পবিত্র রমজান মাস আসলে ছোট বড় নারী পুরুষ ভেদে প্রায় সকল মুমিন মুসলমান রোজা রাখেন। এক্ষেত্রে দীর্ঘ ১১ মাসের স্বাভাবিক আহার, নিদ্রা, নিয়ম-নীতির কিছুটা ব্যত্যায় ঘটে। এরপরও একজন রোজাদার কিছু পরামর্শ অনুসরণ করলে থাকতে পারেন সুস্থ, সবল এবং রাখতে পারেন সৃষ্টিকর্তার বড় নিয়ামত রোজা। কিভাবে রোজা রেখে সারাটি মাস সুস্থ থাকবেন এই নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সূত্রের আলোকে রোজাদারদের প্রতি আমাদের পরামর্শ।
১. রমজানে যাদের চিকিত্সা নিতে হয় তারা এবং যারা সুস্থ থেকে রোজা পালন করতে চান তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে চিকিত্সার পরামর্শ নেয়া উচিত।
২. রোজায় পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান গ্রহণ, পানি শূন্যতা রোধে পর্যাপ্ত পানি পান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার
৩. সেহেরীর সময় অতিরিক্ত আহার করবেন না। খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত আশ জাতীয় শর্করা খাবার রাখুন। বেশী আমিষ খান এবং খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে সবজি-ফল।
৪. দিনের গরমের সময় ঠান্ডা যায়গায় বিশ্রাম নিন। সম্ভব হলে শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দিন।
৫. ইফতারির সময় খেজুর, প্রচুর শরবত, দুধ, ফলের রস বেশী না খেয়ে মাগরিব এর পর হালকা খাবার যেমন স্যুপ ও অন্যান্য হালকা খাবার খেতে হবে। রক্তে চিনির মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে খাদ্য তালিকায় কিছুটা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য রাখুন।
৬. রাতের খাবারের ক্ষেত্রে সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করুন। অতিরিক্ত খাবার বর্জন করুন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
৭. চা, কফি, সোডা পান থেকে বিরত থাকুন।
৮. মৌসুমী ফল দিয়ে তৈরী ডেজার্ট খেতে পারেন।
৯. ইফতারির পর থেকে ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্ত অন্তত: ৮ গ্লাস পানি পান করুন।
১০. সন্ধ্যায় হালকা ব্যায়াম যেমন: ১৫-২০ মিনিট হাটার অভ্যাস করুন
১১. তেলে ভাজা খাবার ও অধিক মসলাযুক্ত ঝাল খাবার পরিহার করুন। এসব খাবারে বুক জ্বালাপোড়া ও হজমে সমস্যা হয়।
১২. প্রতিদিন অন্তত: ১টা মাল্টিভিটামিন সেবনের চেষ্টা করুন।
১৩. কয়েক বার দাঁত পরিষ্কার
ও ফ্লসিং করুন। (রোজাদারগণ এটা করে থাকেন)
১৪. দিনে কয়েকবার হাত মুখ ওয়াশ করুন। (রোজাদারগণ এটা করে থাকেন)
১৫. ধূমপান ত্যাগ করুন।
১৬. পর্যাপ্ত ঘুমানোর জন্য আপনার ঘুমের একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন।
১৭.রোজা রেখে অধিক ও অপ্রয়োজনীয় আলাপ আলোচনা থেকে বিরত থাকুন।
১৮. রোজায় যাদের অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, পেপটিক আলসার ও উচ্চ রক্তচাপ থাকে তারা চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন বিধি পুন:নির্ধারন করুন।
১৯. রোজা রেখে আকষ্মিক কোন অসুস্থতা যেমন; অতিমাত্রায় দুর্বলতা, অসস্থি থাকলে সম্ভব হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন অথবা ব্লাড প্রেসার
পরীক্ষা করুন।
২০. গুরুতর অসুস্থতায় রোজা ভঙ্গের প্রয়োজন হলে চিকিত্সকের পরামর্শ
নিন অথবা শরীয়তের বিধান অনুসরণ করুন।
লেখক - ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম।