একটু ভাবেন। একটু সময় নষ্ট করেন।
দেশে গত দুই দিনে মারা গেছে ৪০ জন। অন্য কোন কারনে নয়। বজ্রপাতের কারনে- যা সূর্যপৃষ্টের থেকে পাঁচ গুণ উত্তপ্ত, মানুষকে চোখের পলকে মৃত্যু উপহার দিতে পারে।
পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুষের থেকে মহিলাদের মৃত্যুর হার বেশি। খোলা মাঠে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু ঘটে সবথেকে বেশি। তাই বৃষ্টির সময় খোলা মাঠে থাকা চলবে না একদমই।
কখনওই বৃষ্টিপাতের সময় গাছের নিচে খালি পায়ে দাঁড়িয়ে হিমু সাজা যাবে না। গাছ বা বিদ্যুৎপোলের নিচে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেক গুণ।
শহরের তুলনায় গ্রামেই ঝুঁকিটা অপেক্ষাকৃত বেশি। গ্রামে ঘরে থাকা অবস্থাতেও মৃত্যু হচ্ছে। শহরে এই মাত্রাটা কম। আর্থিং একটি চমৎকার প্রযুক্তি যার দ্বারা বিদ্যুৎকে সরাসরি মাটিতে নিয়ে যাওয়া পায়। তবে গ্রামদেশে এই প্রযুক্তি অপ্রতুল।
বজ্রপাতের সময় জানালা বা কোন ধাতব বস্তুর সংস্পর্শে থাকবেন না। উদাস মনে একাকী জানালায় বৃষ্টিবিলাসের দিন শেষ! যে বিলাশ মৃত্যু আনে তাকে উপভোগ করা বোকামি।
গাড়ি চালানো অবস্থায় বজ্রপাত হলে যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি থেকে নেমে মাথার উপর ছাদ পাওয়া যায় এমন কোথাও আশ্রয় নিন।
বৃষ্টিপাত দেখলেই আমার মত প্রকৃতিপ্রেমিক হয়ে ঝাপিয়ে পড়বেন না। বিল্ডিং এর ছাদ নিরাপদ নয় মোটেও।
.................................................................................................
সত্যি কথা বলতে, এটি একটি ভয় পেয়ে যাবার মত ঘটনাই বটে।
এতগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু সহসাই ভয় জাগিয়েছে মনে-মাঠে-নিপবনে-প্রেমে ! বর্ষা আর বৃষ্টি ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্ট। যখন কেউ উপদেশ দেয় ‘বৃষ্টিতে নামবেন না’ বা ‘জানালা ধরে থাকবেন না’- মনটা তখন খুব খারাপ হয়ে যায়।
বাংলাদেশে ২০১০ থেকে ২০১৫, এই সময়ে বজ্রপাতে প্রতিবছর মৃত্যুর হার ১১৭ জন করে (সূত্র: দি ডেইলি স্টার)। সংখ্যাটা কম নয় একেবারেই। এবারে দুই দিনেই ৪০ জন বজ্রপাতের গ্রাসে। বর্ষা কেবল শুরু। সামনে আরও অনেকগুলো দিন আছে।
অতএব, সাধু সাবধান।
সতর্ক হোন, প্রকৃতিপ্রেম কমান। জীবন বাঁচান। পত্রিকায় খবর হবার হাত থেকে বাঁচুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮