ঝাপসা অন্ধকার, হালকা শব্দ শোনা যাচ্ছে। খসখসে কিছু নড়াচড়ার শব্দ। দুজন ধীর পদক্ষেপে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এগুচ্ছে। ব্লাস্টারগুলোর টারগটের লেজার লাইটগুলো এই গ্রহের অদ্ভুত গাছগুলোর উপর পড়ছে। এ অঞ্চলের গাছগুলোর শাখা প্রশাখা বের হয় মাটির থেকে একশো দেড়শো ফুট উপরে উঠে। এই গাছের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এর কান্ড ফ্লুরোসেন্ট সংবেদনশীল টিস্যু দিয়ে গঠিত, অর্থাৎ আলো বিকিরণ করে।
এরকম অন্ধকারের গ্রহে এরুপ অভিজোযন যথার্থই বটে!
সামনে হঠাৎ হাটু গেড়ে বসে পড়ল লোকটা, মুখটা হেড-মাস্কে ঢাকা। হাতের মুঠি পাকিয়ে থামতে নির্দেশ দিচ্ছে। তার পিছু পিছু এসে থামল সে। আবছা ফার্নের জঙ্গল সরিয়ে সামনে তাকাতে দেখতে পেল বিরাট একটি প্রাকৃতিক গুহা, অন্ধকার মুখ, তার পেছনের দেয়ালে আবছা লাল রঙের ছায়া দেখা যাচ্ছে।
ফোস করে নিঃশ্বাস ছাড়ল। এখান থেকেই বীকনটা আসছে, কিছু একটা তো অবশ্যই আছে! উত্তেজিত শোনা গেল দলনেতার কণ্ঠস্বর।
মানুষের ট্রেস মনে হচ্ছে? নাকি অন্যকিছু? পেছন থেকে এগিয়ে সামনে বাড়ল , গুহাটার মুখটা তার একদম কাছে।
জিম, এত কাছে যাওয়া উচিৎ হচ্ছে না… দলনেতা পেছন থেকে বলল। অন্যকিছুও হতে পারে… তার কথা শেষ হলো না, হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে গেল ঢাকের শব্দে। চারদিক থেকে ঢাকের শব্দ কয়েকবার বেজে উঠেই থেমে গেল। আবার চুপচাপ নিরব হয়ে গেল অন্ধকার বনভূমি।
আমাদের চলে যাওয়া উচিৎ বোধহয়, ঢোক গিলল জিম। ব্যপারটা মোটেও দুইজনের মত মিশন বলে মনে হচ্ছে না।
কিছু বলার আগেই শোনা গেল রক্ত হীম করা চিৎকার। প্রাচীন অতিকায় কিছু কষ্টে ভারি স্বরে গোঙ্গাচ্ছে। যেন কোন হর্নের শব্দ ভেসে বেরাচ্ছে, গুহার দিকে একবার তাকালো জিম, রক্তলাল গুহার দেয়ালটা যেন অনেকটাই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। ভালো করে চোখ পিটপিট করে দেখতে থাকলো গুহার এবড়ো থেবড়ো দেয়ালটা, হঠাৎ মনে হলো একটা ছায়া নড়ে উঠল লাল দেয়ালটার মাঝে, ভালো করে তাকালে দেখতে পেল ছায়াটা নরছে না বরং তার দিকেই তাকিয়ে আছে… অতি বিকৃত, বিভৎষ কিছু, টকটকে লাল চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
ধীরে ধীরে সব কিছু অস্পষ্ট হয়ে গেল।
***
বিজ্ঞান একাডেমির প্লেনেটারি মিশনের জন্যে ব্যবহৃত রিক্স ২ বেসস্টেশনের একটা কোয়ার্টারে বসে আছে জিম। ক্রায়োনিক স্যুটটার নতুন ভার্সন পরখ করে দেখছে। এই প্রথম ট্রেইনিং থেকে বিজ্ঞান একাডেমির সরাসরি মিশনে ডাক পরায় প্রতি মুহূর্তে উত্তেজিত হয়ে আছে সে। সামনে এক স্কোয়াড্রন ব্যাটলশীপ রাখা আছে, অলিম্পাসের এলিট ফোর্সদের একটা অংশ এটি। রুমে বিজ্ঞান একাডেমির দুইজন সুপিরিয়র মিশন কন্ট্রোল তাদের মিশন সম্পর্কে ব্রিফ করে নিজেদের মাঝে কথা বলছেন। চারিদিকে সাজসাজ রব। কোথাও কেউ মুহূর্তের জন্যেও দাড়াচ্ছে না। তন্ময় হয়ে দেখছে সব জিম। তার হোম ক্লাস্টারে কিংবা বিজ্ঞান একাডেমির ট্রেনিং সেন্টারের কোথাও এত কোলাহল দেখে নি সে। পেছন থেকে ঘাড়ে হাত পরায় ঘুরে দাড়াল।
ব্লেসিংস অব স্পেস! আসলেও রিক্স একটা ব্যস্ত বেস স্টেশন, কমান্ডার তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, উজ্জ্বল তার চোখমুখ। অবশ্য অলিম্পাসের জাকজমক এর চেয়েও কয়েককাঠি উপরে।
কমান্ডার! ঘুরে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞান একাডেমির কায়দায় সেলুট দিতে গেল জিম, কিন্তু তাকে থামিয়ে দিল লিও। ওসব অফিশিয়াল কথাবার্তা ছাড়ো! তার কাধে চাপ দিয়ে বলল সে। আজ বাদে কাল নরমেন্ডিতে উঠলে এরা প্রথম মাত্রার অপরাধ নিয়ে জানতে পারবে না।
প্রথম মিশন কেমন লাগছে ভাবতে? সহাস্যে বলল লিও। আমার তো দুরাত ধরে ঘুম হচ্ছে না। বিজ্ঞান একাডেমির মিশনের দলপতি, নরমেন্ডির মত z-class মহাকাশযানের দায়িত্ব এত জলদি এই কাধে পরবে কখনো ভাবতে পারি নি! স্ফিত হাসল সে।
মৃদু হাসি ফুটে উঠল জিমের মুখেও। এই চঞ্চল সদা হাসিখুশি দলনেতাকে পেয়ে মনে মনে খুশিই হল। কিন্তু তোমার দুর্ভাগ্য যে আমার মত একজনকেই শুধু পেলে মিশনে। মেয়ে অভিযাত্রীদের পেলে নিশ্চয় বেশি খুশি হতে।
তা হতাম, হেসে স্বীকার করল সে। কিন্তু আমরা আবার দ্বিতীয় মাত্রার অপরাধের দিকে না যাই! কাউকে বেশি প্রেফার করা যে দ্বিতীয় মাত্রার অপরাধ তাতো আশা করি জানো।
কাধ ঝাকালো জিম।
প্ল্যানেটারি মিশন! জোরে শ্বাস ছাড়ল লিও। সিন্ড্রা গ্রহ! তোমার কি মনে হয় না বায়ো ক্যামিস্টই বেশি প্রয়জোনীয় প্রাণের অস্তিত্ব খোজার জন্যে, এটমিক ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে? তার দিকে তাকিয়ে বলল লিও।
হ্যা তা প্রয়োজন ছিল হয়তো! স্রাগ করল জিম। কিন্তু আমাদের তো এক্সপেরিমেন্ট করারও সেকেন্ডারি মিশন রয়েছে, সেজন্যে হয়তো আমাকে দরকার মনে হয়েছে বিজ্ঞান একাডেমির…
রিলেক্স! হেসে পিঠ চাপড়ে দিল লিও। এমনি বললাম আর কি! এত ভাববার কি আছে? সবকিছু ঠিক থাকলে কাল তাহলে আমাদের মিশন শুরু হচ্ছে! দেখা হবে কাল তাহলে তোমার সাথে!
হাসি ফুটে উঠল জিমের মুখে, হাত বাড়িয়ে দিল সে। Good luck to us!
***
অদ্ভুত অবচেতন ঘুমটা তখনো চলেছে। কোথায় আছে বুঝতে পারল না জিম। রাতের অন্ধকারে পাশাপাশি দুটি কুটির। একটার ভেতরে অজানা আগ্রহে এগিয়ে গেল সে।
আকাশে হালকা নীল লাল আলোর খেলা চলছে, ভারী বায়ুমন্ডলে মাঝে মাঝে ঘোলা হয়ে যাচ্ছে আলোর বলয়গুলো।
পিলার্স অব ক্রিয়েশন।
হালকা পায়ে ঘরের মাঝে ঢুকল সে। গাঢ় অন্ধকারের মাঝেও সবকিছু দেখতে পাচ্ছে সে। একপাশে দেখতে পেল সেই পরিচিত চেহাড়াটা।
মেঝেতে অদ্ভূত এক খড়ের বিছানাতে শুয়ে আছে মেয়েটা। মাথা পর্যন্ত পাতলা কাপড়ে ঢাকা। তারপরও তার চিনতে কোন অসুবিধা হলো না। লম্বা সোনালী চুলগুলোই তার পরিচয় বলে দিচ্ছে…
ইরা।
বাচ্চাদের মত মাথার নিচে হাত ভাজ করে ঘুমাচ্ছে। অপলক তার দিকে তাকিয়ে থাকল জিম, মনের মাঝে হঠাৎ করে প্রবল জোরে ধাক্কা দিল যেন কেউ। বুকের ভেতর দমানো ব্যাথাটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। নিঃশব্দে তার পাশে এসে বসল।
আচ্ছা স্বপ্নের মাঝে কি কাউকে ছুয়ে দেখা যায়? আলতো করে ইরার সোনালি চুল স্পর্শ করল জিম। মৃদু কণ্ঠে বলল, আমি খুবই দুঃখিত, ইরা… তুমি জান না আমি কতটা অসহায় ছিলাম তোমাকে হারিয়ে…
হালকা করে নড়ে উঠল ইরা, তার চোখে চোখ পড়তে চিনতে পারল মনে হলো। অবাক সবুজ চোখদুটোয় হালকা পানি জমতে থাকল, জিম! কাতর গলায় বলল সে, আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
মৃদু হাসল জিম, কিছু বলতে যাবে এমন সময় গুঞ্জনটা আসা শুরু করল।
না! চিৎকার দিল জিম, আমি এখান থেকে যেতে চাই না! প্লিজ, দোহাই লাগে…
কিন্তু কেউ তার আকুতি শুনল না, পুরো ঘরটাই ঘন সাদা কুয়াশায় ভরে গেল, সেই চিরচেনা চাপা গুঞ্জনটা মাথার গভিরে চেপে বসল। কিছুক্ষণের মাঝে সব অন্ধকার হয়ে গেল চোখের সামনে থেকে।
***
কোথা থেকে কোথায় ছুটে চলেছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। ইরাকে আরেকবার দেখার জন্যে বেকুল হয়ে আছে জিম। কিন্তু অন্ধকারটা সরে যেতে দেখা গেল ক্যাম্প ফায়ারের আলোছায়ার খেলা।
মাঝে একটা প্রকান্ড আগুনের কুন্ড জ্বালানো হয়েছে। চারদিক তাকালো জিম। আদিম পোশাক পরা কিছু মানুষ আগুনের চারদিকে গোল হয়ে ঘিরে আছে। চারদিকে সাজসাজ অবস্থা। ধীরে ধীরে ঢাকের শব্দটা বাড়তে লাগল।
আগুনের পাশে বৃত্তের মাঝে দেখা গেল একটা অবয়বকে… আলো আধারির মাঝে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। লম্বা লাল আলখাল্লা গায়ে, মাথায় বিশাল পালকের মুকুট পরা একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে তার, কিছুই ঠিকমত বুঝতে পারছে না।
হঠাত অবয়বটা তীক্ষ্ণস্বরে প্রাচীন একটা সুর ধরল, ধীরে ধীরে কাপতে কাপতে চড়া হচ্ছে গানের সুর। একবিন্দু বুঝতে পারল না জিম, কিন্তু বুঝতে পারলো কোন ধরণের উপাসনা চলচ্ছে এখানে।
কাপা কাপা স্বরের গানটা চলতে থাকল, সাথে ঢাকের আওয়াজ যোগ হয়েছে। মেয়েটা হঠাৎ নিজের চারপাশে ঘুরতে শুরু করল, অদ্ভুত সেই নৃত্য, সাথে অদ্ভুত সেই সুর। চারদিকে পাক খাচ্ছে আর নিজের মাথাকে একবার মাটির দিকে নুইয়ে ফেলছে, আবার আকাশের দিকে তুলছে, মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে জিম, আগুন, উজ্জ্বল লাল সর্পিল দেহের মেয়েটার ঘূর্নি আর সম্মোহনীয় গানে সে আটকে গেছে।
কতক্ষন গান চলল বলতে পারবে না জিম একসময় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ মেয়েটা মাথা নামিয়ে হাটু গেড়ে বসে পরল, সাথে সাথে ঢাক আর গানের আওয়াজ থেমে গেল। উত্তেজিত কোলাহল থেকে পিন পিতন নিরবতা বিরাজ করছে এখানে। আগুনের চারদিকে ঘিরে দাঁড়ানো মানুষগুলোও মেয়েটার দেখাদেখি মাথা নুইয়ে হাটু গেড়ে বসে আছে। কোনদিকে কেউ তাকাচ্ছেনা, অস্বস্থিকর নিরবতা…
এমন সময়ে পালকের মুকুট পরা মাথাটা উচু করল মেয়েটা। অগ্রদূত! গগন বিদারি চিৎকার দিল সে।
অগ্রদূত! গোলাকার ঘিরে থাকা মানুষগুলোও হাটু গাড়া অবস্থাতেই চিৎকার করে উঠল। তাদের চিৎকার ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে, ঝাপসা দেখতে থাকল জিম, তার মাথায় দপদপ করে বেথা করছে। বুঝতে পারছে জ্ঞান হারাচ্ছে সে।
উপাসনার মাঝে এই পূজারিরা অগ্রদূতকে এক মনে ডেকে যাচ্ছে… কিছু মনে করার চেষ্টা করল জিম, কে যেন তাকে অগ্রদূতকে খুজে বের করতে বলেছে… মাথা দুহাতে চেপে ধরল জিম। ইরার সবুজ চোখগুলো একমুহুর্তের জন্যে তার সামনে দিয়ে গেল। কে যেন, মনে করার চেষ্টা করল জিম, আমি পারছি না।
হঠাৎ বজ্রপাতে মত ভারি একটা আওয়াজ হলো। চোখ খুলে তাকালো জিম। আগুনের কুন্ডের পেছনে সাদা ধোয়া পেচিয়ে পেচিয়ে উঠছে… সেখান থেকে আবছা একটা অবয়ব এদিকে এগিয়ে আসছে।
অগ্রদূত! চিৎকার করে উঠল সন্যাসী মেয়েটা, মাথা মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলেছে।
উজ্জ্বল আলোতে ধাধা দেখছে জিম, মাথার ভেতরের ব্যাথাটা তাকে অবশ করে দিচ্ছে। সাথে কৌতুহলও হচ্ছে লোকটাকে দেখবার জন্যে, মনে হচ্ছে লোকটা কে তার জানতেই হবে… ধোয়ার কুন্ডলীর মাঝে বেরিয়ে আসছে অবয়বটা, অনেক ছোটখাট গড়নের একটা ছায়া, যতই এগিয়ে আসছে ততই জিমের দৃষ্টি অস্পষ্ট হচ্ছে, কোন মতে চোখের উপর হাত রেখে অনিশ্চিত ভঙ্গিতে বিমুঢ় হয়ে তাকিয়ে রইল। এ হতে পারে না, বিড়বিড় করল জিম, এ হতে পারে না। চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল, আবারো অসীম শূন্যে প্রবেশ করল সে।
***
অন্ধকারের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে জিমের অবচেতন মন, তার শিরশির অনুভূতিটা ফিরে এসেছে আবার। কেউ যেন অনু পরমাণু পর্যন্ত বিশ্লেষণ করে দেখছে।
মাস্টার! আনন্দিত একটি কণ্ঠ শোনা গেল, মাস্টার আমাদের আনন্দিত হতে দিন! মাস্টার এর মাঝের সকল জ্ঞান আহোরণ করতে দিন! আমরা আনন্দ পাচ্ছি! মাস্টার চতুর্থমাত্রার অংশ আমরা যোগ করে দিয়েছি! তৃতীয় মাত্রার দেহ চতুর্থমাত্রা কিভাবে গ্রহণ করবে তা দেখার জন্যে এতদিন ধরে অপেক্ষা করছি আমরা!
কি আনন্দ!
বনবন করে ঘুরছে চারপাশ। কিছু চিন্তা করতে পারছে না জিম, একমনে গা ভাসিয়ে দিল সে।
অগ্রদূত! সন্যাসিনীর চিৎকার শোনা গেল, পরক্ষণে ইরার স্নিগ্ধ গলার স্বর, “আমি কি স্বপ্ন দেখছি?” এরপর বদলে গেল, “মাস্টার দোহাই আমাদের এর জ্ঞান আহোরণ করতে দিন! সব মিলিয়ে আবার ভারী একটা কণ্ঠস্বর শোনা গেল, “তোমাকে অগ্রদূতকে খুজে বের করতে হবে, তুমিই হবে উত্তরণের পথ, অথবা ধ্বংসের কারণ”।
আস্তে আস্তে নিজেকে বুঝতে পারল জিম, নিজের ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করল। চারদিকের ঘূর্ণনটা কমতে কমতে স্থির হয়ে গেছে। নিজের মনের দিকে তাকালো সে। ইরার মিষ্টি চেহাড়াটা একবার দেখতে পেল, হালকা হেসে তার দিকে মাথা নাড়ল সে।
“তুমি কি বুঝতে পারছ কি হতে যাচ্ছে?”
মৃদু হাসল জিম। এরপর প্রবল প্রাণশক্তি নিয়ে চোখ খুলল।
আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:০৩