সাল ১৯৮৪। ডিসেম্বরের কনকনে শীত। হটাত করে সব কিছু পালটে গেল। বিষাক্ত গ্যাসের কারনে সবাই মারা যাচ্ছে আশেপাশের এলাকার। যেদিকে চোখ যায় মানুষের হাহাকার, কান্না, যন্ত্রণা। যেন কোনও এক অভিশপ্ত মৃত্যু। ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার (Bhopal Gas Tragedy) সেই ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে বানানো ‘দ্য রেলওয়ে মেন’(The Railway Men) সিরিজ।
চারটি এপিসোডকে সময়ের নানা স্তরে সাজিয়েছেন পরিচালক। গ্যাস দুর্ঘটনার আগে ভোপালবাসীর জীবন, তার পরবর্তী সময়ের যন্ত্রণা, দুর্ঘটনার আগে ও পরে ঠিক কী হয়েছিল, এর প্রভাবে মানুষের জীবনে কীভাবে পড়েছিল, আবার কীভাবে কিছু মানুষ পরিণামের কথা না চিন্তা করে আমজনতার প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এক কথায় অসাধারণ।
সিরিজে বেশ কিছু জায়গা প্রশংসনীয়। বিশেষ করে বাস্তবের ছবির সঙ্গে রিয়েল লাইফের পরিস্থিতি মিলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি। গণ কবরের পাশে গণ চিতার দৃশ্যটি গায়ে কাঁটা দেয়। উপরে ছবিটা দিয়েছি।
ঠিক এই কারনেই আজকের লেখাটা, এই সিনটার সময় আমার বড় মেয়ে আমার অফিস রুমে আসে, মেয়ের বয়স সাড়ে পাঁচ, অনেক অনেক প্রশ্ন তার মনে, শুরু করলো বাবা কি দেখছো? বললাম। এর পর যখন এই সিনটা স্ক্রিনে স্টপ করা ছিল সেটা নিয়ে প্রশ্ন শুরু করল। বাবা ওনারা কি করছেন, আমি বললাম, গ্যাস এর কারনে তারা মারা গেছেন তাই তাদের মাটি দিচ্ছে একপাশে আর একপাশে পুড়িয়ে ফেলছেন। তখন মেয়ে বললও পুড়িয়ে কেন ফেলছেন? আমি বললাম এটা হিন্দু দের রীতি, সে বললও এটা কেমন কথা? তার মানে আমার বান্ধবি আনুশকা যখন মারা যাবে ওকে তার বাবা মা পুড়িয়ে ফেলবে? আনুশকা তার স্কুলে পরে, তার বান্ধবি। আমি বললাম হ্যাঁ মা এটাই নিয়ম। সে কান্না করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আর আমি বসে থাকলাম স্তব্ধ হয়ে।
সাড়ে পাঁচ বছরের একটা মেয়ে কে আমি কিভাবে বুঝাবো? রাতে ঘুমানোর সময় তাকে যখন বেড টাইম স্টরি বলি তখন বুঝিয়ে বললাম। মা তোমার সব প্রশ্নের উত্তর তুমি পেয়ে যাবে যখন তুমি বড় হবে, অনেক পড়তে হবে তোমার। অনেক কিছু জানতে হবে। এই নিয়ম যে তোমাকে মানতে হবে আমি তা বলছি না, তুমি নিয়মের বিপরীতে যেত পার আমি না করব না, কিন্তু সব সময় মনে রাখবে যা কর না কেন তাতে যেন মানব জাতীর উপকার হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩৫