somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরকারের এ দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী দ্বিমুখী নীতির শেষ কোথায়?

০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোহিঙ্গাদের জীবনের আশ্রয়টুকু দেয়ার মত ন্যূনতম মানবিকতা প্রদর্শন করতে সরকার ব্যর্থ ও নির্মম হচ্ছে কিন্তু সরকারের চোখের সামনেই ৫ লাখ ভারতীয় মুশরিক এদেশে মোটা অঙ্কের টাকা কামাই করে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করছে!

দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই কাজ করছে পাঁচ লাখের বেশি বিদেশি নাগরিক। তৈরি পোশাক শিল্প, বায়িং হাউস, আইটি ও টেলিকম সেক্টর, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, রেস্টুরেন্ট, প্রিন্টিং প্রেস এবং এনজিওসহ নানা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে তারা। তাদের বেশির ভাগই এদেশে ‘ট্যুরিস্ট ভিসায়’ এসে আর ফেরত যাচ্ছে না। কাজের ক্ষেত্র খুঁজে নিয়ে থেকে যাচ্ছে বাংলাদেশেই। এসব অবৈধ অভিবাসীর প্রকৃত পরিসংখ্যান সরকারি কোনো সংস্থার কাছে নেই। পুলিশও তাদের খুঁজে পায় না।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে এবং প্রভাবশালীদের ক্ষমতাবলেই বাংলাদেশে থেকে যাচ্ছে এসব বিদেশি।

রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে তৈরি পোশাক শিল্পেই কমপক্ষে ১৫ হাজার বিদেশি কাজ করছে। তাদের বেশির ভাগই ভারতীয় নাগরিক। ঢাকার বাইরেও তদের সংখ্যা অনেক। জানা যায়, ‘ট্যুরিস্ট ভিসায়’ তিন বা ছয় মাসের মেয়াদে বাংলাদেশে এসে এসব ভারতীয় বিভিন্ন গার্মেন্ট ও বায়িং হাউসে কোনোপ্রকার ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই চাকরি করছে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মাঝে মাঝে দেশে ফিরে গিয়ে সপ্তাহখানেক পর তারা আবারও বাংলাদেশে আসছে। তারা চাকরির বেতন পাঠাচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে।
এদিকে একাধিক সূত্র দাবি করেছে, বাংলাদেশে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে একাধিকবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে পাঁচ লাখ ভারতীয় অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২-৩ আগস্ট ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাসরত ৫ লাখ ভারতীয় নাগরিককে ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলেও ভারত তাতে সায় দেয়নি। বরং তারা বরাবরের মতোই অভিন্ন সুরে দাবি করেছে, ভারতেই নাকি অবৈধভাবে সোয়া কোটি বাংলাদেশী বসবাস করছে। কিন্তু তারা এ অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

সূত্রমতে, দেশের পাঁচটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের সবগুলোতেই অনেক বিদেশি নাগরিক কাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের পাঁচটি বিদেশি মালিকানাধীন মোবাইল ফোন কোম্পানিতে অন্তত এক হাজার বিদেশি নাগরিক কর্মরত। আবার তারা সবাই বাংলাদেশী কর্মরতদের তুলনায় বেতন পাচ্ছে অনেক বেশি। তাদের অধিকাংশই মোবাইল ফোন এক্সপার্ট বা টেকনিশিয়ান। তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে কয়েক মাস কাজ করেই আবার দেশে ফিরে যায়।

অনুসন্ধানে এটাও জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ভারতীয় ব্যক্তিমালিকানায় গার্মেন্ট রয়েছে দু’শতাধিক। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২০ থেকে ২৫টি। বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকদের বেশির ভাগই ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ব্যবসায়ী হিসেবে পাসপোর্ট বানিয়ে বাংলাদেশের ভিসা সংগ্রহ করে। এদেশে এসে তারা নানা মহলকে সন্তুষ্ট রেখেই বিভিন্ন নামে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ পাচার করছে।

বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে তাদের কাছে নিবন্ধিত বায়িং হাউসের সংখ্যা ১৪শ’র বেশি। এর বাইরে আরও কিছু বায়িং হাউস রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত পাঁচশ’ বায়িং হাউস নামে-বেনামে বিদেশিরা চালাচ্ছে। আর অধিকাংশ বায়িং হাউসের মূল মালিক ভারতীয়। এসব বায়িং হাউসে প্রচুর ভারতীয়সহ বিদেশিরা কাজ করছে। এছাড়াও তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রীলঙ্কার নাগরিকরাও কর্মরত রয়েছে। আর বস্ত্রখাতে রয়েছে পাকিস্তানিরা।

তবে বাংলাদেশে কী পরিমাণ বিদেশি নাগরিক বৈধ বা অবৈধভাবে কাজ করছে এমন কোনো তথ্যই নেই সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়ের কাছে। নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইমিগ্রেশন বিভাগে এসব তথ্য থাকার কথা। কিন্তু ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছে বাংলাদেশে অবৈধভাবে কর্মরতদের কোনো তথ্য নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ইচ্ছে করলেও হঠাৎ করে তা কাটিয়ে ওঠা যাবে না। বৈধ বা অবৈধ অভিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ নেই। তবে কিছু বিচ্ছিন্ন তথ্য আছে যা দেয়া সম্ভব নয়।’ অন্যদিকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) নিজ উদ্যোগে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে বলে জানা গেছে। কিন্তু সেখানেও রয়েছে নানা জটিলতা। এসবির ইমিগ্রেশন বিভাগ শুধুই বিমানবন্দর হয়ে যারা বাংলাদেশে ঢোকে, তাদের হিসাব রাখে।

কিন্তু বাংলাদেশে ঢোকার পর এসব বিদেশি যথাসময়ে দেশে ফিরে যায় কিনা এমন কোনো তথ্য থাকে না এসবির কাছে। আবার এসব তথ্য নেই বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। বিদেশিদের বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থান, তাদের আনাগোনা সম্পর্কে সুষ্ঠু পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার কোনো ব্যবস্থাই নেই প্রশাসনের।

বাংলাদেশে বিদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট প্রসঙ্গে নীতিমালায় বলা আছে, বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের কর্মসংস্থানের জন্য ওয়ার্ক পারমিট অপরিহার্য। বেসরকারি খাতের কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান যদি বিদেশি নাগরিককে নিয়োগ দিতে চায়, তাহলে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্ধারিত ফরমে আগেই আবেদন করতে হবে। কিন্তু রাজস্ব ফাঁকি দিতেই সব প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ বোর্ড এড়িয়ে চলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে অবস্থানকারী নিখোঁজ বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে অধিকাংশই ভারত, ক্যামেরুন, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, ঘানা, কঙ্গো, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, সুদান, তাঞ্জানিয়া, উগান্ডা ও শ্রীলঙ্কার নাগরিক। তবে ঠিকানা পরিবর্তন করায় এসব বিদেশিকে খুঁজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগ।

জানা গেছে, এসব অভিবাসী কোনো কোনো ক্ষেত্রে একবার ওয়ার্ক পারমিট নিলেও তা আর নবায়ন করে না। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে এবং প্রভাবশালীদের ক্ষমতাবলেই বাংলাদেশে থেকে যাচ্ছে এসব বিদেশি। কখনও কখনও তারা এদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অন্যদিকে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশি যোগ্য নাগরিক।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাধীন দেশে বিদেশীদের সাথে স্বদেশীদের এরূপ বৈষম্য কোনোভাবেই চলতে পারেনা। অপরদিকে বিদেশীদের দ্বারা যে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে তাতেও সরকার বসে থাকতে পারে না। স্বাধীন দেশে স্বদেশীদের পরিবর্তে বিদেশীরা সম্পত্তির মালিক বনে যাচ্ছে এটাও সরকার বরদাশত করতে পারেনা। অপরদিকে প্রণিধানযোগ্য যে, সরকার এদেশে মুশরিক ভারতীয়দের লাখে লাখে কামাই রোজগার করতে দিচ্ছে কিন্তু মুসলমান রোহিঙ্গাদের জীবনের আশ্রয় দেয়ার মতো ন্যূনতম মানবিকতা প্রদর্শন করছে না।

মূলত: সরকারের অবস্থা হয়েছে- চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায়না, কান আছে তবু শুনতে পায়না, অন্তর আছে কিন্তু বুঝতে পারেনা। সরকারের দিলে মহর পড়ে গেছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে বাদ দিয়ে জনগণেরই জনসচেতন হওয়া ব্যতিরেকে কোনো উপায় নাই।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:২৭
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×