সামু আমাকেও খেল।
পোস্ট দিব না, বসব না। কিন্তু মন শোনে কার কথা! পাঁচ মিনিটের ব্যাটারি ব্যাকাপ নিয়ে বসেছি।
তো, দুনিয়ার সবচে সরল ও সংক্ষিপ্ত ধ্যানটা করেই ফেলি? এটা করিয়ে নিয়মিত ধ্যানী- এমন দুজনকে চমকে দিয়েছিলাম।
বেসিক্যালি ইহা হয় একখানা লিসানি রেসিপি।
নির্জন ঘর, নিজের বিছানা। অলস সময়, সকাল-ঝিম ধরানো দুপুর বা নিশ্চিন্ত রাত। ফোনটা সুইচ অফ করে শুয়ে পড়ুন। মাথার নিচে বালিশ নাই, শরীরে কোন ঘড়ি-আংটি টানটান জিনিস নাই।
সোজা চিৎ হয়ে শুয়ে, হাত দুটা দুপাশে রেখে, চোখটা উপরদিকে, নিজের সিলিঙে কিছুক্ষণ ধরে রাখা। হয়ত ত্রিশ সেকেন্ড বা মিনিটখানেক।
আলতো করে বন্ধ হয়ে যেতে দিন। তারপর, পুরনো বন্ধুর সাথে খুনসুটির কথা মনে পড়লে যেভাবে একটা দীর্ঘশ্বাস নিবেন, সেভাবে বার কয়েক।
শ্বাস নিয়ে পুরোটা বের করে দিন। আবার নিন।
এবার কোন ভাবনা নাই, কিসসু নাই। চোখে শুধু অন্ধকার। অন্ধকারকে অনুভব। উপভোগ।
আরে, আপনি তো শুয়ে আছেন একটা পাহাড়ি নদীর পাশে। সমতল বালিভূমিতে। মৃদু সকালের রোদ্দুর এসে পড়ছে মাথার উপরের নারকেল গাছটার ফাঁকফোঁকর বাউলি কেটে।
উফ, কেউতো আর আশপাশে নেই, খালি পিঠটার নিচে বালির কণাগুলো দারুণ মাসাজ দিচ্ছে।
কিন্তু আস্তে আস্তে পানির শব্দ বাড়ছে কেন?
নড়াচড়া করার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছেন আপনি। পানির শব্দে মাতাল অনুভব।
এইরে, পিঠের নিচের বালি ভেজাভেজা লাগে ক্যানো?
অনুভূতি ছেয়ে যাচ্ছে বালি ভিজে ওঠার অপরূপ অনুভবে।
তীব্রতর হয়ে উঠছে পানির শব্দ।
তারপর, মৃদুমন্দ ঢেউয়ের ধাক্কা গায়ে। আস্তে আস্তে হালকা শোলার মত ভেসে যাচ্ছেন পানিতে।
একটু একটু করে নদীর গভীরে। স্রোত আরো চাঙা। পানির ঝাপটা। চোখের উপর। নাকে, মুখে। শোলার ডিঙি হয়ে ভেসে যাওয়া।
উলটপালট। হাতে, পায়ে, মাথায়, গায়ে।
কখনো মৃদু ঝাপটা, কখনো তীব্র ধাক্কা আর খরস্রোতে শুধু বয়ে যাওয়া।
তারপর, হঠাত করেই তলিয়ে যাচ্ছেন আপনি।
এবং অদ্ভুত এক ভাললাগা। নদীর স্রোতের ধাক্কায় ডুবো পাহাড়ে আরামদায়ক আঘাত, যেন মাসাজ জানা কোন দক্ষ শিল্পীর ছোঁয়া।
পানির টান, সেখানে গায়ের ওজনের সাথে ওঠানামা।
এরপর, হঠাৎ করেই টের পেলেন, নিচ থেকে পাথরগুলো সরে সরে যাচ্ছে।
খরস্রোতা নদী আপনাকে নিয়ে হাজির হয়েছে অন্য কোন বালিচরে।
আবার বালুর মিহি অনুভব সারাগায়ে মাখা।
আস্তে আস্তে জলের চলে যাওয়া।
এবার একটু নড়ে উঠুন তো! হু... দারুণ একটা আবেশ।
হাত-পা নাড়তে নাড়তে খুলে ফেলুন চোখ।
বিশাল ধ্যান শেষ করেছেন, কংগ্র্যাটস নিবেন না?