করো---তুমি যে কতো সুন্দর তা’ আমাদের আগে জানা ছিল না’!!
ছুটির দিনে:-মহাশ্বেতা গোস্বামী
যখন স্কুল ছুটি থাকে,তার আগের দিন থেকে ভাবি যে কালকের স্কুল ছুটি থাকবে,একটু বেশি ক’রে খেলবো বা অন্য কিছু করবো; কিন্তু তা’ ভেবেও লাভ কি? স্কুল থেকে যে হোম্ টাস্ক্(বাড়ির কাজ) দেয়,সেই কাজ করতে করতে পুরো দিনটা কেটে যায়। তারপরও যদি বাড়ির কাজ না শেষ করতে পারি, তাহলে ক্লাসে মার খেতে হয়। আবার ক্লাসে বসে যদি করি,তাহলে স্যার বা ম্যাডামরা এসে লাল কালি দিয়ে কেটে দেয়! এই যদি হয়, আমি কী করি উপায়? আমার দুঃখ জানাবো কোথায়?
ঈদ ও পুজো:-উম্মি কুলসুম্
পুজো আসবে ঈদ্ আসবে
বাজবে খুশির বীণ--
নাচের তালে বাজবে ঢোলক
তাক্ ধিনা ধিন্ ধিন্।
নতুন জামা পরবো পুজোয়
ঈদে নতুন স্যুট।
ইচ্ছে করে পরবো এবার
কোট-প্যান্ট আর বুট।।
মিনতি আর মহাশ্বেতার
সাথে পুজোয় যাবো।
জিলিপি আর রসগোল্লা
যতই পারি খাবো।।
ঈদের দিনে বিরিয়ানি
কোপ্তা-কাবাব খাবো।
মুন্নি আর স্নেহার সাথে
মেরিনা পার্ক যাবো।।
স্পিড্ বোটে চড়বো এবার
যদি সুযোগ পাই।
কখনও বা ইচ্ছে করে
ফুচকা কিনে খাই।।
অকাল বোধন যাত্রা হবে
অতুল স্মৃতি ক্লাবে।
দিদা-দাদু,চাচি-চাচু
সবাই শুনতে যাবে।।
আমরা তখন নাগর দোলায়
দুলিয়ে রাঙা পা।
বলবো একটু মুচকী হেসে
যা রে উড়ে যা।।
উড়তে উড়তে,ঘুরতে ঘুরতে
রাত বারোটার পরে।
‘শুভরাত্রি’ ব’লে আমরা
ফিরবো আপন ঘরে।।
Bandarwala(Hindi)/Khatija Khatun
Doog doog doog doog karta ekdin bandarwala aaya
Byaet perh ke niche usne,apna rang jamaya.
Bandar dekhkar bachche saare,doure doure aaye,
Ruth gayee Bandar se bandariya,Bandar usey manaaye.
Chal di pichhe- pichhe bandariya aagey uska saiyaan
Bandariya fir lagi naachney,boley tat ha thaiyaan.
ভালো মানুষ:- অঙ্কুশ কুমার দে
কী এসে যায়,কেউ যদি হয়
ফর্সা কিংবা কালো?
ভালো মানুষ সেই শুধু হয়
মনটা যার ভালো।
লম্বা,বেঁটে যেমন-ই হোক
খোঁড়া কিংবা কানা।
চেহারাতে ভালো-মন্দ
যায় না কিছুই জানা।।
আয়নাতে চোখ রেখে শুধু
মুখটি দেখা যায়--
মনের মাঝে কী যে আছে
কেউ কি খুঁজে পায়?
ফুল ফোটে পরের জন্য
নিজের জন্য নয়।
মানুষ কেন নিজের জন্য,
পরের জন্য নয়?
সব মানুষকে তুমি যদি
বাসতে পারো ভালো।
ভালো মানুষ বলবে সবাই
ঘুচবে মনের কালো।।
মনের সাধ:- দীপ্তি রায়
যদি আমি দুষ্টুমি ক’রে,
পাখি হয়ে উড়ি—
দূর দেশে গিয়ে পখিদের সাথে
খেলতাম লুকোচুরি।
তখন মা ডাকবে আমায়
‘খুকি কোথায় গেলি ওরে?’
আমি উড়ে গিয়ে বসে থাকতাম
গাছের ডালে চুপটি ক’রে।
তখন দেখবো মা,আমায় তুমি
খোঁজো কেমন ক’রে!
আমি গান গেয়ে বেড়াবো
যখন তুমি সাঁঝের বেলায়
ঠাকুর ঘরে যাবে।
তখন তুমি দূরের থেকে আমায়
গান শুনতে পাবে।
তখন তুমি বুঝতে পারবে না সে
তোমার খুকির গানের এ সুর আসে।
যখন তোমার খুকির কথা ভেবে
তোমার মনটা খারাপ হবে
তখন দূরে থাকব না আর
আবার আসবো ফিরে
নাচবো তোমায় ঘিরে
তখন তুমি আমার কানটা ধ’রে
বলবে, ‘দুষ্টু মেয়ে কোথায় ছিলি ওরে?’
আমি তখন বলবো মনে মনে
বুঝবে না মা এই খেলারই মানে!!
রবীন্দ্রনাথ:- কোয়েল সরকার
আমি যদি জন্ম নিতাম
তোমার কালে রবি।
তোমার আশীর্বাণী পেয়ে,
হয়তো হতাম কবি!
তুমি যেন শুরু,আবার
তুমিই যেন শেষ---
তোমার কাব্যে খুঁজেপেলাম,
সবুজ সোনার দেশ।
তোমার গানের বাণী,
সে যে অমৃতেরই ধারা--
বাজে সে সুর হৃদয় মাঝে,
হয় না কভু হারা!
শীতের বৃষ্টি:- লক্ষ্মী মন্ডল
শীতের মাঝে বৃষ্টি এলো
আকাশ ভরা পানি।
উঁকি মারে গগন পানে
শুকনো ডালাখানি।।
হঠাৎ পড়ে বৃষ্টি-ফোঁটা
মুক্ত-মণির মতো।
ধুসর মাঠে প্রাণ ফিরে পায়
দূর্বা-কোমল যত।
ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি পড়ে
পাখিরা গায় গীত।
শুরু হ’ল শীতের বৃষ্টি
জমিয়ে এলো শীত।।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৫৭