অনেকদিন হলো নীলার সাথে রিকশায় চড়া হয় না। কিছুটা পেছনে ফিরে যাই।
বছর তিনেক অাগে যখন স্কুল লাইফে আশেপাশের বন্ধুরা গদগদ প্রেম করে প্রেমের মহাকাব্য লিখে ফেললো শুধুমাত্র প্রকাশকের অভাবে ছাপানো গেলো না,তখনও আমার প্রেমের স্বাদ মিটলো না। সাথে আরও কিছু পোড়া কোয়াল্লা ছিল আমার মতই।
কি আর করার! ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাসকে দোহাই দিয়ে মেয়ে দেখতাম। গভ. হাই স্কুলে পড়ার সুবিধার্থে সবগুলা মিলা স্কুলের ছাদ হতে চিটাগাং আর মহসিন কলেজের পিউর সুন্দ্রী( তখন ময়দার দাম বেশী ছিল) দেখাটা নৈতিক দায়িত্ব ছিলো! তবে হাঁ, মোটেও খারাপ চোেখ না! সিঙ্গেল ছিলাম ত! আরে কলেজ রোড দিয়ে রিকশায় কোন কাপল দেখলেই ইচ্ছামতো গালাইতাম। আর যদি স্কুলের কোন সমবয়সী বা কাছাকাছি বয়সের মেয়ে যেতো,তবে তো কথাই নেয়! পার্টের ডিব্বা না,সেরা ট্যাংক(ট্যাংকের পাব্লিসিটি করতাছি না ত!) নিয়া ভাবের সাগরে ডুব দিতাম!
স্বুল লাইফ শেষ। কলেজ লাইফের শুরুতে সবার মধ্যে ম্যাচুরিটি চলে অাসল। অনেকের সুপ্ত বাসনাই জাগ্রত হলো যে মেয়ে ফ্রেন্ড বাড়াইতে হবে। অনেককে দেখলাম অাট-ঘাট বাইন্ধা নাইমা পড়ছে।
ভাবতাম আমার চুলের লাইফ,এখনও কোন বান্ধবী জোটাইতে পারলাম না ১১বছরের শিক্ষা জীবনে। কলেজ লাইফের মাঝ পথে আইসাও কেন বান্ধুপুী জুটলো না! দুঃখ রে দুঃখ!
আরও আবেগাপ্লুত আর টাশকি খাইলাম এটা শুনে...
-তোর চাইতে আমার বেশী কথা হয় নীড়ার সাথে। (১ম বন্ধু)
-যা বেডা! তোর বহুত আগের থেকে আমি ওর সাথে কথা বলি।(২য় বন্ধু)
-তোর ইয়া! আমার সাথে ওর স্কুলে থাকতে কথা হতো!(বোম)
- ******
আমার মন তো আর মানেই না। দিন-রাত একটাই কামনা আর বাসনা...বান্ধুবী অথবা
প্রেমিকা! তাই বাসায় এসেই ফেবুতে সমবয়সী মেয়েদের কোপাইয়া রিকু পাঠাতে লাগলাম। মাগার সাদা মনেন ইমেজ ধরে রাখার জন্য সাথে সাথেই আনফলো করতাম। আবারও ভাগ্যের চরম উপহাস। দু'এক জন ছাড়া আর কেউই রিকু এক্সেপ্ট করলো না। ফ্রেন্ডশিপ তো আরও বহুত দূরে। দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়া বইসা বইসা আবার সব ক্যাস্নেল করলাম। আবার তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ পোলাপাইনের কথা ছিল, যে পোলার মাইয়া বান্ধবী যত বেশি হেতে চরম লুইচ্চা!
ইদানিং কলেজে নিশির সাথে কথা-বার্তা হতো। অবশেষে! বাট একটু মনের মধ্যে ইষ্টি-কুলুং চললো আরকি! বুঝেনই তো! বাট হেতির বফ থাকার কারণে আর বাড়াবাড়ি না কইরা নতুন বান্ধবী বাড়াইতে উদ্যোগী হলাম।
নতুুন একজন পাইলাম। নীলার সাথে বন্ধুত্ব এই ফেবুতেই। সর্বসাকুল্যে আমার ভার্চুয়াল বান্ধবী দুইজন। বান্ধুবী শিকারে এই দুইজনই প্রাপ্তি। নীলাকে আগেও চিনতাম তবে চোখাচুখি তেই সীমাবদ্ধ। আবার নীলা ছিল নিশিরও বান্ধবী।
নীলার সাথে দৈবিক ভাবেই খুব ঘনিষ্ঠ অার অনেক কাছের হয়ে গেলাম। একদিন বুঝলাম আমার মনের ডাক্তার মনে হয় পেয়ে গেলাম।
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আমিও যোগ দিলাম কাপল দলে!
বছরখানেক পেরিয়েও গেল। সপ্তাহে তিন দিন অবশ্যই তাকে দেখা জরুরি। তখন সরাসরি। কিন্তু এখন লুকিয়ে। এখন হয়তো পুরোনো হয়ে গেলাম নাকি!??
ওকে না জানিয়ে কোন মাইনকার চিপায় খাড়াইয়া ওরে দেখি হেতি তো জানে না।
হঠাৎ পুরোনো দিন গুলির কথা খুব মনে পড়ছে। সেই পুরোনো বন্ধুগুলোর সাথের স্মৃতিগুলো। ঐ ছাদে একসাথে হেলান দিয়ে মেয়ে দেখা আর কাপল দেখলেই গালি দেয়া বন্ধুগুলো আজও আছে। থাকুক মরার পরও। নীলা ডাইনিকে নিয়ে অন্য কোন একদিন হয়তো লেখা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০০