ঈমান অতি সূক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর বিষয়। ঈমান মূলতঃ বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের উপর নির্ভরশীল। কাজেই বাতিল ৭২ ফিরকার সাথে উঠা-বসা ও সম্পর্ক রাখার কারণে অশুদ্ধ কুফরীমূলক আক্বীদায় বিশ্বাস করা ও আমলের দ্বারাও তাৎক্ষণিকভাবে ঈমান ও আমল নষ্ট হয়ে যায়।
মহান আল্লাহ পাক বলেন, “কেউ যদি আমার নামে বানিয়ে বানিয়ে কোন কথা বলে, তবে আমি দক্ষিণ হস্তে তাকে পাকড়াও করবো অতঃপর তার গ্রীবা বা প্রাণ রগ কেটে দিব, তোমাদের কেউ এতে বাধা দিতে পারবে না।” (সূরা-হাক্কাহ, ৪৪-৪৬)
মহান আল্লাহ পাক আরো বলেন, “তাদের নিকট তাদের মধ্যে থেকেই একজন রসূল আগমন করেছিলেন, অনন্তর তারা (কাফিরেরা) তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করলো। তখন আযাব এসে তাদেরকে পাকড়াও করলো এবং নিশ্চিত তারাই ছিল যালিম।” (সূরা-নহল, ১১৩)
উল্লিখিত আয়াত শরীফদ্বয় এটাই প্রমাণ করে যে, যারা কাফির ও যালিম তারাই মহান আল্লাহ পাক এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ-এর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে থাকে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ যা বলেননি, তা বলেছেন বলে এবং যা বলেছেন তা বলেননি বলে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, প্রচলিত ছয় উছূল ভিত্তিক চিল্লাওয়ালা তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস মেওয়াতী তার মালফুজাতে বলেছে, “হ্যাঁ, ইহা ঠিক যে, নামায, রোজা উচ্চাঙ্গের ইবাদত; কিন্তু দ্বীনের সাহায্যের কাজ নয়।” (নাঊযুবিল্লাহ) (মাওলানা ইলিয়াসের অমর বাণী/পৃষ্ঠা-১৮)
অথচ, দ্বীন ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে দু’টি হচ্ছে নামায ও রোযা।
সে আরো বলেছে, “আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম যদিও মা’ছূম (নিষ্পাপ) এবং মাহফুজ (সংরক্ষিত) এবং ইল্ম ও শিক্ষা-দীক্ষা সরাসরি আল্লাহ পাক-এর তরফ হইতেই লাভ করিয়াছেন, তথাপি যখন তাঁহারা সেই তালীম ও হিদায়েতের তাবলীগের জন্য সাধারণ তবকার লোকের সহিত মিলামেশা করিতেন তখন তাঁহাদের মুবারক ও নূরানী অন্তরসমূহে সেই সাধারণ লোকদের অন্তরের ময়লা ও আবর্জনা প্রতিফলিত হইতো। অতঃপর নির্জনে বসিয়া জিকির ফিকিরের দ্বারা সেই ময়লা আবর্জনা ধৌত করিয়া ফেলিতেন।” (নাঊযুবিল্লাহ)
সে আরো বলেছে যে, সূরায়ে মুজাম্মেলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাহাজ্জুদের জন্য হুকুম দিয়া যে বলা হইয়াছে, “হে রসূল! দিনের বেলায় আপনাকে অনেক চলাফেরা করিতে হয়” ইহার মধ্যে এই কথার দিকেও ইশারা রহিয়াছে যে, নবীদের সাইয়্যিদ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও মানুষের ময়দানে ঘুরাফেরা করার দরুন রাত্রির অন্ধকারে নির্জনে বসিয়া ইবাদত করার প্রয়োজন ছিল।” (নাঊযুবিল্লাহ) (মাওলানা ইলিয়াসের অমর বাণী/পৃষ্ঠা-৬৬)
মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহ পাক-এর লা’নত। নবী-রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপকারী মাওলানা ইলিয়াস মেওয়াতী আরোও বলেছে, “মিলাদের ব্যাপারেও ঐ একই উক্তি যে, যদি কেউ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে হাযির-নাজির মনে করে কিংবা বিদয়াতীদের সাথে সামঞ্জস্যতা হয় তাহলে তা নাজায়িয।” (মাকাতীবে মাওলানা ইলিয়াছ/ পৃষ্ঠা-৮৮)
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-এর আক্বীদা হচ্ছে- আল্লাহ পাক উনার কুদরত ও ইল্ম দ্বারা হাযির ও নাযির। আর মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানের জন্যই “রহমতুল্লিল আলামিন” করেই সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম “রহমতুল্লিল আলামিন” হিসেবে দুনিয়া-আখিরাত উভয় জাহানেই হাযির ও নাযির। (সুবহানাল্লাহ)
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদা অর্থাৎ পূর্বপুরুষগণও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তাদেরকেও তোমাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গুমরাহ করতে পারবে না এবং ফিৎনায় ফেলতে পারবে না।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখে না যে, বিশ্বের সব মুসলমানকে প্রচলিত ছয় উছূল ভিত্তিক চিল্লাওয়ালা তাবলীগ জামাত হতে সতর্ক-সাবধান ও দূরে থাকতে হবে।
[linkবাতিল ফিরক্বাহ]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:২৩