অমর একুশ বারে বারে আসে ফিরে---
পদ্মা থেকে গঙ্গা যমুনা তীরে।
হিমালয় থেকে কন্যাকুমারী,
গান্ধার (কান্দাহার) থেকে ব্রহ্মদেশ---
সিন্ধু জোয়ারে হিন্দোল জাগে,
ভাগীরথীতে তারই রেশ!...
পাক নাম নিয়ে পবিত্র হও,জিন্না সাহেব বলে---
ইয়াহিয়া আর ভুট্টোর থাবা, ছলে-বলে-কৌশলে।
পাক নাম শুধু নিলেই হবে না,ভাষা বদলানো চাই---
ঊর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা,বাংলার স্থান নাই।
বীর বাঙালিকে ভুলে গিয়ে ওরা, শাসনদন্ড হাতে--
মারণের বাণী মুখে নিয়ে ফেরে,সকাল-বিকাল-রাতে।
বাঙালির পণ,জাগে প্রতিক্ষণ, মাতৃভাষার তরে--
যায় যাক প্রাণ,হারাব না মান,এবার নতুন ভোরে।
বাহান্ন (বায়ান্ন) সালের একুশে সকাল,আইনসভার দিন
শাসকগোষ্ঠীর রক্ত-চোখে, স্বপ্ন হ’ল রঙিন।
আইনসভার চোখে-মুখে-বুকে,শুধুই ঊর্দুভাষা
বাঙালিকন্ঠে বিদ্রোহধ্বণি---আমার বাংলাভাষা!
বাংলা আমার কর্মভূমি,জন্মভূমি মা--
(তার) আঁচল ধ’রে চলতে শিখেছি,বলতে শিখেছি মা।
বাংলা আমার রূপসী মা,জীবন-নদীর চর।
বাংলা আমার বাঁচার আশা স্বপ্ন সুখের ঘর।
ভালবাসি মোরা রাম ও রহিম,তাই তো শাসকদল--
ভেঙে দিতে চায় ধর্মদ্বন্দ্বে ভাষার ঐক্যবল।
একুশের বেলা তিন ঘটিকায়,হিংস্র বুলেট-গুলী
বাঙালির খুনে লাল হয়ে গেল,ঢাকার রমণা-ধুলি!
বাংলার মাটি রঞ্জিত হ’ল,শহিদের তাজা খুনে
স্মৃতি-স্তম্ভ হ’ল নির্মাণ,রমণা রণাঙ্গনে।
খালি হাত,আর বুলেটের গুলি এ কেমন রণনীতি?
মহাভারতের ইতিহাসে নেই,এমনই ধর্মনীতি।
স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে দিল ওরা,আবার চালালো গুলী
আবার মারলো চল্লিশটি প্রাণ, দানব দশমাথা তুলি’।
রফিক,সালাম বরকত আর জাব্বার আজও আসে--
এই বাংলা নদীপ্রান্তর, উদার আকাশ ও বাতাসে।
রক্ত দিয়ে যে বাংলা গড়েছি,পেয়েছি মধুর ভাষা
শত যুগ ধ’রে হারাব না আর, আমার মাতৃভাষা!!