(ক)
-দেখ , ছেলেটা মেয়ে !
-মানে ?
-আরে দরজায় দেখ ।
শিশিরের কথায় আমি দরজার দিকে তাকালাম । ক্লাস রুমের বাইরে আমাদের স্কুলের ড্রেস পড়ে একটি ছেলে দাড়িয়ে । লিকলিকে শুকনা এই ছেলেকে আগে দেখি নি । ছেলেটির গায়ের রঙ কাঁচা হলদে ফর্সা । মেয়েদের মতো । মাথার চুল পাতলা । কাঁধে লাল ব্যাগ । ব্যাগটা অনেক ভারী । ব্যাগের ভারে সে কুঁজো হয়ে আছে ।
-মে আই কাম ইন স্যার ? ছেলেটি মিহি কণ্ঠে বলল ।
ইকবাল স্যার আটেনড্যান্স খাতা চেক করছিলেন । ছেলেটির কথায় তিনি ঘাড় উঁচু করলেন । ফিতে বাঁধা চশমা নাকের ডগা থেকে ঠেলে চোখে ভালমতো সেট করে ভুরু কুঁচকে বললেন – কি চাই ?
ছেলেটি বলল – স্যার , আমার নাম শুভাশিস সাহা । হেডস্যার বললেন আমার নাম বললে ...
কথা শেষ করবার আগেই ইকবাল স্যার হইচই ঢঙে বললেন – হে হে শুভাশিস । তুমিই তাহলে সেই শুভাশিস । এসো এসো বাবা , কাম ইন ।
ছেলেটি ক্লাসে প্রবেশ করে স্যারের টেবিলের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো । আমাকে খোঁচা দিয়ে শিশির বলল – শুনছোস গলার স্বর । পুরাই মাইয়া মানুষ । এমনকি হাটা পর্যন্ত । মেপে মেপে স্টেপ ফেলে । আল্লাহ্ মালুম প্যান্ট খুললে না জানি কি দেখা যায় ।
শিশির ফিচিক করে হাসি দিল । ছেলেটির গলার স্বর চিকন । চোখ বন্ধ করে শুনলে বোঝার উপায় নেই ছেলে না মেয়ে কে কথা বলছে ।
নতুন ছেলেটির সাথে ইকবাল স্যার কি নিয়ে যেন কথা বলছেন । স্যার মাঝে মাঝেই অট্টহাসি দিচ্ছেন । ছেলেটি গম্ভীর । কিছুক্ষন পর স্যার চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন । টেবিলে উপর ডাস্টার পিটিয়ে শব্দ তৈরি করে বললেন --
- ছাত্ররা , এটেনশন । এটেনশন । আজ তোমাদের ক্লাসে একজন নতুন বন্ধু যুক্ত হতে যাচ্ছে । তিনি শুভাশিসের কাঁধে হাত রাখলেন
এর নাম শুভাশিস সাহা । সে দিনাজপুর জিলা স্কুল থেকে ট্র্যান্সফার হয়ে আমাদের স্কুলে এসেছে । আজ থেকে সে তোমাদের সাথে ক্লাস করবে । শুভাশিসকে আমাদের সবার পক্ষ হতে ওয়েলকাম । ওয়েলকাম টু ময়মনসিংহ জিলা স্কুল ইন ক্লাস সিক্স ।
তারপর স্যার ছেলেটির দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললেন -- তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে পরিচিত হও । আর কোথাও কোন ধরনের কোন সমস্যা হলে সরাসরি আমাকে জানাবে । আমি টিচার্স রুমের ডান পাশের কোনায় বসি । ঠিক আছে ? ক্লাস ক্যাপ্টেন ইমতিয়াজ , শুভাশিসকে একটা সিটে বসতে সাহায্য করো ।
শিশির ফিসফিস করে আমার কানে বলল – ইকবাল স্যার এর চ্যালামিটা দেখতাছস ? পোলারে কি খাতিরটাই না দেখাইতেছে ! পোলায় কি ডিসি এসপির পুত নাকি রে ?
-নতুন ছেলে তো , তাই হয়তো । আমি জবাব দিলাম । যদিও স্যার এর আধিখ্যেতা চোখে পড়বার মতো । নতুন ছাত্র তো মাঝে মাঝেই আসে । তাই বলে স্যার এতোটা ওয়েলকাম ঢং কারও সাথে দেখান না ।
ক্লাস ক্যাপ্টেন ইমতিয়াজ শুভাশিসকে নিয়ে আমাদের বেঞ্চের কাছে আসলো ।
-হীরা , তোদের বেঞ্চে দুইজন আছিস । শুভাশিস তবে এইখানেই বসুক ।
আমি সরে নতুন ছেলের জন্য জায়গা করে দিলাম । ছেলেটি বসলো । ছেলেটির গা থেকে মিষ্টি একটা গন্ধ আসচ্ছে ।নিশ্চয়ই কোন বিদেশী পারফিউম গায়ে লাগিয়েছে ।
ইকবাল স্যার বাংলা ব্যাকরণ পড়ানো শুরু করেছেন । সেই বিরক্তিকর ব্যাকরণ ! আমি বই বের করে ছেলেটির কাছাকাছি মেলে ধরলাম । আমাকে অবাক করে দিয়ে সে তার ব্যাগ থেকে চকচকে নতুন একটি বই বের করলো । আমি জিজ্ঞাস করলাম – দিনাজপুরের সাথে আমাদের সিলেবাসের কি মিল আছে ? একই বই দুই স্কুলে !
ছেলেটি মাথা নাড়ল ।
-না । এক নয় । বেশ কিছু পার্থক্য আছে । বিশেষ করে বাংলা আর ইংলিশ গ্রামার বুক আলাদা । আমরা বাংলায় হোসেন স্যার এর বই ফলো করি ।
-তাহলে তুমি আমাদের বই কই পেলে ?
-আমি তোমাদের সিলেবাস আগেই পেয়েছিলাম ।
আমি কিছুটা কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম – আচ্ছা , তোমার বাবা কি ডিসি এসপি পোস্টের কেউ ?
ছেলেটি কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকালো ।
-না তো । আমার বাবা ব্যাংকে জব করে । সোনালী ব্যাংকে । কেন ?
-না এমনিতেই । আমি ছেলেটির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম
– আমার নাম হীরা আর ও হচ্ছে শিশির ।
ছেলেটি আমাদের দুইজনের সাথে হাত মিলালো । মুখ গম্ভীর । এই ছেলে কি হাসতে জানে না ?
ঘণ্টা বাজলো । এখন সেকেন্ড পিরিয়ড । আমি আর শিশির এই পিরিয়ডের জন্যই অধির আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি । এখন ক্লাস নিতে আসবেন সুরভী মেডাম । মেডাম আমাদের সমাজ বিজ্ঞান ক্লাস নেন । আমরা সমাজ বিজ্ঞান জানবার জন্য আগ্রহী নই । আমরা সুরভী মেডামকে জানবার জন্য আগ্রহী । সুরভী মেডামের মতো এতোটা সুন্দর আমি আর কাউকে দেখিনি ।
আমার কাছে উনার সব কিছু ভালো লাগে । কি অসাধারণ মুখ । কি চমৎকার হাসি । তারচেয়েও অপূর্ব উনার ফিগার । বলিউড হলিউডের নায়িকারা উনার কাছে ধুর ছাই । সুরভী মেডামের কাছে তাবৎ ইউনিভার্স যেন দুধভাত । উনি যখন কথা বলেন কি সুমধুর স্বর বের হয়ে আসে । যেন তিনি আওরঙ্গজেবের যুদ্ধ ইতিহাস পড়াচ্ছেন না , ক্লাস রুমে চমৎকার সুরে গান গাইছেন ।
মেডামের সাথে আমার সবচেয়ে পছন্দের মুহূর্ত উনি পড়া ধরলে বলতে না পারা । পড়া না পারলে তিনি কপাল কুঁচকে স্কেল নিয়ে বেঞ্চের দিকে এগিয়ে আসেন । তারপর দু হাতের তলায় টাশ টাশ শব্দে দুটো করে চারটি বারি বসান । উনার ধারনা তিনি খুব কষে বারি দিয়েছেন । আসলে তা নয় । এই বারি হাজারটা খেলেও কোন অনুভূতি হবে না । এই সময় মেডামের খুব কাছাকাছি থাকা যায় । তার গা থেকে বের হওয়া আশ্চর্য রকমের একটি সৌরভ নাকে ভর করে । আমায় নিয়ে যায় অচিনপুরে । আহা
তবে শিশিরের নাকে নাকি তেমন কোন গন্ধ লাগে না । তার সবচেয়ে পছন্দ মেডামের তলপেট । তিনি সর্বদা শুতির শাড়ি পড়ে ক্লাসে আসেন । আঁচল রাখেন বাম কাঁধে । ফলে বাম পাশ থেকে ভালো মতো লক্ষ্য করলে নাকি উনার দুধে আলতা তলপেট দেখা যায় । শিশিরের মতে এই পেট নাকি একবার যে দেখবে তার জনম সার্থক । মনে হবে এক টুকরো মাখন কেউ চোখে লেপটে দিয়েছে ।
আমি চোখে মাখন লেপটাতে চাই । এরজন্য আমাদের ক্লাসে কথা বলতে হবে । ক্লাসে কথা বললে তিনি খুব রাগ করেন । শাস্তি স্বরূপ ছাত্রদের ক্লাসের সামনে এনে নীল ডাউন করিয়ে রাখেন । বাম পাশে নীল ডাউন হয়ে থাকলে আড়চোখে মেডামের তলপেট দেখা যায় । শিশির এইভাবেই দেখেছে । আমি দেখিনি । শিশির আজ আমায় দেখাবে বলেছে । তাই প্ল্যান আজ আমরা কথা বলে নীল ডাউনের শাস্তি খাবো ।
মেডাম ক্লাসে আসলেন । আজ তিনি খয়েরীর উপর কালো গোল গোল বৃত্ত আঁকা একটি শাড়ি পড়েছেন । চুল খোঁপা করা । বরাবরের মতোই মুখে কোন প্রসাধনী নেই । গলায় চিকন একটা স্বর্ণের চেন চিকচিক করছে । আমার কাছে মনে হল অচিনপুরের সিনেমার কোন নায়িকা এক পুরনো ক্লাসরুমে ঘুরে ঘুরে প্রস্তর যুগের মানুষের ইতিহাস পড়াচ্ছেন ।
-হীরা , আবালের মতো তাকাইয়া থাকিস না । কথা ক
-কি কথা বলবো ।
-যা মনে আসে তাই ক । কথা বলে ধরা খাইতে হবে , নাহলে মেডাম নীল ডাউনের জন্য ডাকবেন না ।
আমি অনেক ভেবেও কথা বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছি না । গতকাল টিএন্ডটিতে আমরা চ্যাম্পিয়নস লীগের কথা শেষ করেছিলাম । আজ সকালে এসেম্বলি ক্লাসে মানিককে বিকালে ধোলাই করবার প্ল্যান কমপ্লিট হয়েছে । তাহলে আর কি কথা বাকি থাকবে ? কিন্তু আমার তো কথা বলতে হবে । আমাকে নীল ডাউন হয়ে মেডামের বাম পাশে যেতে হবে । উনার মাখনসম তলপেট দেখতে হবে । কিন্তু আমি কি কথা বলে ধরা খাবো ?
-দোস্ত আমি তো কোন কথা খুঁজে পাচ্ছি না । তুই কিছু শুরু কর ।
অ্যাই ছেলে তুমি দাড়াও । ক্লাসে কথা বলছ কেন ? আমি কতবার বলেছি আমার ক্লাসে আমি লুকিয়ে কথা বলা পছন্দ করি না । কি কথা বলছিলে উঠে দাড়িয়ে সবার সাথে শেয়ার করো আর বলতে না চাইলে হাই বেঞ্চে কান ধরে দাড়িয়ে থাকো ।
আমি বেকুবের মতো বেঞ্চের উপর দাঁড়ালাম । মেজাজ খারাপ হচ্ছে । মেডাম কেন তার কাছে ডাকল না । কেন হাইবেঞ্চে দাঁড়ানোর শাস্তি দিলেন ? কেন ভাগ্য আমায় এক টুকরো মাখন চোখে লেপটে দিল না ? কেন ? কেন ?
(খ)
টিফিন পিরিয়ড চলছে । আমি আর শিশির মাঠের দক্ষিণ দিকে বট গাছে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে । শিশির উদাস হয়ে বলল – ব্যাপার না দোস্ত , কবি বলেছেন – একবার না পারিলে দেখো আরেকবার ।
-আরেকবার না , বলছেন শতবার
-ও , তাইলে তো আরও ভালো । শতবার দেখবি । তুই যদি শতবার ট্রাই করতে পারস তাইলে অবশ্যই তুই মেডামের মাখন পেট আটানব্বই বার দেখতে পারবি । আজ আনফরচুনেট ভাবে হাই বেঞ্চে তুলে শাস্তি দিয়েছেন । এর পরেরবার আর এমন হবে না । ঠিক ই বাম পাশে নীল ডাঊণ করে রাখবেন । তুই হিম্মত বাড়া দোস্ত । হিম্মত বাড়া
আমি হিম্মত বাড়াবার চেষ্টা করছি এমন সময় দেখলাম নতুন ছেলেটি টিচার্স রুম থেকে বের হয়ে আসচ্ছে । এই ছেলে টিফিন আওয়ারে টিচার্স রুমে করে কি !! তবে কি সে কিছু বুঝে ফেলেছে ? সে তো আজ আমাদের পাশেই তো বসে ছিল । নিশ্চয়ই সে মেডামের বিষয়টা বুঝে নিয়েছে । তারপর ইকবাল স্যার এর কাছে এখন নালিশ জানিয়ে এল ! টিসি । এইবার আমাদের টিসি । বাবা আমাকে কেটে ফেলবেন ।
আমি আতঙ্ক নিয়ে শিশিরের দিকে তাকালাম । শিশিরও ঐ দিকেই তাকিয়ে আছে । আমি বললাম -
-শিশির , আমি যা ভাবছি , তুইও কি তাই ভাবছিস ?
শিশির ছেলের দিক থেকে চোখ না সরিয়ে দুইবার মাথা ঝাঁকালো ।
-এখন ?
-কিন্তু হীরা , আমরা তো মেডামের নাম একবারও উল্লেখ্য করেনি । শুভাশিস বুঝবে কিভাবে ? এইটা সম্ভব নয় ।
আমি শিশিরের কথায় আশা রাখতে পারছি না । ইকবাল স্যার বলেছেন কোন সমস্যা হলেই নতুন ছেলেটি যেন টিচার্স রুমে উনার সাথে দেখা করেন । ছেলে নিশ্চয়ই টিচার্স রুমের ডান কোনায় ইকবাল স্যারের কাছে নালিশ জানিয়ে এসেছে ।
শিশির গলা চুলকাতে চুলকাতে আবারো বলল -- আচ্ছা এমনও হতে পারে ক্লাসের অন্য কোন ছেলে আজ তার সাথে মজা নিয়েছে । তখন শওকত তাকে নিয়ে ক্লাসে খুব হাসাহাসি করছিল । বলছিল – এই মাইয়ারে আইজ খামু । হয়তো শওকত তাকে কিছু বলেছে । তাই সে তার নামে স্যারের কাছে বিচার দিতে গেছিলো ।
আমি শিশিরের কথার জবাব না দিয়ে হঠাৎ ছেলেটিকে ডাক দিয়ে বসলাম
– শুভাশিস , এই শুভাশিস ।
শুভাশিস তাকাল । আমাদের দেখে এগিয়ে আসতে থাকলো । ছেলেটি এইভাবে কড়া চোখ নিয়ে এগিয়ে আসচ্ছে কেন ? আমার ঘাম হচ্ছে । খুব ।
ছেলেটি কাছাকাছি আসতেই শিশির বলল – ভাই , তুই টিচার্স রুমে কেন গিয়েছিলি ? কিছু হইছে ? হীরার গলার স্বর রীতিমত কাঁপছে । শুভাশিসকে সে তুমি থেকে ডিরেক্ট তুই বলা শুরু করেছে সেটা বোধহয় নিজেও খেয়াল করেনি ।
ছেলেটি অবাক হয়ে বলল – কি হবে ?
-না , মানে , তুই হঠাৎ ইকবাল স্যার এর কাছে গেলি । কোন সমস্যা ছাড়া তো আর যাস নাই ! ভাই , এতো রাগ করলে কি চলে । আমরা না হয় একটু ...
শিশিরকে কথার মাঝপথেই সে থামিয়ে দিয়ে বলল -- আরে আমি ইকবাল স্যারের কাছে কেন যাবো ? আমি গিয়েছিলাম মা 'র কাছে
-মানে কি ?
-মানে হল তোদের সমাজ বিজ্ঞান টিচার সুরভী সাহা আমার মা হোন । আমি গিয়েছিলাম তার কাছ থেকে টিফিন বক্স নিয়ে আসতে । ছেলেটি তার হাতের হলুদ টিফিন বক্স দেখালো ।
আমি এতো বড় ধাক্কা আগে কক্ষনো খাইনি । দেখলাম বিস্ময়ে শিশিরের মুখ হা হয়ে গেছে ।
-সুরভী মেডাম তোমার মা !
-হুম । মা আগে দিনাজপুর জিলা স্কুলে ছিলেন । সেখান থেকে মাসখানেক আগে ট্র্যান্সফার হয়ে এখানে আসেন । বাবা ঢাকায় চাকুরীতে । দিনাজপুরে আমি একা ছিলাম । তাই আমাকেও ট্র্যান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে এই স্কুলে আসতে হয়েছে । এখন থেকে মা আর আমি একসাথে থাকতে পারবো ।
কথাগুলো বলে ছেলেটি হাসল । এই প্রথম তাকে হাসতে দেখলাম । কি সুন্দর করেই না হাসচ্ছে ।
সে তার টিফিন বক্স খুলে আমাদের দিকে এগিয়ে দিল
- এই নাও , গাজরের হালুয়া । মা আজ সকালে বানিয়েছে । অনেকটুকু আছে । শেয়ার করে খাওয়া যাবে ।
শিশির বোকা বোকা মুখে হালুয়া তুলে মুখে ভরলো । আমি হালুয়া হাতে নিলাম । কিন্তু মুখে দেয়ার রুচি পাচ্ছি না । আমার কেবল ই মনে হচ্ছে এই কিছুক্ষন আগে আমি এই ছেলের ঠিক পাশে বসে তার মা’র নামে নোংরা চিন্তা করেছি ।
ছেলেটির গা থেকে ঘ্রাণ আসচ্ছে । খেয়াল হল এই ঘ্রাণ সুরভী মেডামের গা থেকেও আসে । নীল ডাউন হয়ে আজ আমি যে বেনামী শাস্তি প্রত্যাশা করছিলাম তার চেয়ে বহুগুণ বেশি শাস্তি আমি এখন এই সৌরভে পাচ্ছি । মিষ্টি এই ঘ্রাণ আমার নাকে আসচ্ছে আর আমার মগজ জানান দিচ্ছে – হীরা তুই নোংরা । তুই একটা নোংরা মগজের মানুষ হীরা ।
মগজের শাস্তি হয়তো দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন শাস্তি । আমি এই শাস্তি সহ্য করতে পারছি না । আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছে নতুন ছেলেটির পা জড়িয়ে ধরতে । আমি কিভাবে শুভাশিসের পা জড়িয়ে ধরবো ? আমার একটি উপায় বের করতেই হবে , শুভাশিসের পা জড়িয়ে ধরবার উপায় ।
------------------------------------------------------------------
অনুগল্প - যৌনাবেগ - গৃহশিক্ষক এবং
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১৫