একাকিত্ব উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের খুব পরিচিত শব্দ। আজকাল যেমন তাদের সবার সাথে হই-হুল্লোড়ে থাকা সহজ,তেমনি একা হয়ে যাওয়াটাও খুব সহজ। দীর্ঘদিনের দুই জনের বিপরীত লিঙ্গের সমবয়সী মানুষের মেলামেশার ফলে সহজেই একে অপরের কাছে চলে আসে। চলতে চলতে এক পর্যায়ে তারা একে অপরকে ভালোবাসতেও শেখে। এই ভালোবাসা যে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকায় রূপ নেয়,তা নয়। কোন মেয়ের প্রেমিক থাকার পরও তার বেস্ট ফ্রেন্ড বা কাছের মানুষদের তালিকার উপরের দিকে সহপাঠী বা সমবয়সী কোন ছেলে থাকে, তবে তার প্রতি কোন না কোন ভাবে দুর্বল হতেই থাকে। একটা পর্যায়ে গিয়ে ভালোবেসে ফেলে। এখন এই দুই বিপরীত লিঙ্গের দু'জনের ভালোবাসাটা কি অবৈধ?
মেয়েটি হীনমন্যতায় ভুগতেও পারে। এ পর্যায়ে মেয়েটির প্রেমিক অবশ্যই অসন্তুষ্ট হয়। কাছের মানুষকে অকারণে দূরে ঠেলে দিতে কেউই নারাজ। এক পর্যায়ে শুরু হয় দু'জনের মনোমালিন্য। কোন একটা সময়ে গিয়ে মেয়েটি হয়তো তার প্রেমিকের দিকেই ফিরে যায়, বাকি ছেলেটিকে একা রেখে। এতে মেয়েটি মোটেও সন্তুষ্ট থাকে না। হয়ত অক্ষির অানন্দে তার প্রেমিকার সামনে সব ঠিকঠাক। কিন্তু ভেতরে পরে থাকে তার আশায়। এখন মেয়েটির এ ছেলের প্রতি ভালোবাসাটা কি অবৈধ? না। মেয়েটির মন বলে না। তাই সে তার একাকিত্ব পেতে শুরু করে। কোন একটা সময়ে পৌঁছে সুন্দর একটা সম্পর্কে প্রতি নিয়ত লেগে থাকে তিক্ততা। দৈবক্রমে বা কোন উপায়ে ধরা যাক, মেয়েটি তার আগের বন্ধুটিকে ফিরে পেল। তার প্রেমিকের সম্মতিতে। এক্ষেত্রে ছেলেটি কি মনের দিকে সন্তুষ্ট থাকে? একটা পর্যায়ে সেও তার গুরুত্ব হারাতে থাকে। তার মধ্যে ঢুকে যায় একাকিত্ব। অপরদিকে মেয়েটি সব ঠিক আছে ভেবে দিন পার করে। একটা পর্যায়ে আবারো শুরু হয় মনোমালিন্য। তখন দু'জন দু'জনার মধ্যে প্রবেশ করে অন্য এক ধারণা। একটা পর্যায়ে হাল ছেড়ে দেয় ছেলেটি। ছেলেরা কখনো তার প্রিয় মানুষের কাছে অন্য সমবয়সী বা অন্য কোন ছেলের প্রশংসা শুনতে চায় না। একেবারেই যে অসহ্য, তা নয়। কিন্তু বারংবার হলে,তা অবশ্যই ধৈর্য্য হারায়।
সর্বসাকুল্যে ছেলেটির বোঝা উচিত, মেয়েটিরও ভালো লাগা অাছে। পছন্দ-অপছন্দ আছে। গুরুত্বের ব্যাপার আছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তা মানা বাস্তবিকই বেমানান। আর মেয়েদের ও উচিত গুরুত্বের দিকে খেয়াল রাখা। অপর পক্ষের মানুষটি তোমাকে যেমন গুরুত্ব দেয় তোমার ও তা দেয়া উচিত। তোমার কাছে তোমার পরিবার,খুব কাছের গুটি কয়েক বন্ধু ছাড়া র কারোরই গুরুত্ব তোমার প্রেমিকের তুলনায় বেশি হওয়া অনুচিত। যদি সে গুরুত্ব পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
শেষমেষ সামান্য কিছু মনের ভুলের কারণে অনেক সহজ এবং সুন্দর সম্পর্কের পরিণতি ঘটে তিক্ততায়। আর দু'পক্ষের কারোরই উচিত নয়,অপর পক্ষের বসার স্হানে অন্য কাউকে বসানো। বিষয়টা জটিল বোঝায়। উদাহরণে বলি, মেয়েটির উচিত না, তার ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলো তার প্রিয় মানুষটিকে না জানিয়ে অপর তৃতীয় পক্ষ তথা সমবয়সী অন্য ছেলেকে জানানো। তার ব্যক্তিগত তথ্যাবলী জানার অধিকার সবার আগে তার পরিবার, কাছের বন্ধু আর প্রেমিকাকেই দেওয়া উচিত। আর প্রেমিক-প্রেমিকা দু'জনের মধ্যে অপর পক্ষ কখনোই বেশি বা মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব পাওয়া উচিত নয়। এতে করে একাকিত্ব সহজে গ্রাস করতে পারেনা।