অযু এক গুরুত্তপূর্ন ইবাদাত। যা সঠিকভাবে না হলে সালাত বাতিল।
আমরা তো সাধারনত সেভাবেই অযু করি যেভাবে সমাজের মানুষদেরকে অযু করতে দেখেছি,, তাই না!?
কিন্তু আমরা কি ভেবে দেখেছি যে সম্পুর্নভাবে আমাদের অযু রাসুল্লাহ (সা) এর মত হয় কিনা?!
দুখ:জনক হলে ও সত্য যে কুলি করা, নাকে পানি দেয়া এবং মাথা মাসেহ করা প্রায় ৯০% মানুষের রাসুল্লাহ (সা) এর মত হয় না।
.
আসুন নিম্নের হাদিসগুলো পড়ে দেখি রাসুল্লাহ (সা) কিভাবে কুলি করত, নাকে পানি দিত ও মাথা মাসেহ করত......
.
* আবদুল্লাহ্ আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া আল-মাযেনী হতে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনু যায়েদ (রাঃ) -কে বলেন, রাসূল্লুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিরূপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন তা কি আমাকে দেখাতে পারেন? জবাবে আবদুল্লাহ্ ইবনু যায়েদ (রাঃ) বলেন, হাঁ। অতঃপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি চেয়ে নিয়ে তা নিজের দুই হাতে ঢালেন এবং তা ধৌত করলেন, অতঃপর তিনবার পানি নিয়ে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়লেন । অতঃপর তিনি তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ধৌত করেন, অতঃপর উভয় হাত কনুই পর্যস্ত দুইবার ধৌত করেন, অতঃপর উভয় হাত দ্বারা মাথার সামনের ও পিছনের দিক মাসেহ্ , করলেন। এই মাসেহ্ তিনি মস্তকের সম্মুখ ভাগ হতে আরাম্ভ করে- উভয় হাত মাথার পশ্চাঁদভাগ পর্যন্ত নিলেন। পরে যে স্থান হতে মাসেহ্ শুরু করেন, উভয় হস্ত সেখানে ফিরিয়ে আনেন। অতঃপর তিনি দুই পা ধৌত করেন - [সহিহ বুখারি:১৮৬, আবু দাউদ:১১৮(ইফা) বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ- ইবনু মাজাহ)।]
.
* মূসা’দ্দাদ আবদুল্লাহ্ ইবনু যায়েদ ইবনু আছেম হতেও উপরোক্ত হাদীছ বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন, অতঃপর তিনি কুলি করেন এবং নাকে পানি দেন - একই হাতের দ্বারা অর্থাৎ এক অঞ্জলি পানি দ্বারা একই সাথে কুলিও করেন এবং নাকেও পানি দেন। তিনি এইরূপ তিনবার করেন।
[আবু দাউদ:১১৩,১১৯(ইফা)]
.
* মাহ্মুদ মিকদাদ ইবনু মাদীকারাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি রাসূল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে দেখেছি। উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে করতে যখন মাথা মাসেহ্ পর্যন্ত পৌছালেন, তখন তিনি এভাবে মাথা মাসেহ্ করেন যে, উভয় হাতের তালু মাথার সামনের অংশে স্থাপন করে তা মাথার শেষ ভাগ পর্যন্ত নেন অতঃপর তিনি পেছনের দিক হতে সামনের দিকে তা শুরুর স্থানে ফিরিয়ে আনেন-(ঐ)
[আবু দাউদ:১২২]
.
উপরোক্ত হাদিস গুলো থেকে আমরা যা বুঝতে পারলাম তা হল,,
১) আমরা যেভাবে কুলি এবং নাকে পানি দেয়ার সময় আলাদাভাবে পানি নেই,,
রাসুল্লাহ (সা) কিন্তু সেভাবে করেননি। তিনি এক অঞ্জলি পানি দ্বারা একই সাথে কুলি করেছেন ও নাকে পানি দিয়েছে
২)আমরা মাথা মাসেহ করার সময় তিন আংগুল ব্যাবহার করি ও সম্পুর্ন মাথা মাসেহ করিনা,,
রাসুল্লাহ (সা) কিন্তু সেভাবে করেননি।
তিনি মাথার সামনের ভাগ হতে আরাম্ভ করে- উভয় হাত মাথার পিছন ভাগ পর্যন্ত নিয়েছেন। পরে যে স্থান হতে মাসেহ্ শুরু করেছেন উভয় হাত সেখানেই ফিরিয়ে এনেছেন। (মানে সম্পুর্ন মাথা হাতের সবগুলো আংগুল দ্বারা একবার মাসেহ করেছেন)
.
৩) আমরা অযু করার সময় ঘাড় মাসেহ করি,
কিন্তু রাসুল্লাহ (সা) তা করেননি। সুতারং ঘাড় মাসেহ করা বিদাত আর বিদাত মানেই জাহান্নাম।
.
সুতারং আমরা যদি সম্পুর্নভাবে রাসুল্লাহ (সা) এর মত অযু করতে চাই তাহলে একই সাথে কুলি করব ও নাকে পানি দিব, উপরিক্ত হাদিস অনুযায়ী মাথা মাসেহ করব এবং ঘাড় মাসেহের মত বিদাত(জাহান্নাম) থেকে দূরে থাকব।