বর্তমান সময়ে পবিত্র ইসলাম কী তা বুঝতে হলে প্রথমেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পবিত্র দ্বীন ইসলামের অবস্থান কী তা বুঝতে হবে।
শুরুতেই যে বাস্তবতাটি উপস্থাপন করা হবে তা অনেকের মনোজগতে ধাক্কা দিতে পারে; তবে যুক্তির আখরে তা নিশ্চিত পরিচ্ছন্নতা পাবে। বিশ্বের সকল মুসলমান জানে এবং বিশ্বাস করে যে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল বিশ্ব পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু। তবে বিশ্বের খুব কম মুসলমানই জানে কিংবা বিশ্বাস করে যে, ইসরাইলের ইহুদীদের চেয়েও অনেক ভয়ঙ্কর অপ্রকাশ্য শত্রু হচ্ছে সউদী আরবের রাজতন্ত্র; যারা কিনা পবিত্র দ্বীন ইসলামের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে পবিত্র ঈমান ও আক্বীদার দিক থেকে। আখিরী যামানার মুসলমান, ধর্মীয় জ্ঞানে গণ্ডমূর্খ তাই বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারে না। পৃথিবী ঘুরে ভ্রান্ত আক্বীদার যত সন্ত্রাসবাদী কিংবা তথাকথিত গণতান্ত্রিক ইসলামিক দলগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সকলের লেজের গোড়াটা পাওয়া যাবে ওই সউদী আরবের রাজার হাতে।
অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বলেই সউদী রাজতন্ত্রের সাথে গত ৬৮টি বছর যাবৎ ইসরাইল-আমেরিকা তথা ন্যাটোর সাথে রয়েছে অকৃত্রিম এবং গভীর এক সম্পর্ক। যখন ওবামা ৭টি মুসলমান দেশে তাদের ড্রোন দিয়ে নির্বিচারে নিরীহ জনসাধারণ শহীদ করে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে সউদী রাজতন্ত্রকে তারা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সরবরাহ করে। আফসুস! বর্তমান যামানার মুসলমানেরা এরপরও ধর্মীয় দিক নির্দেশনার জন্য সউদী আরবের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ধর্মীয় জ্ঞানে সমপর্যায়ের গণ্ডমূর্খ বাংলাদেশী মুসলমানরা, তাই এদেশেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম একই ধরনের হুমকির মধ্যে অবস্থান করছে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ্য ইসলামবিদ্বেষী ইসরাইলের মতো এদেশেও জন্ম দেয়া হয়েছে প্রকাশ্য ইসলাম বিদ্বেষী একদল নাস্তিক ব্লগারদের। এরা দায়িত্ব নিয়েছে এদেশ থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম নামের ধর্মকে সমূলে ধ্বংস করার। নাঊযুবিল্লাহ! জাতির জন্য দুর্ভাগ্য যে, বর্তমান সরকারি দলের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা সরকারের দুশমনরা এদের ধারক-বাহক। আর অন্যদিকে এদেশে পর্দার আড়াল থেকে সউদী রাজার নেতৃত্বে অবস্থান নিয়েছে ভ্রান্ত আক্বীদার জামাত-শিবির। সউদী রাজার মতো এদেরও দায়িত্ব এদেশের পবিত্র দ্বীন ইসলামকে আক্বীদার দিক থেকে (ভিতর থেকে) ধ্বংস করা। ১৯৭১ সালে এদেশের পবিত্র দ্বীন ইসলাম ধ্বংস করার জন্য তারা চরিত্রহীন, মাতাল ইয়াহিয়া খানের সাথে যোগ দিয়েছিল। আবার এরাই বিএনপি’র শাসনামলে ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে জেএমবি আত্মঘাতী বোমারুদের জন্ম দেয়।
৬৪টি জেলায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জেএমবি’র আত্মঘাতী বোমারুরা একই সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। দেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিত করার লক্ষ্যে। উক্ত কাজে স্থানীয়ভাবে বোমাবাজির সর্বপ্রকার সহায়তা এসেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম সংক্রান্ত ভ্রান্ত আক্বীদা এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের সউদী আরব থেকে। তৎকালীন বিএনপি সরকার বিষয়টি যেমন বুঝতে পারেনি ঠিক তেমনিভাবে বর্তমান সরকারও আজ ‘র’ পরিচালিত নাস্তিকতার বিষয়টি বুঝতে পারছে না। যারা নিজেকে নাস্তিক দাবি করছে আসলে ওরা নাস্তিক নয়; বরং মগজ ধোলাইকৃত একদল ইসলামবিদ্বেষী এবং পেইড এজেন্ট। এদের সংখ্যা এতই নগণ্য যে মুসলিম অধ্যুষিত মুসলমানের দেশে এদের অস্তিত্ব সামান্য ঝড়-বাতাসেই বিলীন হয়ে যেতে বাধ্য। এদেশের ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা পর্যন্ত ওইসব ইসলামবিদ্বেষীদের উপর বীতশ্রদ্ধ। এরা আন্তর্জাতিক সহানুভূতি তাদের পক্ষ নেয়ার জন্য রাতের অন্ধকারে নিরীহ হিন্দুদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, প্রতিমা ভেঙে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মতো এত অভিজ্ঞ একটি রাজনৈতিক দল এদেশের ১৬ কোটি মানুষের চেতনাকে উপেক্ষা করে গুটিকতক ইসলামবিদ্বেষীদের সম্পর্কে কেন সঠিক ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা এখন নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চিন্তার খোরাক।
যে যাই বলুক, বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলে এদেশের পবিত্র দ্বীন ইসলাম ভয়ঙ্কর এক ক্রান্তিলগ্ন পার করছে।