ফাঁসির আগের রাতে সায়্যিদ কুতুব শহীদ রহঃ কে কালিমা পড়ানোর জন্য জেলের ইমামকে পাঠানো হলো। জেলের ইমাম এসে আল্লামা সায়্যিদ কুতুব রহ. কে কালিমার তালকিন দেয়ার চেষ্টা করতে লাগলেন।
তাকে দেখে সায়্যিদ কুতুব জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি জন্য এখানে এসেছেন?
ইমাম বললেন, আমি আপনাকে কালিমা পড়াতে এসেছি।
মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে আসামীকে কালিমা পড়ানো আমার দায়িত্ব।
সায়্যিদ কুতুব বললেন, এই দায়িত্ব আপনাকে কে দিয়েছে?
ইমাম বললেন, সরকার দিয়েছে।
সায়্যিদ কুতুব বললেন, এর বিনিময়ে কি আপনি বেতন পান?
ইমাম বললেন, হ্যাঁ আমি সরকার থেকে বেতন-ভাতা পাই।
তখন সায়্যিদ কুতুব রহ. সেই ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি জানেন কি কারণে আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে?
ইমাম বললেন, না বেশি কিছু জানি না।
সায়্যিদ কুতুব বললেন, আপনি আমাকে যেই কালিমা পড়াতে এসেছেন, সেই কালিমার ব্যখ্যা লেখার কারণেই
তো আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু কি আশ্চর্য!
যেই কালিমা পড়ানোর কারণে আপনি সরকারী বেতন- ভাতা পান সেই কালিমার ব্যখ্যা মুসলিম উম্মাহকে জানানোর অপরাধেই আমাকেই সরকারী ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, আপনার কালিমার বুঝ আর আমার কালিমার বুঝ এক নয়। কালেমার ব্যাপারে আপনাকে আমার প্রয়োজন নেই।"
সাইয়েদ কুতুব শহীদ- বিশ্বব্যাপী বহুল পঠিত তাফসীর 'ফী জিলালিল কুরআনের' প্রনেতা। ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধে মিশরের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ইসলামপন্থী সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, ইখওয়ানুল মুসলিমুন বা মুসলিম ব্রাদারহুডের কেন্দ্রীয় লিডার ছিলেন। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী শামরিক শাসক তাকে তার লেখার জন্য মৃত্যুদন্ড প্রদান করে। এভাবেই এক বিপ্লবী কলমের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়ে লেখনীকে শহীদ করা হয়! বিশ্বের মুক্তমনা ও জ্ঞাণের উন্মুক্তকরন আন্দোলনকারীদের প্রেরণার বাতিঘর অমর এই ইসলামী স্কলার।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৭