somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদনানের ডায়েরী ৪

৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আদনানের ডায়েরী ১
আদনানের ডায়েরী ২আদনানের ডায়েরী ৩
দরজা খোলার খটমট আওয়াজে দুইভাই বোনের ঘুম ভাঙলো না । এখন রাত এগারোটা ।নিষ্পাপ বাচ্চাদুটো পরম নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে । দৃশ্যটি অসম্ভব সুন্দর । এই অসম্ভব সুন্দর দৃশ্যকে রেজা সাহেবের কুৎসিত মনে হচ্ছে । মাথায় আগুন চড়িয়ে দিচ্ছে ।রেজা সাহেব কেন জানি এই বাচ্চা দুটিকে সহ্যই করতে পারেন না।আগে কত ভালোবাসা সোহাগ ছিল।কত রকমের সোহাগ আহ্লাদের সম্পর্ক ছিল।এখন তার ছিটেফোঁটাও নে।এখনতো তার কাছে বাচ্চা দুটোকে মনে হয় হাড়ে বজ্জাত। ওরা সবসময় ওদের মায়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলতো।মা ই যেন ওদের কাছে সব।খুব মায়ের ন্যাওটা ছিলো ।সেই তো মা ঠিকই তোদের রেখে উড়াল দিলো ।রাহেলা বেচে থাকাকালীন শেষের দিনগুলোতে তো তার কাছেই ভীড়তো না ছেলেমেয়ে দুটো।মা ,মা আর মা।ওদের মায়ের আত্নহত্যার পর তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে ।অনেক মান অপমান সইতে হয়েছে ।জেলখাটার হাত থেকে সামান্যের জন্য বেঁচে গেছেন তিনি।নিজের বাচ্চা না হলে কবেই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতেন ! তাছাড়া বাড়িতে কাজের লোকও প্রয়োজন। থাক না থাক ।এই মনে করে রেখে দেওয়া । তিনি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন তার নিজের চাকরিটাও গেছে ওদের মায়ের কারণে । অপয়া অলক্ষী একটা ।দুর হয়েছে ভালো হয়েছে । এখন এ দুটো দুর হলে তিনি বাঁচেন । আদনানের মামা গুলো হলো আরেক ছোটলোক ।ইতর শ্রেণির ।বাচ্চা দুটোর দায়ভার তারাও তো নিতে পারে ! কোন খোঁজ খবরই রাখে না। যত ঝামেলা তার ঘাড়ে ।ব্যবসাটা দাড়িয়ে গেলে আবার তিনি বিয়ে করবেন ।এভাবে তাঁর আর ভালো লাগছে না । আবার তিনি নতুন জীবন গড়বেন।সুখের জীবন। সীমা ইদানিং খুব তাড়া দিচ্ছে ।কিন্তু পথের কাটা তো এদুটো।কি করে যে নামাবে। রেজা সাহেব কোন কুল কিনারা পান না।সীমাকে হত ছাড়া করা যাবেনা ।সে বাবা ময়ের একমাত্র মেয়ে । তার বাবার প্রচুর টাকা। একেবারে সোনার ডিম পাড়া হাঁস যাকে বলে ।

-আদনান এই আদনান ।
দুভাইবোনই এখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ।অনেক ধকল গেছে তাদের ওপর দিয়ে । হাজার ডাকাডাকিতে তাদের মনে হয় ঘুম ভাঙবে না। বাসা পুরোটাই এলোমেলো হয়ে আছে। থালা বাটি পরিষ্কারের ব্যাপার আছে।সব গোছগাছের ব্যাপার আছে ।ইসলাম সাহেব অবশ্য ঘর গেরস্হালী কাজ খুব একটা পারেন না ।এমনকি বিছানা তৈরি করা , মশারি টাঙানো সব আদনান করে ।আজ সে ঘুমোচ্ছে ।হঠাৎ করেই ইসলাম সাহেবের মাথায় রক্ত চড়ে গেল । তিনি ঘুমন্ত আদনানকে প্যান্ট থেকে বেল্ট খুলে পিটাতে লাগলেন ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আদনানের ঘুম ভেঙে গেল । এরকম পরিস্থিতিতে সে কোন দিনও পড়েনি ।পিতার অনেক নিষ্ঠুরতা সে দেখেছে । মাকে অকারণ মারধোরের দিন গুলোতে সে ছোট হলেও প্রতিবাদ করতো বলে , তাকে তার বাবা দুচোখে দেখতে পারে না সেটাও সে জানে । কিন্তু এখন কি কারণে এই শাস্তি সে ঠিক বুঝতে পারছেনা ।হঠাৎ বিড়ালের ইলিশ মাছ খাওয়ার কথা মনে হলো ।সে দ্রুত মার বাঁচাতে বলে উঠল............।
-মেরোনা ,মেরোনা বাবা ,আমি কিছু করিনি ।
-কিছু করিনি মানে কী ? কখন থেকে ডাকছি ।শুনতে পারিস না ।হারামজাদা কথা কানে যায়না ।
-আমি কিছু করিনি বাবা । আমি মাছের মাথা খাইনি ,বিশ্বাস করো ।তুমি বিশ্বাস করো।
হঠাৎ করে মাছের প্রসঙ্গ আসাতে রেজা সাহেবের মনে পড়ে গেল তাইতো খাবার সময় মাছের মাথাটা তো পাইনি তাহলে এই হাড় হারামজাদাই মাছ টাকে খেয়েছে আর এখন মিথ্যা বলছে । রাগ আরো চড়ে গেল তার ।তিনি জানোয়ারের মতো পিটাতে লাগলেন অসহায় বাচ্চাটিকে । মিতার ও ঘুম ভেঙে গেছে । সে বড় বড় চোখ করে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে ভাইয়ের মার খাওয়া দেখতে লাগলো ।তার খুব জল তেষ্টা পাচ্ছে। ভয়ে সে ঢোঁক গিলতে ও পারছেনা।
পৃথিবীতে মানুষের অনেক আচরণই কুৎসিত। এজন্য মাঝে মাঝে পৃথিবীটাকে খারাপ মনে হয় ।আসলে পৃথিবীটা সুন্দর। মানুষের আচরণটাই খারাপ।এতে পৃথিবীর কোন দোষ নেই
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০৬
১০টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আলু সংরক্ষণের উপায়

লিখেছেন অপলক , ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৪

উত্তরবঙ্গের চাষীরা, ভেঙ্গে পরবেন না। আপনারা আমাদের দেশের নিস্বার্থ নিবেদিত যোদ্ধা। আলু নিয়ে হতাশ হবেন না। জয়পুরাহাট ও ঠাঁকুরগায়ে সরকারীভাবে অল্প কিছু আলু রাখার ঘর তৈরী করে দিয়েছে। ৪ মাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতিতে মেহেদী আরজান ইভান......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

স্মৃতিতে মেহেদী আরজান ইভান......

২০০৯ সালে ব্লগে 'কান্ডারী অথর্ব' নামে একজন কবির আবির্ভাব হয়। অসম্ভব সুন্দর কবিতা লিখেন। একজন সমাজ সেবক হিসাবেও পরিচিত। সমমনা ব্লগার বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারি- বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ষণের কারণ: ধর্ষিতা একজন নারী

লিখেছেন কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী, ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

একটি অজ্ঞাত লাশ।
একটি নারীর মৃতদেহ।
দেহটি অর্ধনগ্ন।
দুই পা দুই হাত দুইদিক ছড়ানো।
পায়জামা হাঁটুর নিচে নামানো।
জামা মাঝ বরবার ছিঁড়ে ফেলেছে।
নগ্নতা ঢাকতেই উপরে কিছু কাপড় দিয়ে মৃতার ছবিটি তোলা হয়েছিল।
তার নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশীদের ইমিগ্রেশন প্রব্লেম

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৫৯

১. সেদিন শুনি এক বাংলাদেশী ছেলের সুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়েছে কারন সে স্টুডেন্ট ভিসা পেয়েই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানতে চেয়েছিল আমেরিকায় গিয়ে ওকে যেহেতু রেস্টুরেন্টে বা গ্যাস স্টেশনে কাজ করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মূল্যবান উপহার, যা স্মৃতিতে অম্লান= (উপহার-০১)

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৫ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০০

০১।



উপরের ফলগুলো জামরুল

প্রিয় একজন ব্লগার মা. হাসান ভাইয়া। এক সময় ব্লগ জমজমাট ছিল । উনাদের মন্তব্য প্রতিমন্তব্যে ব্লগ উচ্ছল থাকতো সব সময়। সুন্দর সুন্দর ব্লগ পোস্ট। আড্ডা গল্পে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×