এসেছিলে ফেরার পথে
বিষন্ন দশমীর সিক্ত বিকালে
ঘনঅন্ধকারের আভাসছায়ায় এসেছিলে;
এসেছিলে বিদায়ীবাদ্যে, এসেছিলে সিঁদুরবিরহে
নিরব আঁধারের ওপাশে শুধু ছায়া ভাসে;
টলমলিয়ে ওঠে গতজনমের শুষ্কবেদনা
জল জমে পাতার বুকে, অন্ধছায়ার মণিকোঠায়।
২
ধুপছায়ার সন্ধ্যে এ এক-
কী করুণ বিদায়ীব্যথা !
হাজার সন্ধ্যে কালের স্কন্ধে
লিখছে বিরহগাঁথা।
ভিজে চুপচুপ তুলসীতলার মাটি,
বিষাদকালোর নিবিড় কানাকানি,
অজানাব্যথার বিষাক্ত পা-দু’খানি,
ফিরে চলে যায় শীতলপুরীর কাঁথায়।
৩
তুমি ছিলে হাজার বছর আগে
ধূপমেশানো সন্ধ্যাপূজার সভায়,
বিদায় নিচ্ছো হাজার বছর ধরে
ছাপিয়ে তুলছ বিষাদ কানায় কানায়।
প্রেমবিরাগের সুর তুমি সেই প্রাচীনদ্বাপর থেকে
বিসর্জনে জন্ম গো নাও মনের বাঁকে বাঁকে,
সুখহারা কোন মন্দিরে আজ নীলবেদনার ছবি?
উঠবে জ্বলে চোখের কোণে গতসন্ধ্যের রবি।
মুক্তজলে কেন তাই বুক ভাসে?
কেন একাকিনী বেদনাজলে-
করুণ স্বরে হাসে?
মোহমন্ত্রের যন্ত্রণা কার জীবনভরে জ্বলে?
শেষপ্রহরের ব্যর্থতা কার লুকায় বুকের তলে?
৪
জলের ছায়া করুণভারে ঘেরা
ওপার তার দেখা যায় না কো -
জল-মায়াছায়ের নিশুতি আড়ালতলে
আজ সন্ধ্যেয় বিদায়বিষাদ ঢাকো।
বিদায় যেন দীর্ঘবিধবার যন্ত্রণা,
বিদায় যেন সহায়হারা –
আকুলপ্রাণের বঞ্ছনা।
সিদুঁরভাঙ্গা রক্তরঙ্গা সন্ধ্যে ভাসে কালের তালে
আসবে আবার গাইবে সবার সুরমেশানো সাতসকালে,
আমরা সেদিন নাইবা থাকি নাইবা মাতি সিঁদুরখেলায়-
বিদায় হবে শান্তিপরশ জনমদুখীর জীবনভেলায়।