একটি ছোট ছেলে অনাথ
আশ্রমে বেড়ে উঠছিলো। তার স্বপ্ন
ছিলো সে একদিন পাখির
মতো উড়তে পারবে।
সে বুঝতে পারতো না যে কেন
সে উড়তে পারে না। চিড়িয়াখানায়
তার চেয়ে বড় বড় পাখিদেরকেও
সে খাঁচার ভেতর উড়তে দেখেছে।
সে মনে মনে ভাবতো আমি কেন
পারি না? আমার কি তাহলে
কোনো সমস্যা আছে?
আরেকটি ছোট ছেলে ছিলো,যে
পায়ের
সমস্যার জন্যে ঠিক
মতো হাঁটতে পারতো না।সে স্বপ্ন
দেখতো তার বয়সের অন্য ছেলে-
মেয়েদের মতো সে হাটতে পারছে।
দৌড়ে বেড়াচ্ছে।সে ভাবতো,আমি
কেন
ওদের মতো নই?
একদিন সেই অনাথ
ছেলেটি,যে পাখি হতে চাইতো,সে
হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্র
সৈকতে এসে পড়লো।
সেখানে সে দেখলো যে পঙ্গু
ছেলেটি বালিতে বসে খেলছে।
বালি দিয়ে বাড়ি-ঘর বানাচ্ছে।
পাখি বানাচ্ছে।
তাকে পাখি বানাতে দেখে সে
তার
কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-তুমিও কি পাখির মত আকাশে উড়ার
স্বপ্ন দেখো?
-না। কিন্তু আমি আর সবার
মতো হাঁটতে পারার স্বপ্ন দেখি,
দৌড়ে গিয়ে বাবার কোলে ওঠার
স্বপ্ন
দেখি।
তার কথা শুনে ছেলেটি খুব কষ্ট পেল।
সে বললো,
-আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
-অবশ্যই আমরা বন্ধু হতে পারি।
এরপর তারা দুইজন মিলে প্রায়
ঘন্টাখানেক খেললো । তারা মাটির
প্রাসাদ বানালো,
পাখি বানালো,দুজনমিলে অদ্ভুত অদ্ভুত
শব্দ করলো। এক সময় পঙ্গু ছেলেটির
বাবা হুইল চেয়ার
নিয়ে ছেলেটিকে নিতে এলো।
যে ছেলেটি পাখির মত
উড়তে চাইতো সে পঙ্গু ছেলেটির
বাবার কানে কানে কিছু একটা
বললো।
উত্তরে তিনি বললেন
-ঠিক আছে।আমার
কোনো আপত্তি নেই।
ছেলেটি তখন তার পঙ্গু বন্ধুকে বললো,
-তুমি আমার একমাত্র বন্ধু।
আমি যদি কিছু করতে পারতাম
যাতে তুমি আর সবার মতো হাঁটতে আর
দৌড়াতে পারতে তাহলে আমি খুব
খুশি হতাম।কিন্তু
আমি তো তা পারি না।কিন্তু আমি
কিছু
একটা করতে চাই।
এই বলে সে ঘুরে দাড়ালো এবং তার
বন্ধুকে বললো তার পিঠে উঠে বসতে।
সে উঠে বসলে ছেলেটি বালুর উপর
দিয়ে ধীরে ধীরে দৌড়াতে শুরু
করলো।
দৌড়াতেই থাকলো। দৌড়ের
গতি বাড়লে তাদের দুজনের
মুখে সমুদ্রের বাতাস
এসে ধাক্কা দিতে লাগলো।
দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে তার
বাবা চোখের
পানি আটকে রাখতে পারলো না। পঙ্গু
ছেলেটি খুশিতে তার দু হাত
দুদিকে মেলে ঠিক একটি পাখির
মতো উপরে নিচে করতে লাগলো,এবং
চিৎকার
করে বলতে লাগলো
”আমি উড়ছি, বাবা, আমি উড়ছি!”
অন্যের স্বপ্ন পূরণ করুন,আপনার স্বপ্ন
নিজে নিজেই সত্যি হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩