শেয়ার ব্যবসা / বিনিয়োগ! (পার্ট-১)
Lot কি? শেয়ার কিনতে হলে আপনাকে লট হিসেবে কিনতে হবে। বিভিন্ন কম্পানির লট সংখ্যা বিভিন্ন।
যেমন উপরের কম্পানিটি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে এর মার্কেট লট (লাল দাগ দেয়া) ৫০০। এর অর্থ আপনি যদি এই কম্পানির শেয়ার কিনতে চান তবে আপনাকে একবারে ৫০০ টি শেয়ার কিনতে হবে। এই কম্পানির last trade price 55. তাই ৫০০ টি শেয়ারের দাম হবে ৫০০*৫৫=২৭৫০০ টাকা। আপনি যদি বেশি শেয়ার কিনতে চান তবে লটের গুনিতক হারে অর্থাৎ
৫০০/১০০০/১৫০০ এভাবে কিনতে হবে। আবার এই কম্পানিটি লক্ষ্য করুন। এর মার্কেট লট ৫ টি। তাই আপনি যদি এই শেয়ার কিনতে চান তবে আপনাকে ৫/১০/১৫ এভাবে কিনতে হবে। আশা করি লট কি তা এখন বুঝতে পেরেছেন।
শেয়ার মার্কেটের বিভিন্ন শেয়ারের দাম কিভাবে পড়ব ?
শেয়ার মার্কেটের বিভিন্ন কম্পানির শেয়ারের দাম ডিএসইর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।এখানে বিভিন্ন কম্পানির শেয়ারের দামের বিবরণ উপরের ছবির মত দেয়া থাকে। আসুন এবার শিখে নেই কিভাবে এই তথ্য গুলো পড়ব।
১। Last Trade: এই কম্পানির লাস্ট ট্রেড কত টাকায় হয়েছে। দেখা যাচ্ছে এই কম্পানির একটি শেয়ারের দাম সর্বশেষ ৩৩২.৪০ টাকায় হয়েছে।
২। Day's range: ঐ দিনে ঐ কম্পানির একটি শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন যা। দেখা যাচ্ছে ঐ দিনে এই কম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৩৩৮ টাকা ও সর্বনিম্ন ৩২৯.৭ টাকা।
৩। Open price: যেইদিনের দাম দেখান হচ্ছে সেইদিনে ঐ কম্পানির শেয়ারের দাম কত দিয়ে শুরু হয়েছে।
৪। Yesterday close: যেইদিনের দাম দেখান হচ্ছে তার আগের দিনে শেয়ারটির লাস্ট দাম কত ছিল।
৫। Volume: মোট কতগুলো শেয়ার কেনা বেচা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ঐ দিনে ১১০৬১৫০ টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। যেহেতু এই কম্পানির লট সংখ্যা ৫০ টি । তাই মোট ১১০৬১৫০/৫০=২২১২৩ টি লট কেনাবেচা হয়েছে।
৬। Total trade: ঐ দিনের মোট ট্রেড সংখ্যা।
৭। Change: আজকের লাস্ট প্রাইস ও গতকালের লাস্ট প্রাইসের পার্থক্য(৩৩২.৪-৩৩০.৯=১.৫) ও তার পার্সেন্টেজ।
৮। 52 week's range: ঐ দিন থেকে ১ বছর আগের সময়ের মধ্যে ঐ শেয়ারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দাম।
৯। Market lot: ঐ কম্পানির মার্কেট লট। বিস্তারিত
১০। এখান থেকে কম্পানির বিগত সময়ের শেয়ারের দাম ও ভলিউমের চার্ট দেখা যায়।
Total Trade মানে হল ঐ দিনে কতগুলো ট্রেড হয়েছে। মনে করুন আপনি ১ লট, আপনার বন্ধু ২ লট শেয়ার কিনল এবং আমি ১ লট শেয়ার বিক্রি করলাম, তবে ঐ দিনের ট্রেড সংখ্যা হবে ৩টি। অর্থাৎ যতবার লোকজন আলাদা আলাদা ভাবে ঐ শেয়ারটি কিনবে ও বিক্রি করবে তাই হচ্ছে টোটাল ট্রেড ।
খেয়াল করবেন লট এর সাথে ট্রেড এর কোন সম্পর্ক নাই। অর্থাৎ আপনি যদি একবারে ১০ লট শেয়ার কেনেন বা বিক্রি করেন তবেও ট্রেড একটা আবার একবারে ১ লট কিনলে বা বিক্রি করলেও ট্রেড একটা। কিন্তু আপনি যদি ১ লট কেনা/বেচার পরে আবার ১ লট কেনেন/বেচেন তবে ট্রেড কিন্তু হবে ২ টা।
শেয়ার কেনার আগে যা যা দেখে নেয়া উচিত।
শেয়ার কেনার আগে অবশ্যই ইনভেস্টরকে কিছু জিনিস দেখে বিবেচন আকরে শেয়ার কেনা উচিত। হুট করে না বুঝে শেয়ার কেনার কোন মানেই হয় না। তাতে হয়তোবা মাঝে মধ্যে লাভ হতে পারে কিন্তু লসের চান্সই বেশি।
যাই হোক প্রথমেই আপনাকে দেখতে হবে শেয়ারটি কোন ক্যাটাগরির। চেস্টা করবেন A অথবা ভাল কম্পানি হলে N ক্যাটাগরির শেয়ার কিনতে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন A ক্যাটাগরির শেয়ার সবসময় ভাল নাও হতে পারে। ঐ বছর তাদের ব্যাবসা খারাপও যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত দেখে নিন কম্পানির EPS ( Earning per share) কত? Eps যদি কম হয় তবে ঐ শেয়ার কেনা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যে কম্পানির শেয়ারের নিজস্ব কোন ইনকাম নেই সেই শেয়ারের দাম কিভাবে বাড়বে? আর যদিও ঐ শেয়ারের দাম বাড়তি থাকে তবে ধরে নিবেন নিশ্চয়ই কোথাও কোন সমস্যা আছে। অর্থাৎ ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। ;-)
তৃতীয়ত দেখে নিন ঐ শেয়ারের PE (Price earning ratio) কত। যে শেয়ারের PE যত বেশি সেই শেয়ার তত অতি মূল্যায়িত। আমাদের মার্কেটে ২৫ এর চেয়ে বেশি PE কে ঝূকিপূর্ণ ধরা হয়।
তাই শেয়ার কেনার আগে অন্তত এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে শেয়ার কিনুন।
ব্রোকার দিয়ে শেয়ার কিভাবে কেনে
যারা শেয়ার মার্কেটে একেবারেই নতুন তাদের জন্য পোস্টটি। শেয়ার ব্যবসা করতে গেলে প্রথমেই তাদের মনে প্রশ্ন আসে কিভাবে টাকা দিয়ে শেয়ার কিনব, টাকা কি ব্যাংকে দিতে হবে, কাকে টাকা দিব বা আমিও বা কিভাবে আমার লাভের টাকা পাব। প্রথমেই বলেছি যারা একেবারে abc দিয়ে শুরু করতে চায় তাদের জন্য এই পোস্ট।
শেয়ার ব্যবসা করতে হলে প্রথমেই আপনাকে কোন একটি ব্রোকারে গিয়ে BO account খুলতে হবে। BO account খুললে আপনাকে ঐ ব্রোকার হাউস থেকে একটা ব্রোকার নম্বর ও BO account নাম্বার দিবে। আসলে শেয়ার বেচাকেনার জন্য ঐ ব্রোকার নাব্বারটাই দরকার BO account নাম্বারটা লাগে না। BO account নাম্বার লাগে খালি প্রাইমারি শেয়ারের জন্য। যাই হোক একাউন্ট খোলার পর আপনাকে ঐ ব্রোকারে টাকা জমা দিতে হবে। টাকা আপনি নগদ ক্যাশ বা চেকে দিতে পারেন। ব্রোকারে দেখবেন সবাই একটা লোককে শেয়ারের দাম জিজ্ঞাসা করছে এবং সে কম্পিউটার দিয়ে দাম বলছে ও দেখছে। টাকা জমা দেবার পর আপনি যদি শেয়ার কিনতে চান তবে ঐ লোকটাকে জিজ্ঞাসা করুন, যে শেয়ার কিনতে চান তার দাম কত। তারপরে ঐ দামে যদি শেয়ার কিনতে চান তাহলে বলবেন অমুক কম্পানি ৫০০ কিনেন। তখন ঐ লোক আপনার কাছে আপনার ব্রোকার নাম্বারটি চাইলে তা দিন। আরেকটু সহজভাবে বলি মনে করেন আপনি BDCOM এর ১ লট কিনতে চান তখন বলবেন BDCOM ৫০০ কেনেন (যেহেতু BDCOM এর লট ৫০০ টায়) বা ২ লট কিনতে চাইলে বলেন BDCOM ১০০০ কেনেন। কিংবা DUTCHBANGLA ১ লট কিনতে চাইলে বলবেন ৫০ টা DUTCHBANGLA কেনেন। মনে রাখবেন ব্রোকারে কিন্তু শেয়ার বেচা কেনার সময় লট হিসেবে বলে না। আপনাকে লট এর গুণিতক আকারে সংখ্যায় বলতে হবে। আবার বিক্রি করার সময়ও এভাবে বিক্রি করবেন। শেয়ার কিনলে বা বিক্রি করলে আপনাকে কোন কাগজপত্র দেয়া হবে না। অটোমেটিক ঐ শেয়ার আপনার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে এবং আপনার একাউন্ট থেকে টাকা মাইনাস হয়ে যাবে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে পোর্টফলিও প্রিন্ট করে নিতে পারেন। পোর্টফলিও লাগলে আপনি ঐ একই ব্যক্তিকে আপনার ব্রোকার নাব্বারটি দিয়ে বলুন পোর্টফলিও প্রিন্ট দিতে। দেখবেন তার কাছাকাছি কোন প্রিন্টার থেকেই একটা কাগজ প্রিন্ট হয়ে বেরিয়ে আসছে। প্রিন্ট হয়ে গেলে নিজে গিয়েই কাগজটা প্রিন্টার থেকে ছিড়ে নিন। পোর্টফলিও প্রিন্ট করতে কোন টাকা লাগে না।তাই যতখুশি প্রিন্ট করতে পারেন।
==========================================
Ref: ictgeneration, sharebiz blogspot, shareedu blogspot, dse, sec, saikat,
=============================================
পরবর্তীতে পর্বে দেয়ার চেষ্টা করব:
NAV, Right share, Preferene share, EPS, PE Dividend etc.
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:৫০