ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৪৪ কিলোমিটার , এখন ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের কাজ চলছে , অনেক যায়গায় রাস্তাগুলো দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে , নতুন রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে দেখলাম খুভ স্মুথ । স্পিড ১৪০ পর্যন্ত তুল্লাম , আরো তুলতে পারতাম কিন্তু সাহস হয় নি । যা ই হোক আমি যদি এভারেজ ১০০ কিলোমিটার বেগেও গাড়ি চালাই তাহলে ঢাকা যেতে আমার বড়জোড় আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লাগবে । উন্নত বিশ্বের ৮ লেইনের নাগরিকদের এর থেকেও কম সময় লাগে । এই রাস্তা হয়ে গেলে বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারবে একটি রাস্তা কিভাবে দেশের উন্নতি সাধন করতে পারে । সব কিছুই ঠিক আছে কিন্তু তার পড়েও কিছু কিন্তু থেকেই যায়
হাইওয়েতে চলার সময় আমি এমন কোন ৬ চাকার কোন মাল বোঝাই ট্রাক দেখিনি যারা ৫ অতিরিক্ত মাল বহন করছে না । এই রকম হলে যত টাকা খরচ করেই রাস্তা তৈরি করা হোক না কেন রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে , এখনো পুরোনো রাস্তায় এমন এমন টিলা তৈরি হয়েছে যেখানে আমাদের সেডানগুলোর তলা বাড়ি খায় । আর চাকা যদি সেখানে উঠে যায় স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি গতি পরিবর্তন করে অন্য একটি গাড়ির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের সম্মুখীন হতে পারে ।
আমি যতবার হাইওয়ে পুলিশকে দেখলাম তারা সবমসময় ঘুষ খাওয়া নিয়েই ব্যস্ত , তাদেরকে দেখলে মনেই হয় তাদেরকে ঘুষ খাওয়ার জন্যেই রাখা হয়েছে এবং এটাই তাদের দায়িত্ব । অফিসিয়ালি তাদেরকে দেওয়া হয়েছে মিনি ট্রাক (Hilex) যেখানে কনেষ্টেবলরা পিছনে বসে এবং অফিসারেরা সামনে বসে ।
গ্রিন লাইন , সোহাগ পরিবহন , ষ্টার লাইন , এস আলম , সৌদিয়া পরিবহন , হানিফ পরিবহন , শ্যামলী পরিবহন , এমনকি সরকারি BRTC এর বাসগুলোর ড্রাইভাররা সব চাইতে বেশী দুর্ঘটনা ঘটায় , এইসব পরিবহনের ড্রাইভারদেরকে মনিটর করার কেউ নেই , ধরা খেলেও পরিবহন সংস্থা থেকে ম্যানেজ করা হয় , খোদ আমাদের দেশে একজন মন্ত্রীই আছেন এই সব ম্যানেজ করার জন্যে । আমি অনেক ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে এবং আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে যেটা বুঝতে পেরেছি হাইওয়েতে সব চাইতে বেশী দুর্ঘটনা ঘটায় কিছু প্রফেশনাল হাইস ( MPV Multi purpose vehicle ) ড্রাইভার আর এই সব পরিবহনের ড্রাইভারদের গাফিলতি । আর ইদানিং হাইওয়েতে নতুন আরো একটি যানবাহনের উদ্ভব হয়েছে যারা অন্যদেরকে দুর্ঘটনা কবলিত করে আর তাহলো ভারতের বাজাজের বানানো তিন চাকার নিন্মমানের সিএনজি অটোরিক্সা আর বোনাস হিসেবে রাস্তার উপর হাটবাজার তো বসছেই । হাইওয়েতে ১০০ ভাগ সমস্যার মধ্যে আমি মাত্র ১ ভাগ সমস্যার কথা বলেছি আরো ৯৯ ভাগ সমস্যা খুজে বের করে তা সমাধান করতে হবে । তবেই আমরা এই ৪ লাইনের রাস্তার সুবিধা ভোগ করতে পারবো । শুধু শুধু এতটাকা খরচ করে রাস্তা বানিয়ে তা ঠিকভাবে রক্ষনাবেক্ষন এবং আইনের সঠিক প্রয়োগের অভাবে হয়তো আমরা ভালোভাবে এই রাস্তার সুফল নাও পেতে পারি ।