এক.
কপাল মুছে দিতে দিতে মা বলল, যদি ধইরা নিয়া যাইত?
মুহূর্তে কঠোর হয়ে ওঠে আফজালের ষোল বছর বয়েসি এখনো সেজে না ওঠা চেহারাটা, নিলে নিত।
-হায়রে আমার মরণ! নিলে তুই বাঁইচা ফিরতি?
-না ফিরলে নাই।
-আমার আর আছে কে রে বাবা? তুই কেন্ গেলি? কে লইয়া গেল তোরে?
-অগো কত্তবড় সাহস! নবীজীরে নিয়া কাঠুন করে।
-কারা করসে কাঠুন?
-অইযে, ঢাকার বলগারগুলা। শাহাবাগে নবীজীর কাঠুন দিয়া ফাঁসি দিসে। অরা ইন্টারনেটে ফেসবুক করে। আমিও দেখছি। হাজার হাজার কাঠুন করসে নবীজীরে নিয়া।
দুই.
-হুযুরের বাসা দি তুঁয়ার কি দরকার?
-আঁই যাইমদেরি।
-ইন কোনো খতা না অর। পুয়া, এইক্কায়। ন যাইস, এইক্কায়।
মাত্র পুরুষ্টু হতে থাকা শরীরটা নিয়ে জোর ছুট দিল রিদওয়ান। তীব্র চিৎকার করতে করতে পিছনে ছুটে এল কিছু মানুষ। জাপটে ধরল তাকে। রিদওয়ান কাঁপছে। কাঁপছে ওর সাড়ে চোদ্দ বছর বয়েসি লকলকে শরীরটা। ও সব বাদ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে রাখল পাঞ্জাবীর পকেটে।
ওকে এই পকেটটা আগলে রাখতে হবে। কেউ যেন নিতে না পারে এই পকেটে রাখা তালিকা। তাহলে আরো দশজন সাথীভাই ধরা পড়ে যাবে। সাঈদী সাহেবকে যারা ভুল তাফসিরকারক বলে, সেইসব ভন্ড আলেমদের শাস্তি দেয়া আর হবে না।
সব বাদ দিয়ে রিদওয়ান তীব্রমুষ্ঠিতে চেপে ধরে রাখে শুধু তালিকাটা।
তিন.
For Allah (SWT) I am, was and will be there.
শেষ টুইট করেই নির্ঝর লম্বা করে দম নিল। আজকাল চোখ বন্ধ করলেই একটা ১২৮০X৭৬০ ওয়ালপেপার ওর চোখজুড়ে ভেসে ওঠে। মিশকালো ব্যাকগ্রাউন্ডে সোনালি ক্যালিগ্রাফিতে কালিমা আঁটা। একপাশে উড়ছে পতাকা। আর বড় বড় করে লেখা, খিলাফাত আলা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ্ ।
আইপি হাইড সফটওয়্যার দিয়ে লগইন করল ফেসবুকে। ইনবক্স এসেছে। ইটস আ গো। ওরা হয়ত গণতন্ত্র করে, কুফরি। কিন্তু নির্দেশ এসেছে, একসাথে কাজ করতে হবে। আজকে গণতন্ত্রই ওদের ধ্বসিয়ে দিল। হায় গণতন্ত্র!
ওর ভাল লাগে না কুফরি মতবাদে বিশ্বাসীদের সাথে একত্রে কাজ করতে। কিন্তু উপায় নেই। আজ সব মুসলিমকে এক করে নিয়ে নামতে হবে।
তারপর নেমে গেল ও, ব্যাকপ্যাকে ভোঁতামতন কয়েকটা ধাতব অস্ত্র নিয়ে।
চার.
সৌদি আরবে সাত যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত
« আগের সংবাদ পরের সংবাদ»
সৌদি আরবে গতকাল মঙ্গলবার সাত যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা ছিল। তবে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে দণ্ড বাতিলের আহ্বান জানানোর পর মৃত্যুদণ্ড গতকাল কার্যকর করা হয়নি। দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকদের স্বজনেরা গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০০৬ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় আছির প্রদেশে ওই যুবকেরা একটি অলংকারের দোকানে সশস্ত্র ডাকাতি করে ধরা পড়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সৌদি আরবের ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে ২০০৯ সালে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘটনার সময় তাঁরা সবাই অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন বলে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড এত দিন কার্যকর করা হয়নি। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাদশাহ আবদুল্লাহ তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি অনুমোদন করেন।
মানবাধিকার সংস্থা দুটি আলাদা দুটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই সাতজনের বিচার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হয়নি। তাঁদের আটক করে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে। বেধড়ক মারপিট করে, দিনের পর দিন খেতে না দিয়ে, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। সংস্থা দুটির অভিযোগ, এ ধরনের নির্যাতন করে তাঁদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। এ ব্যাপারে তাঁদের কাছে যথেষ্ট তথ্য ও প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেছে সংস্থা দুটি। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এইচআরডব্লিউর উপব্যবস্থাপক এরিক গোল্ডস্টেইন বলেন, ওই যুবকদের শাস্তি কার্যকর করা হলে সৌদি আরব চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দেবে। অপরদিকে অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ওই সাতজনকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে চলতি বছরে ১৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এএফপি
শূন্য.
মনে বাবলা পাতার কষ লেগেছে ... বাংলার একটি মরমি লোকগানে শুদ্ধতার জন্য আর্তনাদ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১