South East university তে মাতৃভাষা দিবসের আগে মেয়েদের একটা প্র্যাকটিস র্যাম্প শো'র ছবি নিয়ে দুইদিন যাবৎ অনলাইন তোলপাড় । মাতৃভাষা দিবসের আগে এমন ভিনদেশী কালচারের অনুকরনে এরুপ র্যাম্প শো অবশ্যই নিন্দনীয় , দৃষ্টিকটু । সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিকে এই বিষয়ে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে এবং ভুল স্বীকার করতে হবে
এইবার ভিন্ন দৃষ্টিতে আমার একটা কথা আছে । আচ্ছা যারা যারা ওইসব ছবি শেয়ার দিয়ে বলছেন -- " জাত গেলো জাত গেলো , দেশটা নষ্ট হয়ে গেল , বাংলাদেশের সংস্কৃতি শেষ ! " - তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা কি লক্ষ্য করেছেন আপনারা যেই ছবি শেয়ার দিচ্ছেন সেটি একটি তরুণী মেয়ের ছবি এবং আপনি সেই মেয়ের অনুমতি না নিয়ে তার ছবি শেয়ার করছেন । আমার জানা মতে সেই মেয়ে এই ছবি অনলাইনে আপ দেয়নি । আপ দিয়েছে অন্য কেউ । অর্থাৎ মেয়েটির অগোচরে তার ছবি নিয়ে তার নামে বাজে উক্তি করা হচ্ছে !
এইবার একবারও কি ভেবে দেখেছেন সেই মেয়ের ছবি এইভাবে পাবলিকলি প্রকাশ করার ফলে সেই মেয়ে এবং তার ফ্যামিলি আজ কি বাজে অবস্থার সমক্ষিন হচ্ছে ? আমাদের সমাজে নারীর একটি ক্ষুদ্র ভুল যেখানে পাহাড় সমান অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় সেখানে মেয়েটির এমন ছবির ব্যাপক প্রচার তার ফ্যামিলির জন্য সমাজে কতোটা বিব্রতকর সেটা নিশ্চয়ই আমরা অনুধাবন করতে পারছি ।
সেই মেয়ে যদি ভুল করে তবে আপনি সেই মেয়েদের ছবি তার অনুমতি ছাড়া প্রচার করে কি আরও বড় ভুল করছেন না ? একজন মেয়েকে প্রকাশ্যে সম্মানহানি করে আপনি দেশের সংস্কৃতির এমন কি উপকার করলেন , বলবেন কি ?
ইচ্ছা করলেই কিন্তু মেয়েটির মুখ ঝাপসা করে দেয়া যেত । দৈনিক পত্রিকায় এখন এমনটি নিয়ম । টিভি মিডিয়াতেও ভিক্টিমের মুখ ব্লার করে দেয়া হয় । কিন্তু অদ্ভুত বিষয় সেটি আমরা কেউ করি নি । বরং ব্যাপক হারে ছবিটি প্রচারের দায়িত্ব নিজ কাঁধে যেন তুলে নিয়েছি ।
একটি পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা বলে প্রকাশ্যে একজন নারীর সম্মানহানি করা হল । অথচ হল না কোন প্রতিবাদ । কেউ কোন শব্দ উচ্চারণ করলো না । একজন নারীকে অপমান করাই কি বাংলাদেশের ঐতিহ্য রক্ষা ? কিন্তু আমাদের বাংলার সংস্কৃতি তো এমন শিক্ষা দেয় না । আমরা দেশকে মা বলতে শিখেছি । আমরা নারীকে সম্মান করতে শিখেছি সেই ছোট বেলা থেকে । তাহলে কিভাবে আমরা একজন মেয়েকে এইভাবে এক্সপজড করে বাংলার সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষা করলাম ? কিভাবে ?
এই প্রতিবাদ এখন হয়তো অনেকের কাছে ভালো লাগবে না । এখন সেই ছবি অনলাইনে হট কেক । তারপরও আমি প্রতিবাদ করে গেলাম । ভেবে দেখবেন । অন্তুত একটিবার হলেও ।প্রতিবাদেরও ভাষা আছে । গঠনমূলকভাবে সুন্দর উপায়ে প্রতিবাদ করা নীতিগত আদর্শেরই একটি উদাহরণ ।
বিশ্বাস করি -- আগে নিজেকে সংশোধিত করতে হবে । তাহলেই দেখা যাবে খুব দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে আমাদের চারিপাশ ।