বিকেল ৪ টা নাগাদ সবায় মনের মধ্যে সাজেক পৌছানোর তীব্র আকাঙ্খা নিয়ে চাঁদের গাড়ীতে বসলাম ৷ এদিকে আমার পায়ের অবস্থা খুব ই খারাপ,দাড়ানোর মতো ক্ষমতা নেই ৷ জুম্মান ভাইয়ের চাঁদের গাড়ী চলতে শুরু করলো সাজেক এর পথে ৷ গ্রুপের সবার মনে একটাই প্রশ্ন ক্যাম্প থেকে আমাদের কে ছাড়বে কীনা,এই হরতালের মধ্যে ৷ ১ ঘন্টা পথ পেরিয়ে ক্যাম্প এ পৌছালাম ৷ জুম্মান ভাই আর আমি গাড়ী থেকে নেমে ক্যাম্পের কর্মকর্তা কে সবার ডিটেইল্স দিলাম,এতো জল্পনা-কল্পনার ক্যাম্প থেকে আমাদের খুব সহজেই ছেড়ে দিলো ৷ গাড়ী ছুটলো সাজেক এর পথে ৷ আঁকাবাকা সর্পিলাকার পথ এ চড়তে এক অন্যরকম আমেজ ৷ সাজেক পৌছাতে পৌছাতে রাত ৮ টা ৷ সাজেক পৌছে আরেক কাহিনী,ক্লাব হাউজ বুকিং দিয়েছিলাম লক্ষ্মন কে দিয়ে ৷ সে এক দিনে ৩ টা গ্রুপ কে বুকিং দিয়েছে,অবশ্য আমি ১ মাস আগে থেকে পুরো ক্লাব হাউজ বুকিং করে রেখেছিলাম ৷ পরে জুম্মান ভাইয়ের সাহায্যে মারুতি দিদির রিসোর্ট এ ১৪ জনের ব্যাবস্থা করলাম,আর আমি সহ বাকি ৪ জনের ব্যাবস্থা হলো আদিবাসীদের ঘরে ৷ সবায় ফ্রেশ হয়ে সাজেক এর পিচঢালা পথ এ হাটতে লাগলাম ৷ অদ্ভুত ঠান্ডা এক পরিবেশ,কিছুটা ভয় ও লাগছিলো আমার ৷ রাতের খাবার সবায় খাই মারুতি দিদির হাতের রান্নায় ৷ রাত দেড়টা পর্যন্তে জাগার সুবাদে বিভিন্ন ধরনের ডাক শুনতে পেলাম সাজেক এ ৷ সবায় রাতে ঘুমিয়ে পরলাম,কারন পরদিন ভোর ৪ টায় উঠে কংলাং পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে হবে মেঘ আর সূর্যকে একসাথে দেখার জন্যে ৷
সকাল এ সবায় ৪ টার সময় হাটা দেই পাহাড়ের পথে,আমার পায়ের অবস্থা করুন ৷ প্রতিটা কদম এতটা যন্ত্রনার ছিলো যে কদম কমানোর জন্যে কিছুটা পাহাড়ী পথ দৌড়িয়ে উঠেছি ৷ প্রায় ৪০ মিনিটের পাহাড়ী পথ অতিক্রম করে অবশেষে দেখা মিললো কংলাং এ উঠার সিড়ি ৷ সবার মধ্যে নতুন উদ্দীপনা ৷ বাম পাশে আরেকটু হাটার পর ই আমরা উপস্থিত কংলাং এর সর্বোচ্চ চূড়ায় ৷ সূর্য তখন হালকা উঠেছে,সূর্যকে মনে হচ্ছে লাল এক আগুনের পিন্ড ৷ কেউ ছবি তোলায় ব্যাস্ত,কেউ বিশ্রামে আবার কেউ সৌন্দর্যে বিমোহিত ৷ মেঘ,সূর্য আর পাহাড়ের এক অপরুপ মিলবন্ধন ৷ আমাদের হাতে বেশী সময় নেই, ৮ টার মধ্যে আবার চাঁদের গাড়ী ধরে মারিশ্যার পথে যেতে হবে ৷ তাই সবায় নামতে শুরু করলাম ৷ সকালের নাস্তা টা পাহাড়ের উপরেই কলা,জাম্বুরা,পেয়ারা দিয়ে সারলাম ৷ অনেক টুকু পথ পেরিয়ে ফিরে এলাম রুইলুই পারায় ৷ রুইলুই পারায় সৌন্দর্যে আধুনিকতার ছাপ ৷ রঙ্গীন রুন্ময় রিসোর্ট,স্টোন গার্ডেন,হরিজনটাল পার্ক রুইলুই পারার সৌন্দর্য কে করেছে প্রকৃতির সাথে কিছুটা শহুরে ৷ পিচঢালা পথের দু পাশে আদিবাসীদের ঘর,প্রতিটা ঘরের টিন লাল-সবুজ রং এ করা ৷
ঘুরাঘুরি শেষে ৯ টা নাগাদ আমরা আবার চাঁদের গাড়ীতে উঠি ৷ এবারের গন্তব্য মারিশ্যা থেকে ট্রলারে করে কাট্টলী,কাপ্তাই পেরিয়ে রাঙামাটি ৷
কিছু ছবিঃ
সাজেকের আঁকাবাঁকা সর্পিলাকার পথ
পাহাড় বেয়ে চলছি আমরা কংলাং এর দিকে
তানভীর ভাই আস্তে
সৌন্দর্যে বিমোহিত সবায়
ঐ যে দেখা যায় সূর্যটা
লাল এক আগুনের পিন্ড
কংলাং পারা থেকে সাজেক
কংলাং পারার শেষ গুটি কয়েক আদিবাসী ঘর
আমরা বন্ধুরা
ফোয়েজ ভাই ক্যামেরার সাথে
দোকান লুটপাটে ব্যাস্ত(খাওয়া)
এবারে কংলাং থেকে নামার পালা
প্রকৃতিকে ফ্রেমে বাঁধার গুরুদায়িত্ব বাপ্পি ভাইয়ের
হরিজনটাল পার্ক এ রোমিও ও জুলিয়েট
দোলনাতেও রোমিও ও জুলিয়েট
হ্যালিপেড থেকে তোলা রুন্ময় রিসোর্ট
রুইলুই পারা
রুন্ময় এর সামনে আমি আর বাপ্পি
রুন্ময় রিসোর্ট আর তূর্য ভাই
স্টোন গার্ডেন এ
সাজেক এর রাস্তায় আদিবাসী পিচ্চিরা
চলবে.....
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫