বাংলাদেশের সীমিত সম্পদ, সীমিত শক্তি এবং অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশ যে এইভাবে চলছে সেটাও অনেক । আমরা অনেক সময়ই আমাদের দেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দোষারোপ করি । এইটা হয় নাই , ঐটা হয় নাই , এইটা নাই ঐটা নাই , এই নিয়ম নাই , ঐ নিয়ম নাই কত কত অভি্যোগ । জাপানে এইটা আছে , আমেরিকাতে ঐটা আছে, ভারতে ঐটা আছে আমাদের নাই কেন ? আরো কত কি । এইখানে পাওয়া না পাওয়ার লিষ্ট দিতে গেলে আমার যে কারনে লিখাটা লেখা সেটার ভাবধারা অন্য দিকে প্রভাহিত হবে ।
বাংলাদেশ ভারতের মাঝখানে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে । মনে রাখবেন আমরা বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী দেশের মাঝখানে আছি । আমি বাংলাদেশ , ভারত এবং পাকিস্তানের সামরিক শক্তি নিয়ে একটু আলোচনা করবো । জনশক্তির দিক থেকে বাংলাদেশ কিন্তু বিশ্বের ৮ নাম্বার দেশ , ১ নাম্বার চীন , ২ নাম্বার ভারত এবং ৩ নাম্বার আমেরিকা । ব্রিটিশরা একসময় ভারত শাসন করলেও ব্রিটিশদের থেকেও এখন ভারত শক্তিশালী দেশ । যাই হোক তিন দেশের সামরিক শক্তি নিয়ে কিছু বলছি ।
গত মাসের আপডেট অনুযায়ি
ট্যাঙ্ক
বাংলাদেশের আছে ১৬৯ টি
পাকিস্তানের আছে ৩১২৪ টি
ভারতের আছে ৩৫৬৯ টি
আর্মড ফাইটিং ভিয়েকলস
বাংলাদেশের আছে ৩০০ টি
পাকিস্তানের আছে ৩১৮৭ টি
ভারতের আছে ৫০৮৫ টি
সেলফ প্রোপেল্ড গান বা SPGs
বাংলাদেশের একটিও নেই
পাকিস্তানের আছে ৪৭০ টি
ভারতের আছে ২৯০ টি
মাল্টিপল-লঞ্চ রকেট সিষ্টেম
বাংলাদেশের একটিও নেই
পাকিস্তানের ২০০ টি
ভারতের ২৯২ টি
এই হচ্ছে তিন দেশের ভুমিতে বর্তমান শক্তি , আসুন এইবার আকাশ পথে কার কি রকম শক্তি আছে তা একটু জেনে নিই ।
ফাইটার বিমান
বাংলাদেশের আছে ৫২টি
পাকিস্তানের ৩৭৭টি
ভারতের ৫৩৫টি
ফিক্সড উইং এটাক এয়ারক্র্যাফট
বাংলাদেশের আছে ৫২টি
পাকিস্তানের আছে ২৩৬টি
ভারতের আছে ৬৬৮টি
অস্ত্র আনা নেওয়ার জন্যে বিমান আছে
বাংলাদেশের ৫৪টি
পাকিস্তানের ২৩১টি
ভারতের ৭০৬টি
হেলকপ্টার আছে
বাংলাদেশের ৫২টি
পাকিস্তানের ২৬৩টি
ভারতের ৫০৪টি
এটাক হেলিকপ্টার
বাংলাদেশের একটিও নেই
পাকিস্তানের ৪৮টি
ভারতের ২০টি
এই গেলো আকাশপথে তিন দেশের শক্তি , তবে বাংলাদেশের এটাক হেলকপ্টার কেনা উচিৎ এই হেলিকপ্টার থাকলে যে কোন স্থানে একদম নিচ থেকে আক্রমণ করা যায় । এর মধ্যে এপাচি অন্যতম , আফগানিস্তান দখল করা আমেরিকানদের কাছে দুরহ ছিলো এই হেলকপ্টার না থাকলে । আর সৈন্য বহনকারী হেলিকপ্টারকে গার্ড দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যেও এই হেলিকপ্টার লাগে ।
এইবার দেখি পানিতে তিন দেশের শক্তি কেমন ? ।
টোটাল নেভাল ষ্ট্রেংথ
বাংলাদেশ ১১৭
পাকিস্তান ৭৪
ভারত ১৮৪
ফ্রিগ্রেট
বাংলাদেশ ৮
পাকিস্তান ১১
ভারত ১৫
ডেষ্ট্রয়ার
বাংলাদেশের নাই
পাকিস্তানেরও নাই
ভারতের ১১ টি
কোষ্টাল ডিফেন্স ক্র্যাফট
বাংলাদেশ ৫৮
পাকিস্তান ১২
ভারত ৩২
মাইন ওয়্যারফেয়ার
বাংলাদেশ ৫
পাকিস্তান ৩
ভারত ৭
তুলনামুলক ভাবে পানিতে বাংলাদেশের শক্তি বেশী , আওয়ামেলীগ এবং শেখহাসিনা সরকারকে এই জন্যে ধন্যবাদ ।
যাই হোক আসল কথায় আসি । আমাদের দেশের মানুষ আসলে দুইভাগে বিভক্ত , একদল পাকিস্তানকে গালি দেয় আর একদল ভারতকে গালি দেয় । আমার কথা হচ্ছে সামালোচনা অবশ্যই করবেন তবে বুঝে করবেন না বুঝে অযথা হৈ হৈ রৈ রৈ একমাত্র গাধারাই করে । প্রাকৃতিকভাবে হিমালয় থেকে তিস্তার উৎপত্তি হয়েছে এবং তা বাংলাদেশের যমুনা নদীতে এসে মিলেছে । ভারত তার সীমানার ভেতর মোট ৫ টি স্থানে ব্যারেজ নির্মান করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাচ্ছে এবং এর পড় যে পানির প্রবাহ থাকে সেই পানিকে খাল নির্মাণ করে পশ্চিমবঙ্গের দিকে প্রবাহিত করে দিয়েছে এবং তা কৃষিকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে । আবার পানি যখন বেড়ে যায় তখন ব্যারেজের সব পানি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং আমাদের এইখানে তখন বন্যা হয়ে যায় । এটা একেবারেই অন্যার্য এবং অমানবিক । সত্যি কথা হচ্ছে আমরা যতই যা কিছু বলি না কেন ভারত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া আমাদেরকে তিস্তার পানি দিবে না আর যেহেতু ওরা চতুর্থ শক্তিশালী দেশ তাই ওদের ওপর তিস্তা ইস্যু নিয়ে কেউ অন্তত হস্তক্ষেপ করবে না । পানি অবশ্যই তারা আমাদেরকে দিতো যদি আমাদের সেইরকম সামরিক শক্তি থাকতো । আমাদের দেশ অর্থনৈতিক ভাবে অনেক এগিয়ে গেছে , এই ধারা অব্যাহত থাকলে সামনে অর্থনৈতিক ভাবে দেশ আরো শক্তিশালী হবে এবং তখন আমাদের সামরিক শক্তি এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে , আমাদেরকে এখন যা করতে হবে তা হচ্ছে আমাদের পিছিয়ে পড়া শিক্ষা ব্যাবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে । উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কোন জাতিই সামনের কাতারে থাকে না । শুধু শুধু আবেগি হয়ে ভারত-পাকিস্তানকে গালি না দিয়ে নিজেদেরকে আগে পরিবর্তন করি । শুধু তিস্তা নয় তখন আরো এই রকম অনেক অধিকারই আমরা নিজেদের করে নিতে পারবো আর না হলে সব কিছু চেয়ে চেয়েই দেখতে হবে । শক্তের ভক্ত সবাই নরমের যম ।