আজ ২১ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর থেকেই দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সরকার পক্ষে চলছে একের পর এক নাটক। বিভিন্ন মিডিয়া বলছে প্রানভিক্ষা চেয়েছেন মুজাহিদ ও সালাহউদ্দীন কাদের। অন্যদিকে বিশ্ময় প্রকাশ করে এ ধরনের সংবাদকে মিথ্যাচার বলে প্রতিবাদ করে আসছেন দন্ডপ্রাপ্তদের পরিজনরা। অন্যদিকে প্রাণভিক্ষার খবরের সত্যতা নিয়ে যাদের মুখের দিকে পুরো একটি বিশ্মিতজাতি তাকিয়ে আছে, সেই আইনজীবীরা বারবার প্রচেষ্টা করেও দেখা করতে অনুমতি পাননি!
এমতাবস্থায় প্রথম আলো নিউজ করেছে প্রানভিক্ষা চাননি দন্ডপ্রাপ্তরা। অন্যদিকে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেরটের মাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রাণভিক্ষার আবেদন মন্ত্রানয়ে চালাচালি হয়ে গেছে বলে খবর আসতে থাকার মধ্যেই মুজাহিদের ছেলে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করলেন।
বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হল-
কোন্ দুই ম্যাজিস্ট্রেট রাষ্ট্রপতির কাছে প্রানভিক্ষা নিয়ে কথা বলতে জেলের ভেতর গেলো আমরা জানতেই পারলাম না। কোন মিডিয়ায় সেই দুই ম্যাজিস্ট্রেটের কোন সাক্ষাৎকার শুনতে পেলাম না যে তারা প্রানভিক্ষার আবেদন নিয়ে ফেরত যাচ্ছেন।
মিডিয়ার দাবী, কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আলী আহসান মো: মুজাহিদ প্রান ভিক্ষার আবেদন করেছেন। সব মিডিয়া তা ফলাও করে প্রচার করে প্রচার করছেন। কিন্তু কেউ বলছেন না, যে কারা কর্তৃপক্ষের নাম কি? আইজি প্রিজন? ডিআইজি প্রিজন, তাদের, জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলার? কে?? কে? সোর্স এর নাম উল্লেখ না করে কিভাবে তারা এই রিপোর্ট প্রকাশ করছেন??
আইনজীবীরা দেখা করতে চাইছেন, তাদের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। আর এখন তৃতীয় আরেক পক্ষ আমার বাবার বরাত দিয়ে বলছেন তিনি প্রান ভিক্ষার আবেদন করেছেন, এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য?? আমার পিতার বক্তব্য হয় তার আইনজীবী নয় তার পরিবার বাইরে জানাবেন, কারা কর্তৃপক্ষ বা সরকারী লোক নয়।
প্রতিবার আমাদের নেতাদের নিয়ে এই মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়। এর আগে শহীদ কামারুজ্জামানের কাছে দুই ম্যাজিস্ট্রেট গিয়েছিল বলে সকল মিডিয়া জানিয়েছিল। অথচ শেষ সাক্ষাৎ শেষে তার ছেলে হাসান ইকবাল জানিয়েছিলেন তার পিতার কাছে কোন ম্যাজিস্ট্রেট যায়নি।
যে মানুষগুলো দ্বীনের পথে লড়তে লড়তে ফাঁসির মঞ্চের দিকে হাসতে হাসতে চলে যাচ্ছেন তাদের নিয়ে শেষ সময়ে এসেও কেন এই মিথ্যা প্রচারনা??
যদি তারা মনে করে এই সব মিথ্যা অপপ্রচার করে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে বা কোনভাবে আমাদের নেতাদের হেয় করবে তাহলে আমরা বলবো তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। মিথ্যা অপপ্রচার আমাদের আন্দোলনের পথের সংগী? ওরা যত মিথ্যা বলবে, সত্যের পথে আমাদের লড়াই তত বেশী জোরদার হবে ইনশাল্লাহ।
-আলী আহমাদ মাবরুর,
দন্ডপ্রাপ্ত মুজাহিদের ছেলে। বক্তব্যের লিঙ্ক- https://goo.gl/e7LwG8
এর আগে সাংবাদিক সম্মেলনে "মুজাহিদের প্রাণ ভিক্ষার আবেদনের সংবাদ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন" দাবি করেন মুজাহিদের ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর। ভিডিও লিঙ্ক- https://goo.gl/8Cxxf3
একদিকে দন্ডপ্রাপ্তদের সাথে তাদের আইনজীবীদের দেখা করতে বাঁধা দেয়া ও অন্যদিকে বিশ্ময়কর ভাবে সরকারের তরফে প্রাণভিক্ষার একতরফা প্রচারণায় সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে দন্ডপ্রাপ্তদের স্বজন ও সমর্থকদের মধ্যে। তাদের ধারনা সরকার মূলত একটি 'নোংরা গেইম' করতেই এসব নাটকের জন্ম দিচ্ছে।
মুজাহিদের পরিবারের সন্দেহ ২১ আগষ্ট মামলার শেষ দেখা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির নিকট মুজাহিদের অবকাশ আবেদনের আকাঙ্ক্ষা জানার পরই মূলত সরকার এই শক্তিশালী প্রশ্নটিকে এভাবে নিজেদের পক্ষে মিমাংশা করতেই আইনজীবীদের দেখা করতে দিচ্ছেন না। পাশাপাশি মিথ্যা প্রাণভিক্ষার নাটক সাজিয়ে নিজেরাই তা মওকুফ করে, আজ রাতেই ফাসি কার্যকর করার মাধ্যমে, উদ্ভাসিত সকল প্রশ্নের জবাব পাবার শেষ সুযোগটিকেই হত্যা করতে চাইছে।
মূলত সকল প্রশ্নের স্বাভাবিক মীমাংসার জন্য সব পক্ষই এখন অপেক্ষায় আছে কখন এই আলোচিত দন্ডপ্রাপ্তদের সাথে তাদের আইনজীবীদের দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়, সে দিকে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৭