কি অপরাধ ছিলো এইসব নিরীহ মানুষগুলোর? যতজন বিদেশী নাগরিককে তারা পেয়েছে সবাইকেই নির্বিচারে জবাই করে হত্যা করেছে। তাদেরকে জিম্মি করে অন্তত কথা বলার সময়টা দেওয়া উচিৎ ছিলো, সমঝোতা করা যেতো যে কোন কিছু দিয়ে। মানুষের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছুই না। এইসব বিদেশী নাগরিককে হত্যার জন্যে বাংলাদেশকে বিশাল মুল্য দিতে হবে। ঘটনাস্থলের খুভ কাছেই জাপান,কোরিয়া,চীন,আমেরিকা এবং ব্রিটিশ দূতাবাস। জঙ্গিরা যদি দল আরো ভারী করে এইসব দুতাবাসে হামলা চালাতো তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হতো তা সহজেই অনুমেয়। লিবিয়াতে জঙ্গি বাহিনী আমেরিকান দুতাবাসে হামলা করার পড়েই আমেরিকান বিমান যা করার করে দিয়েছে, অনেকেই বলে যে এই কাজ গাদ্দাফির কিন্তু গাদ্দাফি দাবি করেছে এই কাজ তার নয়। গাদ্দাফিও মরেছে আর লিবিয়াও তার নিজের সব কিছু হারিয়েছে, সেই লিবিয়া আজও ঘুরে দাড়াতে পারেনি।
গতকাল শুক্রবার ছিলো বলে অনেকেই খেতে গিয়েছিলো আর জঙ্গিরা এই দিনটিকেই টার্গেট করে। কিছুদিন আগে উত্তরাতে পুলিশ বেশকিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে যা জঙ্গিদের কাছে থাকা অস্ত্রের তুলনায় অনেক নগণ্য, খুভ ভালো ভাবেই বুঝা যাচ্ছে এখন যে জঙ্গিরা বাংলাদেশে বেশ তৎপর এবং তাদের কাছে এখন অস্ত্রও আছে এবং তারা খুভ ভালোভাবে প্ল্যানিংও করতে পারে। আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যেই ক্ষমতা,বুদ্ধি আর লোকবল তাতে করে জঙ্গিদের পরবর্তী টার্গেট কি হতে পারে তা বুঝতে পারাও সম্ভব নয়। হতে পারে আসন্ন দুর্গা পূজাকে তারা টার্গেট করেছে, হতে পারে ঈদের জামাতে তারা বোমা হামলা করতে পারে যেমনটা আমরা ইরাক বা আফগানিস্থানে দেখেছিম সুতরাং আপনি আমি কেউই কোথাও এখন নিরাপদ না। মনে রাখবেন জঙ্গিদের টার্গেট একটাই সেটা হচ্ছে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমান করা, বাকি কাজ অবশ্য আমেরিকা বা ইন্ডিয়াই করে দিবে। অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশ খুভ গুরুত্বপূর্ণ কারন বাংলাদেশ বিশ্বের ৪র্থ শক্তিশালী দেশের মাঝখানে আছে, আমাদের খুভ কাছেই আছে বিশ্বের ৩য় এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশ চায়না, নেপাল,ভুটান এবং মায়ানমারের সীমানা জুড়েই আছে চিনারা। আর আমাদের দেশের চারপাশে আছে ভারত। আমাদের দেশের মোট আমদানির ১৭.৬ ভাগ ছিলো আগে চীনের সাথে কিন্তু এখন তা অনেক কমে গেছে এবং ভারতের থেকে আমাদের আমদানি বেড়েছে। চায়না থেকে সরাসরি আমাদের দেশে এশিয়ান হাইওয়ে হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু পড়ে তা আর হয় নি, চাইনিজদের একটা স্বপ্ন ছিলো সরাসরি তাদের দেশ থেকে সড়কযোগাযোগ হয়ে গেলে তাদের রপ্তানি অনেক বেড়ে যাবে আর ক্রমেই তারা তাদের পণ্য দিয়ে আমাদের মার্কেট আরো দখল করে নিবে কিন্তু তাদের জায়গায় আমাদের দেশের মার্কেট দখল করেছে ভারত। নিউজ চ্যানেল থেকে শুরু করে কোরবানির গরু এমনকি মহিলাদের হিজাবও আজ ভারতীয়, পেয়াজ-আলু বা নিত্যপ্রয়োজনিয় পণ্যের কথা বাদই দিলাম। অনেককেই বলতে দেখি ভারতীয়রা এইসব জঙ্গি চক্রান্তে জড়িত, ভারতীয়রা এইসব চক্রান্তে কেন জড়িত হবে ? বাংলাদেশকে নিয়ে সব চাইতে বেশী লাভবান ভারত। মনে রাখবেন বাংলাদেশের সাথে ভারত এবং জাপান কোনদিন শত্রুটা করবেনা কারন রাস্তায় বের হলেও জাপানি গাড়ি আর ঘরে ঢুকলেই ভারতীয় চ্যানেল। ইরানের কাছ থেকে বাংলাদেশ তেল কিনে সুতরাং ইরানও বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। শুধুমাত্র একটি দেশ ভারতকে চাপে রাখার জন্যে বাংলাদেশে এইসব জঙ্গি তৎপরতা চালাতে পারে আর সেটি হচ্ছে পাকিস্তান। কিছুদিন আগে পাকিস্তান চায়নার সাথে বিশাল অস্ত্রচুক্তি করেছে, ইসরায়েল থেকেও তারা অস্ত্র কিনেছে। এখন আপনিই হিসাব করে দেখুন
বাংলাদেশে পাকিস্তানের কোন দোসরেরা আছে ?
কে আসলে জঙ্গিবাদের সাথে যুক্ত ?
কাদেরকে যুদ্ধপরাধের দায়ে ফাঁসী দিলে এখনো পাকিস্তানের সংসদ কেঁপে ওঠে ?
আমি মনে করিনা বাংলাদেশে আমেরিকান বা পশ্চিমা কোন শক্তির ষড়যন্ত্র আছে কারন তারা তো তেল নিয়ে রাজনীতি করে, বাংলাদেশে তো কোন তেলের খনি নাই। জঙ্গিরা আসলে ইসলামের নাম নেয় এইকারনে যে তারা ভালোভাবেই জানে বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ অশিক্ষিত এবং অর্ধশক্ষিত বা বর্তমান প্রজন্মের A+ শিক্ষিত। এদের বেশীরভাগই আসলে কম বুঝা মানুষ, এদের কাছে জঙ্গি হামলা বা হত্যার গ্রহণযোগ্যতা পেতে হলে ইসলামের নামটা তো নিতেই হবে কারন সংখ্যাগরিষ্ঠ তো এইখানে মুসলিম । বাংলাদেশে ইসলামের নাম করে যেভাবে জঙ্গি হামলা হয় এবং সেটাকে কেউ কেউ সমর্থন দেয় এই রকম তাজাকিস্তানে কোনদিন সম্ভব না কারন তাজাকিস্তানের মানুষ ইসলাম বুঝে এবং তারা ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত, ইসলাম নিয়ে তাদের কোন উচ্যবাচ্যও নেই, সবাই সেখানে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করছে। এক মহিলা হিজাব পড়েছে বলে জঙ্গিরা খাতির করেছে বলে যারা পাগলের মত জঙ্গিদের সমর্থন নিচ্ছেন তাদেরকে বলবো এইবার অন্তত একটু ছবিগুলো দেখুন যে তারা কিভাবে মানুষ হয়ে এতগুলো মানুষকে জবাই করেছে যেখানে অনেক নারীও ছিলো। আপনি যা ই বলুন আমি অন্তত মুসলিম না হয়েও বলতে পারি এরা ইসলাম পরা মুসলিম না। ইসলাম এই রকম কোন কিছুই সমর্থন করে না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫১